নিয়মিত গরুটিকে খৈল-ভুষি মিশ্রিত পানির সঙ্গে আপেল, কমলা, মাল্টা ও মানিক কলা খাওয়াতে থাকেন তিনি। সেইসঙ্গে খুদের ভাত ও খড় কেটেও খাওয়াতেন।
অবিশ্বাস্য ব্যাপার হলো মাত্র ১০ মাস পরই চলতি মার্চ মাসে গরুটি এমন ভাবে বেড়ে উঠলো যে তা দেখে গরুটির নাম রাখা হয় ক্যাপ্টেন। সেসময় স্থানীয় বাজারে এর দাম উঠেছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। কিন্তু পেশায় খাদ্য ব্যবসায়ী ও পোল্ট্রি খামারি মাসুদ রানা গরুটি আরো কয়েক মাস রাখার ইচ্ছা পোষণ করলেন। এ অবস্থায় সেই আগের মতোই লালন-পালন করতে থাকেন তিনি। নিয়মিত পরিচর্যায় এবং পুষ্টিকর সব খাবারে গরুটি যেন দিন দিন ফুলতে শুরু করে। বর্তমান ১ বছর ২ মাস বয়সে তার ওজন দাঁড়িয়েছে ২৫ মণ।
মাসুদ রানার মা শহিদা বেগম ও স্ত্রী রেখা বেগম জানান, গরুটি দেখার জন্য প্রায় প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন ভিড় জমায় আমাদের বাড়িতে। তবে এতে বিরক্ত মনে হয় না, ভালই লাগে।
স্থানীয় বাসিন্দা মুকুল, মিন্টু ও সামিউল জানান, সম্ভবত আমাদের দুই জেলা জয়পুরহাট ও নওগাঁয় এতো বড় গরু আর কোথাও নেই। রানা ভাইয়ের গরু দেখতে এ গ্রামে নানা শ্রেণীপেশার মানুষ আসেন। এটা দেখে আমরাও অনেকটাই পুলকিত।
তবে এতো কিছুর পরও গরুর মালিক মাসুদ রানার মনে শান্তি নেই। কারণ সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও করোনা আতঙ্কে বড় গরু কেনার মতো পাইকার পাচ্ছেন না তিনি। অন্যদিকে বিশাল আকারের এই গরুটি নিয়ে স্থানীয় বাজারেও যেতে পারছেন না। কারণ গরুর হাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই নেই।
এ ব্যাপারে মাসুদ রানা বলেন, ১ বছর ২ মাস আগে অনেকটা শখের বশেই গরুটি কিনেছিলাম। বগুড়ার এক খামারির পরামর্শে গরুকে পুষ্টিকর ফলমূল খাইয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে অতি দ্রুত স্বাস্থ্যবান বানিয়েছি। কোরবানির বাজারে এই গরুর দাম ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা হলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো পাইকার পাচ্ছি না। অন্যদিকে স্থানীয় পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধির বালাই না থাকায় ভয়ে সেখানেও তুলতে পারছি না। বর্তমানে আমি এই ক্যাপ্টেনকে নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় আছি।
এ বিষয়ে জয়পুরহাট সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে এ ধরনের গরু নিয়ে কোনো খামারি যদি সমস্যায় পড়ে থাকেন, তাহলে তারা আমাদের কার্যালয়ে আসতে পারেন। এ ক্ষেত্রে ওই গরুর ছবি ও ভিডিও ক্লিপ দিয়ে আমরা অনলাইন মার্কেটে আপলোড দিচ্ছি। এতে খুব সহজেই তার গরুটি বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫২ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০২০
আরএ/এমজেএফ