ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

বেনাপোল বন্দরে রাজস্ব ঘাটতি ১১ কোটি ৬ লাখ টাকা

উপজেলা করসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪০ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২০
বেনাপোল বন্দরে রাজস্ব ঘাটতি ১১ কোটি ৬ লাখ টাকা বেনাপোল স্থলবন্দরে ২০১৯-২০ অর্থবছরে আমদানী পণ্য সংরক্ষণে পণ্যগারের ভাড়া বাবদ ১১ কোটি ৬ লাখ টাকা ঘাটতি হয়েছে।

বেনাপোল (যশোর): বেনাপোল স্থলবন্দরে ২০১৯-২০ অর্থবছরে আমদানী পণ্য সংরক্ষণে পণ্যগারের ভাড়া বাবদ ১১ কোটি ৬ লাখ টাকা ঘাটতি হয়েছে। বিগত অর্থবছরে এখাতে বন্দরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা, যেখানে আদায় হয়েছে ৮৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা।

বৃহস্পতিবার(০৯ জুলাই) বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক(ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার রাজস্ব আদায়ে ঘাটতির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

বন্দর সূত্রে জানা যায়, ভারত থেকে যে পণ্য আমদানি হয়, প্রাথমিক অবস্থায় পণ্যচালানটি বেনাপোল বন্দরের ওয়ারহাউজ(পণ্যগারে) রাখা হয়।

এ সময় আমদানি পণ্য রক্ষণাবেক্ষণ ও পণ্যগার ভাড়া বাবদ বন্দর কর্তৃপক্ষ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নির্ধারিত হারে রাজস্ব আদায় করে থাকে।

বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক(ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জনান, করোনার কারণে আড়াই মাস ধরে আমদানি বন্ধ ছিল। রাজস্ব ঘাটতির এটা অন্যতম কারণ।

তিনি জানান, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ভারত থেকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি হয়েছে ১৭ লাখ ৭৮ হাজার ৬২৮ মেট্রিক টন। এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ভারত থেকে পণ্য আমদানি হয়েছিলো ১৮ লাখ ৩৬ হাজার ৯৫৩ মেট্রিক টন।

তিনি আরো বলেন, বন্দরের উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত হলে বেনাপোল বন্দর একটি আধুনিক বন্দর হিসাবে পরিচিতি পাবে। তখন আমদানি বৃদ্ধির পাশাপাশি দ্বিগুন রাজস্ব বাড়বে।

বেনাপোল সিএন্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুজিবর রহমান জানান, এ পথে রাজস্ব আয় বাড়াতে হলে বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন বাড়াতে হবে। এছাড়া বন্দরে বারবার রহস্যজনক অগ্নিকান্ডে অনেক ব্যবসায়ীরা পুঁজি হারিয়ে পথে বসেছেন। অনেকেই কোনো ক্ষতিপূরণ না পাওয়ায় এ বন্দর ছেড়েছেন। আবার পণ্য ছাড় করার ক্ষেত্রে বৈধ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত না হওয়াও আমদানি কমে যাওয়ার একটি কারণ। এতে দিনদিন রাজস্ব ঘাটতি হচ্ছে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক লতা জানান, বেনাপোল বন্দরের বর্তমান ধারণ ক্ষমতা প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন। তবে এখানে সব সময় পণ্য থাকে প্রায় দেড় লাখ মেট্রিক টন। চাহিদা অনুপাতে জায়গা না থাকায় মূল্যবান আমদানি সামগ্রী রাখতে হয় খোলা আকাশের নিচে। এতে সুবিধা বঞ্চিত হয়ে ব্যবসায়ীদের অনেকে এ বন্দর ছেড়ে বাণিজ্য করছেন অন্য বন্দর দিয়ে। ফলে এ বন্দরটিতে কাঙ্খিত রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হচ্ছেনা।

বেনাপোল বন্দর থেকে ভারতের কলকাতা শহরের দূরত্ব ৮৩ কিলোমিটার। মাত্র তিন ঘণ্টায় একটি পণ্যবাহী ট্রাক আমদানি পণ্য নিয়ে পৌঁছাতে পারে কলকাতা শহরে। তেমনি একই সময় কলকাতা থেকে পণ্যবাহী ট্রাক পৌঁছায় বেনাপোল বন্দরে। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়াতে এ পথে ব্যবসায়ীদের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে প্রবল আগ্রহ রয়েছে।

প্রতিবছর এ বন্দর দিয়ে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি হচ্ছে, যা থেকে সরকার প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে থাকে। এবং আমদানির সঙ্গে দিনদিন বাড়ছে রপ্তানির পরিমাণ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন পণ্য রফতানি হয়ে থাকে। এ বছর ১০ হাজার কোটি টাকার পণ্য ভারতে রফতানি হওয়ার কথা ছিল।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৮ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২০
ইইউডি/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।