ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বরগুনায় জনগণের চাঁদায় কেনা হলো ২টি হাই ফ্লো নেজাল ক্যানোলা

উপজেলা করসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৬ ঘণ্টা, জুলাই ৫, ২০২০
বরগুনায় জনগণের চাঁদায় কেনা হলো ২টি হাই ফ্লো নেজাল ক্যানোলা

বরগুনা: ‘আমাদের জন্য আমরা’-করোনারোগীদের সেবায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এমন আবেদনে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসেন নানা শ্রেণিপেশার মানুষ।

যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী চাঁদা দেন। পরে সেই চাঁদা থেকে প্রায় নয় লাখ টাকা ব্যয়ে কেনা হয় দু’টি ‘হাইপার ফ্লো নেজাল ক্যানোলা’ মেশিন।

মেশিন দু’টি বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জটিল করোনারোগীদের সেবায় ব্যবহৃত হবে।  

রোববার (৫ জুলাই) বরগুনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্থানীয় সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও সাংবাদিক অঙ্গনের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ এবং সিভিল সার্জন ডা. মো. হুমায়ুন শাহিন খানের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে মেশিন দু’টি হস্তান্তর করা হয়।  

বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, জটিল করোনারোগীদের যখন সাধারণ অক্সিজেন সিলিন্ডারে কাজ হয় না, তখন আইসিউ বা ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন পড়ে। হাই ফ্লো নেজাল ক্যানোলা মেশিন দিয়ে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) বা ভেন্টিলেটরের কাছাকাছি পর্যায়ের সাপোর্ট দেওয়া যায়। এ রকম একেকটি মেশিনের দাম সব কিছু মিলিয়ে প্রায় চার লাখ টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে একটি মাত্র হাই ফ্লো নেজাল ক্যানোলা মেশিন রয়েছে। যা রোগীর সংখ্যার তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। তাই বরগুনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও প্রবীণ সাংবাদিক আব্দুল আলীম হিমুর নেতৃত্বে তরুণ সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিককর্মী মুশফিক আরিফ ‘আমাদের জন্য আমরা’ এ স্লোগান নিয়ে একটি প্রকল্প হাতে নেন। যার মাধ্যমে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের জন্য দু’টি হাই ফ্লো নেজাল ক্যানোলা মেশিন কিনতে ফেসবুকে বরগুনার সন্তানদের কাছে আর্থিক সহযোগিতা চাওয়া হয়। মুশফিক আরিফের এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশ-বিদেশে অবস্থানরত বরগুনার অনেকে অর্থ সহায়তা দেন।

এ বিষয়ে ‘আমাদের জন্য আমরা’ প্রকল্পের প্রধান সমন্বয়ক সাংবাদিক মুশফিক আরিফ বলেন, আমরা শুধু শুরুটা করেছি। আমাদের ওপর আস্থা রেখে বাকিটা সম্পন্ন করেছেন বরগুনার স্থানীয় সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে ভাবেন এমন প্রিয়জনরা। এখানে সব ক্রেডিট তাদের, যারা আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এগিয়ে এসেছেন। দু’টি মেশিনের একটি এরই মধ্যে বরগুনায় চলে এসেছে। অপর মেশিনটি বরগুনায় এসে পৌঁছাতে আরও দু’একদিন লাগবে।  

তিনি আরও বলেন, জনগণের চাঁদায় শুধু এ দু’টি মেশিনই নয়, এর সঙ্গে স্থেটোস্কোপ (বিপি মাপার যন্ত্র), পালস অক্সিমিটার (শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ও হার্টবিট মাপার যন্ত্র) এবং কেএন-৯৫ মাস্কসহ আরও বেশ কিছু চিকিৎসা সমাগ্রী কেনা হয়েছে।

এ বিষয়ে বরগুনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আব্দুল আলীম হিমু বলেন, বরগুনা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের উদ্যোগে বিভিন্ন সময়ে বরগুনার বিভিন্ন সংকটে এমন অনেক মহৎ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়েছে।  

তিনি এ প্রকল্পের জন্য যারা প্রকাশ্যে বা গোপনে অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন, তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি হাসপাতালেই এ মেশিন পৌঁছানোর প্রক্রিয়া চলছে। তবে সারা দেশে তা পৌঁছাতে হয়তো কিছুটা সময় লাগবে। সরকারের পাশাপাশি সর্বস্তরের সাধারণ জনগণ এগিয়ে এলে স্থানীয় অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব।  

এসব মেশিন কেনার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি এ উদ্যোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে এবং যারা অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন, তাদের ধন্যবাদ জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৬ ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০২০
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।