ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ভার্চ্যুয়াল আদালতে নারীর সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে মতবিনিময় সভা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৬ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০২০
ভার্চ্যুয়াল আদালতে নারীর সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে মতবিনিময় সভা

ঢাকা: ভার্চ্যুয়াল আদালতে নারী ও শিশু সুরক্ষা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।

সোমবার (৫ জুলাই) বিকেলে পরিষদের লিগ্যালএইড উপপরিষদের উদ্যোগে অনলাইনে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম।

আলোচনা করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট জেয়াদ-আল-মালুম, অ্যাডভোকেট এসএমএ সবুর, অ্যাডভোকেট মো. আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট একেএম সোহেল আহমেদ, ব্যারিস্টার একে রাশেদুল হক, অ্যাডভোকেট রেজিয়া সুলতানা, অ্যাডভোকেট অমিত দাশগুপ্ত এবং অ্যাডভোকেট একেএম আলমগীর পারভেজ ভূইয়া।

সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, কোভিড সংক্রমণ পরিস্থিতিতে নারী ও কন্যা নির্যাতন বেড়েছে, কিন্তু বিচার পাওয়ার সুযোগ সীমিত। ভার্চ্যুয়াল কোর্টের মাধ্যমে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিচার পাওয়ার যতটুকু সুযোগ তৈরি হয়েছে, কি সীমাবদ্ধতা আছে সে বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে করণীয় নির্ধারণ এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

অ্যাডভোকেট জেয়াদ-আল-মালুম বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলাগুলো দু’টি ভাগে বিভক্ত। একটা ফৌজদারি মামলা, অন্যটি পারিবারিক আদালতে মামলা। কোভিড সংক্রমণের কারণে নারী নির্যাতনের নালিশী মামলার কার্যক্রম বন্ধ। স্থগিত হয়ে যাওয়া মামলাগুলো অবারিত করার জন্য উদ্যাগ নেওয়া প্রয়োজন।

অ্যাডভোকেট অমিত দাশগুপ্ত বলেন, কোভিড সংক্রমণের ক্রান্তিকালে ভার্চ্যুয়ার কোর্ট আইন পাস হয়। নারী ও শিশু নির্যাতন ফৌজদারি অপরাধ। এক্ষেত্রে নির্যাতনের শিকার নারী প্রতিকার চেয়ে থানায় অথবা কোর্টে মামলা করতে পারেন। কিন্তু কোর্ট বন্ধ থাকার কারণে থানা ছাড়া মামলা করার সুযোগ ছিলো না। ভার্চ্যুয়াল কোর্ট সৃষ্টি হওয়ার ফলে তারা এখন মামলা করতে পারবেন।

অ্যাডভোকেট মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ভার্চ্যুয়ার কোর্টে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন (এফআইআর), তদন্ত, সাক্ষ্যগ্রহণ, শুনানি ইত্যাদির করা যাবে। কিন্তু সিপিসি, সিআরপিসি অনুযায়ী ভার্চ্যুয়াল কোর্টে সব প্রসিডিউর সম্পন্ন করা সম্ভভ নয়। নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে সীমিত পরিসরে হলেও নিয়মিত আদালত চালু করা না গেলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

ব্যারিস্টার একে রাশেদুল হক বলেন, বর্তমানে ঘরে থাকার করাণে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বেড়েছে। এর প্রতিকারের লক্ষ্যে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। ভার্চ্যুয়াল কোর্টে শুধু শুনানি টুকুই ভার্চ্যুয়াল। বাকিসব শারীরিকভাবেই করতে হয়। বর্তমানে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম সীমিত হওয়ায় শুধু থানাতেই নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা করতে হচ্ছে। কিন্তু  প্রভাবশালীদের কারণে থানায় মামলা করা অনেক ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জিং। এক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার বাড়ানো যেতে পারে।

অ্যাডভোকেট রেজিয়া সুলতানা বলেন, ভার্চ্যুয়াল কোর্টে আসামি আত্মসমর্পণ করার কোনো সুযোগ নেই। এর মধ্যে দুই হাজার ৩০০ নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা প্রেন্ডিং হয়ে গেছে। প্রয়োজনে বিশেষ আদালত করে জটিল মামলাগুলো পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

অন্যান্য আলোচকরা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিষয়গুলো কোর্টের জুরিসডিকশনে আসা প্রয়োজন। অনেক পুরানো মামলার শুনানি হচ্ছে না। এগুলো এখন ভার্চ্যুয়াল  কোর্টের মাধ্যমে করা প্রয়োজন। এছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে থানায় মামলা না নিলে কোর্টে মামলা দায়ের করা যাচ্ছে না। নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব না হলে আমরা আরও পিছিয়ে পড়বো।

এসময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু ও সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদা রেহানা বেগম। সভা সঞ্চালনা করেন লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড লবি পরিচালক অ্যাডভোকেট মাকছুদা আখতার। সভায় সব বক্তারা নারী ও শিশুর সুরক্ষা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে আদালতের এখতিয়ার বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০২০
এইচএমএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।