ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ট্রাম্পের দেশ থেকে আসা রোজো ও টাইগার বিক্রি হলো ৬৭ লাখে!

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০২০
ট্রাম্পের দেশ থেকে আসা রোজো ও টাইগার বিক্রি হলো ৬৭ লাখে!

ঢাকা: গায়ের রং লাল। মালিক বলেন চকলেট কালার। টান টান তেলতেলে চামড়া। প্রকাণ্ডদেহী। কুলার মতো দু’টি বড় বড় কান। ঝুঁটও তেমন বাহারি। হাতির সঙ্গে তুলনা করলে খুব বেশি বেমানান হবে না। মাথায় শিং নেই। তাতে কী! যে কেউ সামনে গেলেই ভড়কে যাবেন। কিন্তু অনেক শান্ত স্বভাবের। গলার ঝুল, লেজ মাটি ছুঁই ছুঁই। চলনবলনও রাজার মতো। 

এই প্রকাণ্ডদেহী গরুটির নাম রোজো। কোরবানি উপলক্ষে ২০১৮ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশ যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস থেকে বাংলাদেশে এসেছিল।

কার্গো প্লেনে প্রায় ৩৩ ঘণ্টা আকাশপথ পাড়ি দিয়ে সরাসরি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পৌঁছায় সে। বর্তমানে মোহাম্মদপুরের সাদিক অ্যাগ্রো ফার্মে রাখা হয়েছে বিশালদেহী ব্রহ্ম জাতের গরুটিকে। রোজোর মতোই আরো আরেকটি বিশাল গরু টাইগার। এবার কোরবানি উপলক্ষে টাইগার ও রোজো রেকর্ড দামে বিক্রি হয়েছে।  

রোজোরোজোর বয়স চার বছর। তাকে ট্রাম্পের দেশ থেকে আনতে খরচ হয়েছিল প্রায় আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়েছিল। এবার কোরবানিতে ৩৭ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে রোজো। অন্যদিকে টাইগারের দাম ৩০ লাখ। দু’টি মিলিয়ে ৬৭ লাখ টাকায় পুরান ঢাকার এক ব্যবসায়ী গরু দু’টি কিনেছেন। তবে ঈদের আগ পর্যন্ত রোজো থাকবে সাদিক অ্যাগ্রো ফার্মেই।

ফার্মের ভেতর ছয়টি রশির সাহায্যে লোহার দণ্ডে বেঁধে রাখা হয়েছে রোজোকে। নিয়ন্ত্রণ করার জন্য রোজোর নাকে দেওয়া হয়েছে লোহার বালা।

ফার্মের লোকদের দাবি, রোজোর ওজন ১ হাজার ৩১০ কেজি। উচ্চতা সাত ফুট, দৈর্ঘ্য ১২ ফুটের কম নয়।
টাইগার
২০১৮ সালে কোরবানি উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস থেকে বাংলাদেশে বিশালদেহী ব্রহ্ম জাতের এরকম ৭টি গরু আনা হয়েছিল। রোজো ও টাইগার এদের মধ্যে অন্যতম।

মার্কিন মুলুকেই বেড়ে উঠেছে সবাই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৯ মাস বয়সে রোজো ও ১৭ মাস বয়সে টাইগার দেশে আসে। এদের বয়স এখন চার বছর ছুঁই ছুঁই।  

রোজোর মতোই কোরবানির আরও একটি বড় আকর্ষণ টাইগার। টাইগারের বয়স রোজোর থেকে দুই মাস কম। কারণ টাইগার যখন দেশে আসে তখন বয়স ছিল ১৭ মাস। টাইগার ৩০ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে। টাইগারের ওজন ১১শ কেজি। টাইগারের শরীর সাদা-কালোয় মোড়া। মাথা, ঘাড় ও চার পায়ের অংশ কালো। টাইগারকে দেখে অনেকে ভয় পাবে।  

কোরবানি উপলক্ষে আমেরিকা থেকে কোরবানির গরু আমদানি প্রসঙ্গে সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক ইমরান হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, সরাসরি কার্গো প্লেনে সাতটি গরু আমেরিকা থেকে ঢাকায় এনেছি। এবার কোরবানিতে রোজো ও টাইগার বিক্রি করেছি ৬৭ লাখ টাকায়।  

...পাঁচ থেকে ছয় জন মানুষ গরুগুলোর পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।  প্রতিটা গরুকে দৈনিক ৩০ কেজি গম, ভুট্টা, খেসারির ভুসি মিশিয়ে খেতে দেওয়া হয়। পাশাপাশি খাবার মেন্যুতে রাখা হয় ২৫ কেজি ঘাস ও ৮ কেজি খড়। শুধু তিনবেলা নয়, যখনই বোঝা যায় রোজো-টাইগোরের খাই মেটেনি তখনই  খাবার দেওয়া হয় ওদের। ঘুমানোর স্থান সব সময় পরিষ্কার রাখা হয়। ২৪ ঘণ্টা সিলিং ফ্যান ঘোরে মাথার ওপর।

সাদিক অ্যাগ্রো ফার্মের ম্যানেজার মোহাম্মদ শরিফ বলেন, রোজোর মতো এমন শান্ত গরু আমি দেখিনি। তবে টাইগার রোজোর মতো শান্ত স্বভাবের না। অপরিচিত কাউকে কাছেপিঠে ভিড়তে দেয় না টাইগার। তবে পরিচিত হয়ে গেলে কোনো সমস্যা নেই, কাছে গেলেই জিভ দিয়ে শরীর চেটে দিতে পছন্দ করে। করোনার মধ্যেও রোজো ও টাইগারকে দেখতে সবাই ভিড় করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০২০
এমআইএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।