শুক্রবার (১০ জুলাই) সকালে জেলা শহরের এসডি স্টোরের স্বত্বাধিকারী শংকর দাশের বাসা থেকে শিলিং ফ্যানে ঝুলন্ত মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। ভেতরের দিকে বন্ধ থাকায় কক্ষের দরজা ভেঙে মরদেহ বের করতে হয়।
পুষ্প হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার চন্ডীপুর গ্রামের প্রবাল চৌধুরীর মেয়ে। প্রায় ৫ বছর আড়ে ১৪ বছর বয়সে ময়মনসিংহের খালিয়াজুড়ির বাসিন্দা প্রাঞ্জল দাসের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তখন পুষ্প পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। স্বামী মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় এক বছর পর সেখান থেকে চলে আসেন।
পুষ্পের ভাই কৃষ্ণ চৌধুরী জানান, বিয়ের আগেই প্রাঞ্জল দাস পাগল ছিলেন। কিন্তু তার পরিবার বিষয়টি গোপন রেখেই আমার বোনের সঙ্গে বিয়ে দেয়। প্রায় এক বছর সংসারের পর তারাই পুষ্পকে ফিরিয়ে দেন। তবে সেখান থেকে পুষ্প বাড়ি ফিরেনি। বিভিন্ন স্থানে গৃহপরিচারিকার কাজ করছিল।
এসডি প্লাজার স্বত্বাধিকারী শংকর দাশ জানান, বৃহস্পতিবার রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষ ঘুমিয়ে পড়ে পুষ্প। সকাল ডাকাডাকি করলে সাড়া মেলেনি। পরে জানালা দিয়ে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পাওয়া যায়। ভেতরের দিকে দরজা বন্ধ থাকায় পুলিশ দরজা ভেঙে মরদেহ উদ্ধার করে। শুক্রবার রাতে তার দাহ সম্পন্ন হয়।
তিনি আরও জানান, প্রায় দেড় বছর ধরে পুষ্প আমার বাড়িতে কাজ করছে। এর আগে সে অন্যত্র কাজ করেছে। প্রতিদিনই সে সবার সঙ্গে হাসিমুখে আচরণ করতো। তবে কোনো অনুষ্ঠান হলে তার কক্ষ থেকে বের হতো না। আমি তাকে নিজের মেয়ের মতোই দেখতাম। সেও সবাইকে আপন করে নিয়েছিল। তবে প্রায়ই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকতো মেয়েটি।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুক আলী বাংলানিউজকে জানান, প্রায় পাঁচ বছর আগে ময়মনসিংহের খালিয়াজুরীতে এক ছেলের সঙ্গে বিয়ে হয় পুষ্পের। ছেলেটি মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় স্বামীর বাড়ি থেকে চলে আসেন তিনি। এরপর থেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন পুষ্প। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি আত্মহত্যা। মৃতের পরিবারেরও কোনো অভিযোগ নেই। এ ব্যাপারে অপমৃত্যু মামলা রুজু হয়েছে।
উদ্ধার হওয়া চিরকুটে বিদ্যা অর্জন করতে না পারার আক্ষেপ, মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়সহ বিভিন্ন আবেঘগণ লেখা। এ ঘটনায় শহরজুড়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২০
ওএইচ/