ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

গণপরিবহনে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি, নেই নিরাপদ দূরত্বও

361 | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ৯, ২০২০
গণপরিবহনে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি, নেই নিরাপদ দূরত্বও

ঢাকা: দীর্ঘ সাধারণ ছুটির পর সাধারণ মানুষের কথা ভেবে এবং করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সীমিত আকারে চালু করা হয় দেশের গণপরিবহন। এসময় পরিবহন মালিকদের শারীরিক দূরত্ব রক্ষাসহ অন্যান্য নির্দেশনা মেনে রাস্তায় গণপরিবহন চালানোর কথা বলা হয়। একইভাবে অবহিত করা হয় যাত্রীদেরও। কিন্তু সময় যতো পার হচ্ছে, সেসব স্বাস্থ্যবিধি বা নিরাপদ দুরত্ব মানতে দেখা যাচ্ছে না গণপরিবহন সংশ্লিষ্ট ও যাত্রীদের কাউকে।

করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলার কথা থাকলেও বিভিন্ন বাসে দেখা যাচ্ছে তার উল্টো চিত্র। দু’টি সিটে একজন করে যাত্রী নেওয়ার পর বাসপূর্ণ হলেও অনেক বাসেই দেখা গেছে দাঁড়িয়ে যাত্রী নিতে।

তবে যাতায়াত যেভাবেই হোক না কেন, ৬০ শতাংশ অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের।

বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্রই। বেশিরভাগ বাসগুলোতেই শারীরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার দৃশ্য চোখে পড়েনি। আবার অনেক বাসে যাত্রী ওঠানোর পূর্বে যাত্রীর হাতে দেওয়া হয়নি হ্যান্ড স্যানিটাইজারও। তবে নগরে কয়েকটি বাসে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে দেখা গেলেও তার সংখ্যা বেশকম।

সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ বাসেই অতিরিক্ত যাত্রী। বাসগুলোতেই শারীরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধিও মানা হচ্ছে না সেভাবে। আবার বাসে ওঠার জন্য বাসের মুখেও ভিড় জমাচ্ছেন অনেকে। এতে করে বাড়ছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকি।

এ বিষয়ে কথা হলে গাবতলী লিংক পরিবহনের শ্রমিক মো. আহম্মদ বলেন, আমরা তো সবসময় নিয়ম মেনেই চলতে চাই। কিন্তু যাত্রীরা কথা শোনেন না। তাদের নিষেধ করা হলেও তারা জোর করে বাসে উঠে পড়েন। আবার নামিয়ে দিতে গেলে রাগারাগি ও কটূক্তি করেন।  

বিভিন্ন বাসে এসময় পাশাপাশি দু’টি ছিটে দুজনকেও বসতে দেখা গেছে। এ বিষয়ে কথা হলে একটি পরিবহনের যাত্রী তাহমিনা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, আমরা একই পরিবাবের সদস্য। তাই পাশাপাশিই বসেছি। এছাড়া অনেককেই দেখেছি যারা একই পরিবারের সদস্য না হয়েও শুধু চেনা-জানা বা বন্ধুত্বের সূত্র ধরে গণপরিবহনে পাশাপাশি বসে যাত্রা করছেন।

গণপরিবহন চালুর প্রথম দিকে প্রায় প্রতিটি যাত্রীকেই বাসে ওঠানোর আগে তার হাতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিতেন পরিবহন শ্রমিকরা। তবে সময় যতো গড়াচ্ছে, মানা হচ্ছে না সেই বিষয়টিও। এখন হরহামেশাই বাসে উঠে পড়ছেন যাত্রীরা।

এ বিষয়ে রাজধানীর '৩ নম্বর' (বঙ্গবাজার-এয়ারপোর্ট-আব্দুল্লাহপুর) পরিবহনের শ্রমিক জিতু আহমেদ বলেন, আমরাতো সবসময়ই যাত্রীদের ভালো চাই। তাদের হাতে জীবাণুনাশক স্প্রে করেই গাড়িতে তুলি। কিন্তু তারাই তাড়াহুড়ো করেন। সত্যি বলতে যাত্রীরা সচেতন না হলে আমাদের পক্ষে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।

রাজধানীর এ্যালিফ্যান্ট রোড, কাঁটাবন, শাহবাগ, কারওয়ানবাজার, ফার্মগেইট, মিরপুর এলাকায় দেখা এমন চিত্র। সাধারণ মানুষ বলছেন, এমন চিত্র এখন নিত্যদিনের ঘটনা। আর এটাকে মেনে নিয়েই তাদের চলতে হবে।

তবে গণপরিবহনে নিরাপদ দূরত্ব বা অন্যান্য নির্দেশনা না মানলে ব্যবস্থ্যা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে। এ বিষয়ে রাজধানীর বেশকিছু এলাকার ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, গণপরিবহনে করোনা ঝুঁকিতে নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এটা ঠিক যে কিছু বাসে শারীরিক দূরত্ব বা অন্যান্য নির্দেশনা বজায় রাখা হচ্ছে না। যারা নিয়ম মানছেন না, তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া বা মামলা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, জুলাই ০৯, ২০২০
এইচএমএস/ওএইচ/
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।