ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

৬ মাসের কাজ ৩ মাসেই শেষ! 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৫ ঘণ্টা, জুলাই ৫, ২০২০
৬ মাসের কাজ ৩ মাসেই শেষ! 

পাবনা (ঈশ্বরদী): রাজশাহী-খুলনা-ঈশ্বরদী-ঢাকা রেল রুটের সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ২৬ নম্বর রেলসেতুর সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় ছয় মাসের কাজ তিন মাসে শেষ করেছে সংস্কার কাজে নিয়োজিত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি।

সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার দিন শুক্রবার (০৩ জুলাই) পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের রাজশাহীর প্রধান প্রকৌশলী-পাকশি বিভাগীয় রেলওয়ে প্রকৌশলীসহ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এসময় পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে জোন রাজশাহীর প্রধান প্রকৌশলী, আল ফাত্তাহ মাসউদূর রহমান এর নেতৃত্বে পাকশি বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ আব্দুর রহিম,সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শিপন আলীসহ পাকশি রেলওয়ে দফতরের প্রকৌশলী বিভাগের সকল কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, গুরুত্বপূর্ণ রেলরুটের পাকশি রেল বিভাগের সিরাজগঞ্জ উল্লাপাড়ায় ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ২৬ নম্বর সেতুর গার্ডারে ফাটল ও লোহার পাতে মরিচা ধরায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল এই রুটের ট্রেন চলাচল। প্রতিদিনই সিরাজগঞ্জের  উল্লাপাড়া বঙ্কিরোট ২৬ এর ওপর দিয়ে ঢাকা-কলকাতা রুটের মৈত্রী এক্সপ্রেসসহ প্রায় ১৪টি আন্তনগর এক্সপ্রেস ট্রেন এবং তেল, কয়লা ও মালবাহী ছয়টি অন্য ২ জোড়া ট্রেন চলাচল করে।  

রেলওয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান রেলওয়ে ট্র্যাক কনস্ট্রাকশনের (আরটিসিএল) দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী আলমগীর কবির, বাংলানিউজকে বলেন, ৩ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে টেন্ডারের মাধ্যমে সেতু সংস্কারের দায়িত্ব পায় এপ্রিলের মাঝামাঝিতে। চলতি বছরে সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবার কথা ছিল। বর্ষায় পানি হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিন ১৮০ জন অতিরিক্ত লেবারকে দিয়ে সাড়ে তিনমাসে সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়।  

পাকশি বিভাগীয় রেলওয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী শিপন আলী অভিজ্ঞতার আলোকে বাংলানিউজকে বলেন, শতবছরের জরাজীর্ণ ও পুরোনা পিলারগুলো ভেঙে নতুন করে নির্মিত করা হয়েছে। সেতু ভেঙে ফেলার পর এই রুট দিয়ে ট্রেন চলাচলে যেন কোনো বিঘ্ন না ঘটে, তার জন্য সিসিক্লিপ দিয়ে রেল পাইলিং করে পাথর এর ওপর বালুর বস্তা ফেলে তার ওপর আবার ক্লিপ এবং পুনরায় বালুর বস্তা ফেলে বিকল্প আরেকটি রেলের লাইন প্রস্তুত করে সচল রাখা হয়েছিল, যেন এই রুটে ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন না ঘটে। ইতোপূর্বে এই রেলরুটে বৃহৎ প্রকল্পের কাজ আর হয়নি। আর বৃটিশ আমলে নির্মিত ব্রিজের ৯ ফিট নিচে কাজগুলো দেখেছি, এখনো অনেক ভালো অবস্থায় আছে।   

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে পাকশি বিভাগীয় রেলওয়ে দফতরের প্রকৌশলী-২ আব্দুর রহিম বাংলানিউজকে জানান, রেল সেতুটির  ১০টি স্প্যান, প্রতিটি ৪০ ফিট করে দৈর্ঘ্য প্রতি গার্ডারে ফাটল ও লোহার পাতে মরিচা ধরায় একদিকে যেমন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল এই রুটের ট্রেন চলাচল। তেমনি প্রতিটি ট্রেনই এসে দাঁড়িয়ে আসা যাওয়ার কারণে শিডিউল বিপর্যয় ঘটে ট্রেন যাত্রীদের বেশ ভোগান্তিও হচ্ছিল। এ জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে চাপ দিয়ে কাজটি ঠিকভাবে করানো হয়েছে। পাকশি বিভাগে আরও কিছু ঝুঁকিপূর্ণ রেলসেতু রয়েছে যেগুলো সংস্কারের দরকার।  

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের রাজশাহীর প্রধান প্রকৌশলী, আল ফাত্তাহ মাসউদূর রহমান মাসুদ বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ২২ জোড়া ট্রেন ঝুঁকি নিয়ে সেতুটির উপর দিয়ে চলাচল করতো। এখন আর কোনো ঝুঁকি নেই। ভ্রমণপ্রিয় ট্রেন যাত্রীদের কোনো ভোগান্তিও হবে না। ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটবে না।

গুরুত্বপূর্ণ এই রেলরুটে সেতু পুনঃনির্মাণের কারণে স্বাভাবিক গতিতেই এখন থেকে সব ট্রেন চলাচল করবে। এছাড়া যেসব সেতু ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে, তা পর্যায়ক্রমে সংস্কার করা হবে জানিয়েছেন ওই রেলওয়ে কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ০৩, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।