ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নীলফামারীতে তিস্তার পানি বেড়ে বসতবাড়ি-ফসলি জমি প্লাবিত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০০ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০২০
নীলফামারীতে তিস্তার পানি বেড়ে বসতবাড়ি-ফসলি জমি প্লাবিত

নীলফামারী: ভারী বৃস্টি, উজানের ঢল ও গজলডোবা ব্যারেজের পানি ছেড়ে দেওয়ায় তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে বন্যায় নীলফামারীর তিস্তা অববাহিকার ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার অসংখ্য বসতবাড়ি ও ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে।

এদিকে তিস্তার গর্জন আর শো-শো শব্দে তিস্তাপাড়ের নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার চর, চরগ্রাম ও লোকালয় কাঁপিয়ে দিয়ে ভাটির দিকে ধাবিত হচ্ছে। দুই উপজেলার প্রায় ১০ হাজার পরিবার বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে।

তাদের মধ্যে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন ল্যাট্রিনের সংকট দেখা দিয়েছে।

তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রেখেও উজানের ঢলের চাপ নিয়ন্ত্রণ করা যেন কঠিন হয়ে পড়েছে। মাইকিং করে তিস্তাপাড়ের পরিবারগুলোকে নিরপদে আশ্রয় নিতে বলা হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নীলফামারীর ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বাংলানিউকে বলেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি বেশি খারাপ হলে লাল সংকেত দেওয়া হবে। আপাতত হলুদ সংকেত জারি করা হয়েছে।  

এদিকে উজানের ঢলে চতুর্থ দফায় ভয়াবহ বন্যায় তিস্তা অববাহিকায় নতুন করে সাত হাজার পরিবার বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে।  

বিশেষ করে চরবেষ্টিত গ্রামের মানুষজনকে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে। জেলার ডিমলা উপজেলার ছয় ইউনিয়ন, পূবছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানরা জানান, তিস্তা ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃস্টি করছে। ডিমলার কিসামত ছাতনাই, ঝাড়শিঙ্গেশ্বর, চর খড়িবাড়ি, পূর্ব খড়িবাড়ি, পশ্চিম খড়িবাড়ি, তিস্তা বাজার, তেলির বাজার, বাইশপুকুর, ছাতুনামা, ভেণ্ডাবাড়ি এলাকার পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় সেখানকার মানুষজন গরু-ছাগল, সাধ্যমতো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে নিরাপদে সরে গেছেন।

অপরদিকে, জেলার জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি, গোলমুণ্ডা, শৌলমারী, কৈমারী এলাকার তিন হাজার পরিবার বন্যাকালিত হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে তিস্তার পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ায় দুই উপজেলার অসংখ্য ফসলি জমির আমন বীজতলা, রোপিত আমনের রোপা তলিয়ে গেছে। বসতঘরগুলোতে প্রকারভেদে হাটু ও কোমর সমান পানির স্রোত বয়ে যাচ্ছে। এছাড়া ভেসে গেছে খামার ও পুকুরের চাষ করা মাছ।

ডিমলা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়শ্রী রানী রায় বাংলানিউজকে বলেন, আমরা প্রতিটি এলাকা মনিটরিং করছি। জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে তিস্তা অববাহিকার চর ও চর গ্রামের পরিবারগুলোকে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে। উজানের ঢল কমে গেলে তিস্তার বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। তবে উজানের ঢল অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহতার রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছে পাউবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০২০
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।