ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

অবৈধ গ্যাস সংযোগ কেড়ে নিল পুরো পরিবার

সাভার করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৭ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০২০
অবৈধ গ্যাস সংযোগ কেড়ে নিল পুরো পরিবার এ পরিবারটি এখন শুধুই স্মৃতি, ছবি: সংগৃহীত

সাভার (ঢাকা): দীর্ঘ ১০ বছর আগে ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে কর্মের সন্ধানে সন্তানসহ ঢাকার আশুলিয়ায় আসেন আবুল কাশেম (২৮) ও তার স্ত্রী ফাতেমা (২৫)।  

আশুলিয়ার দূর্গাপুর এলাকায় থেকে আলাদা আলাদা পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন দু’জনই।

 

১০ বছর বয়সী সন্তান আলামীনকে নিয়ে কাশেম-ফাতেমা দম্পতির সংসার ভালোই চলছিল। ছিল না কোনো ঋণ বা অভাব। তাদের স্বপ্ন ছিল ছেলে আলামীনকে লেখাপড়া করিয়ে মানুষের মতো মানুষ করা।  

কিন্তু সোমবার (০৬ জুলাই) ভোরে বাসার অবৈধ গ্যাস সংযোগ লিক হয়ে বিস্ফোরণে পুড়ে ছাই হয়ে যায় তাদের স্বপ্ন।  

বুধবার (০৮ জুলাই) সকালে আশুলিয়ার দুর্গাপুরে পূর্ব চালা এলাকার শহীদ হাজির যে বাড়িতে কাশেম পরিবার নিয়ে থাকতেন, সেখানে গিয়ে কথা হয় নিহত কাশেমের মামা আব্দুল আজীজের সঙ্গে।

তিনি বাংলানিউজকে জানান, গত সোমবার ভোরে ঘরের অবৈধ গ্যাস সংযোগ লিক হয়ে বিস্ফোরণ হয়৷ এসময় ঘটনাস্থালেই আলামীন মারা যায়। বিকট শব্দ পেয়ে স্থানীয়রা এসে অগ্নিদগ্ধ কাশেম ও ফাতেমাকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে কাশেমের মৃত্যু হয়। ঘটনার পরদিন বিকেলে ময়মনসিংহের একটি হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ফাতেমারও।  

আব্দুল আজীজ আরো বলেন, ১০ বছর ধরে তারা আশুলিয়ায় ছিল। দুই মাস আগে আশুলিয়ার দুর্গাপুর পূর্ব চালা গ্রামের শহীদ হাজি বাড়িতে থেকে কাশেম স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় আর ফাতেমা সাউদান গার্মেন্টস কারখানায় কাজ করত। পরিবারটি শেষ হয়ে গেল। কি থেকে কি হলো কিছুই বুঝতে পারছি না। ফাতেমা যে পোশাক কারখানায় কাজ করত, সেখান থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা নিহতের স্বজনদের দেওয়া হয়েছে। তাদের সবার মরদেহ দাফন করা হয়েছে। আমি আজ ঘরের সব আসবাবপত্র নিতে এসেছি।  

বাড়ির আরেক ভাড়াটিয়া শহিদুর বাংলানিউজকে বলেন, আমরা আগে সিলিন্ডার গ্যাস দিয়ে রান্না করতাম। ঘটনার দু’দিন আগে গ্যাস সংযোগ পেয়েছি। এ দুর্ঘটনার পর থেকে আবার গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করছি।

বাড়িটির মালিক শহীদ ও ম্যানেজার জাহিদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।  

এ বিষয়ে সাভার তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (বিক্রয়) প্রকৌশলী আবু সাদাৎ মোহাম্মদ সায়েম বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বিষয়টি জানি না। আপনার কাছেই জানলাম৷ যেহেতু সেই বাড়িটির গ্যাস সংযোগ অবৈধ, সেজন্য আমাদের এখানে করার কিছু থাকবে না। তবে যখন আমরা অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করব, তখন সেই বাড়িটির সংযোগও বিচ্ছিন্ন করব।  

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিজাউল হক বলেন, এ বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। তদন্ত করে দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০২০
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।