ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

গুচ্ছ গুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২০
গুচ্ছ গুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ

ঢাকা: দেশের খ্যাতিমান সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূরের স্থলাভিষিক্ত হয়ে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান ময়মনসিংহের সংসদ সদস্য কে এম খালিদ। চ্যালেঞ্জটা কঠিন ছিল। 

গত দেড় বছরে নিত্য নতুন নানা পরিকল্পনা নিয়ে ইতিমধ্যেই সংস্কৃতিকর্মীদের বাহবা কুড়িয়েছেন খালিদ। সামনের দিনগুলোতেও তার হাতে রয়েছে সংস্কৃতির উন্নয়নে নানা পরিকল্পনা।

২০১৯ সালের ৬ জানুয়ারি সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন কে এম খালিদ। এর পর থেকেই নিরলস কাজ করে চলেছেন ময়মনসিংহ-৫ আসনের এই সংসদ সদস্য।

দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই কে এম খালিদের নির্দেশনায় সুচারুভাবে সম্পন্ন হয় অমর একুশে গ্রন্থমেলা। মেলার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পরিসর নিয়ে আয়োজিত ওই মেলায় বৃষ্টিতে প্রকাশকদের ক্ষতির দিক বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শক্রমে তিনি দুই দিন সময়ও বৃদ্ধি করেন, যা লেখক-প্রকাশক-পাঠকদের কাছে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়।

তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পরেই দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একটি আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসবের আয়োজন করেন। ২০১৯ সালের ২০ থেকে ২৬ জুন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় ‘বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসব’ শিরোনামে এ নাট্যোৎসবের আয়োজন করা হয়। যাতে বাংলাদেশের পাশাপাশি ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন, ভিয়েতনাম, ভারত ও নেপালের নাট্যদল অংশ নেয়। এ নাট্যোৎসবটি নাট্যপ্রেমীদের কাছে নতুন উদ্দীপনার সৃষ্টি করে।

এর পরেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষের আয়োজনে সামনের সারিতে দায়িত্ব নেন কে এম খালিদ। নানা পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। তবে করোনা প্রকোপের কারণে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষের আয়োজন আপাতত স্থগিত রয়েছে।

বাংলা একাডেমির অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ

করোনা মহামারির সময়েও কর্মহীন হয়ে পড়া সারাদেশের প্রায় পাঁচ হাজার অসচ্ছল শিল্পী ও সংস্কৃতিসেবীকে এককালীন আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। জেলা প্রশাসন এবং শিল্পকলা এক‍াডেমির জেলা কালচারাল অফিসারের সহযোগিতায় মাঠ পর্যায় হতে এবং ঢাকা মহানগর এলাকার জন্য বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। প্রস্তুতকৃত তালিকা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে এসব অসচ্ছল শিল্পী ও সংস্কৃতিসেবীকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে।

নিজের পরিকল্পনার বিষয়ে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বাংলানিউজকে বলেন, আমি অনেকগুলো পরিকল্পনা মাথায় নিয়ে কাজ করছি। যার কিছু ইতিমধ্যেই আপনারা দেখেছেন। তবে সামনের দিনগুলোতেও আরও অনেক কিছু করার ইচ্ছা আছে। দেশের সংস্কৃতি খাতকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন, তা যথাযথভাবে পালনের চেষ্টা করছি।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো একটি আন্তর্জাতিক নাট্যেৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীকে সামনে রেখে একটি আন্তর্জাতিক বইমেলা ও আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলনের পরিকল্পনা হাতে রয়েছে। যেখানে বিশ্বের খ্যাতনাম‍া সাহিত্যিকদের বাংলাদেশে আনা হবে। এ দুই আয়োজন আগামী মার্চ মাসের মধ্যে করে ফেলতে পারবো বলে আশা করি।

অনেকগুলো উন্নয়ন প্রকল্পের পরিকল্পনার কথাও জানান কে এম খালিদ। তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের পানাম নগরের রিস্টোরেশনের কাজ আগামী মাসেই শুরু হবে। প্রাথমিকভাবে একটি ভবনকে রিস্টোরেশন করে কাজ শুরু হবে। এর পাশাপাশি দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ১০০টি উপজেলায় এই সাংস্কৃতিক কেন্দ্র তৈরি করা হবে। যার কাজ আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর থেকে শুরু হবে। এর পাশাপাশি গণগ্রন্থাগার ডিজিটালাইজেশনের কাজও চলমান রয়েছে।

সংস্কৃতিমনা পরিবারের সন্তান কে এম খালিদ ১৯৫৫ সালের ৪ আগস্ট ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেন। তার দুই বড় ভাই মাহমুদ সাজ্জাদ ও ম. হামিদ দুইজনই দেশের সংস্কৃতিঅঙ্গণে সুপরিচিত নাম।

ছাত্র জীবন থেকেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। ১৯৮০ থেকে ১৯৮১ মেয়াদে আনন্দ মোহন কলেজ ছাত্র সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হন। ছাত্র জীবনে সংস্কৃতিচর্চার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন তিনি।

২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ-৫ থেকে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসন থেকে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২০
ডিএন

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।