ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ওয়ারীতে চলছে লকডাউন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৬ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০২০
ওয়ারীতে চলছে লকডাউন লক-ডাউন এলাকা। ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: রাজধানীর ওয়ারী এলাকায় করোনা ভাইরাসে (কোভিড-১৯) সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে শনিবার (৪ জুলাই) থেকে ২১ দিনের জন্য লকডাউন বাস্তবায়ন করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)।

এদিন সকালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মো. এমদাদুল হক বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, সরকারি নির্দেশ মোতাবেক ওয়ারীর একবর্গ কিলোমিটার এলাকায় লকডাউন বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

লকডাউনে এই এলাকা থেকে কেউ বেরোতে বা প্রবেশ করতে পারবে না। এলাকাটির সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও অফিস কার্যালয় ২১ দিনের জন্য বন্ধ থাকবে। শুধু মাত্র ওষুধের ফার্মেসি/দোকান ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। এলাকার বসবাসকারী সবাইকে ঘরের ভেতরে থাকতে হবে। লকডাউনে থাকা এলাকার সব নাগরিকের প্রয়োজনীয় সবকিছু পৌঁছে দেওয়া হবে। নিরাপত্তা পরিস্থিতি নজরদারি ও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিরীর সদস্যরা নিয়োজিত থাকবে। লকডাউনের সার্রিক কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য ওয়ারী বলধা গার্ডেনে একটি কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে।

যদি কেউ লকডাউনের নিয়ম ভঙ্গ করে তবে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে ডিএসসিসি, স্বাস্থ্য অধিদফতর ও জনস্বাস্থ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানীর ওয়ারী এলাকার একবর্গ কিলোমিটার জায়গা লকডাউন বাস্তবায়ন করা হবে। এলাকাটিতে ১৭৩ জন করোনারোগী শনাক্ত হয়েছে। অধিক ঘনবসতি প্রবণ এলাকার মধ্যে ওয়ারি অন্যতম। জনমানুষের বসবাসের পাশাপাশি এখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস কার্যালয়সহ অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। রাজধানীর অন্যান্য এলাকায় করোনারোগী ওয়ারীর তুলনায় বেশি হলেও স্বাস্থ্য অধিদফতর, জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়, ঢাকা জেলা প্রশাসন, দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পরামর্শ ও নির্দেশনায় ওয়ারী এলাকাটি লকডাউনের আওতায় আনা হচ্ছে। করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্ব ও প্রয়োজন সাপেক্ষে রাজধানীর ঝুঁকিপূর্ণ অন্য সব এলাকাগুলোও লকডাউনের আওতায় পর্যায়ক্রমে আনা হবে। রোগীর নমুন সংগ্রহ ও তার করোনা পরীক্ষা করার জন্য সার্বিক ব্যবস্থা থাকবে। জরুরি প্রয়োজনীয় অ্যাম্বুলেন্স সুবিধাও রাখা হয়েছে।  

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রকাশিত প্রজ্ঞাপণ অনুযায়ী ডিএসসিসির ৪১ নম্বর ওয়ার্ড ওয়ারী এলাকা লকডাউনের আওতায় থাকবে- আউটার রোডগুলো হচ্ছে: টিপু সুলতান রোড, যোগীনগর রোড ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক (জয়কালী মন্দির থেকে বলধা গার্ডেন)। এদিকে ইনার রোডগুলো হচ্ছে: লারমিনি স্ট্রিট, হেয়ার স্ট্রিট, ওয়্যার স্ট্রিট, র‌্যাংকিং স্ট্রিট ও নবাব স্ট্রিট।

লকডাউনের জরুরি পরিবহন যাতায়াতের জন্য দুটি গেট খোলা থাকবে বাকি সব বন্ধ থাকবে। কেউ নিয়ম অমান্য করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) শাহ ইফতেখার আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ওয়ারী এলাকায় লকডাউন বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষ দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। পুলিশ সেখানে তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করবে। সাধারণত লকডাউন এলাকায় প্রবেশপথ এবং বর্হিপথগুলো যাতে নিরাপদ থাকে এ বিষয়ে আমরা তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে। লকডাউন চলাকালে ওই এলাকার মানুষ যাতে ঘরে থাকে, অপ্রয়োজনে বের না হয় সেটা নিশ্চিত পুলিশের টহন টিম, মোবাইল টিম ও পেট্রোল টিম কাজ করবে। এছাড়াও পুরো এলাকায় পুলিশের কুইক রেসপন্স টিমও কাজ করবে। ঢাকা জেলা প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশন ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সঙ্গে সমন্বয় করেই পুলিশ সদস্যরা কাজ করবেন। ’

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, লকডাউনে এই এলাকায় স্বেচ্ছাসেবী কর্মী এবং কাউন্সিলরের প্রতিনিধিরা থাকবেন, স্থানীয়দের সঙ্গে তাদের যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা তৈরি না হয়, সেটি আমাদের নজরদারিতে থাকবে। সেবাধর্মী কাজের মধ্যে যেমন কোনো রোগীকে সহযোগিতা করা, কেউ মারা গেলে মরদেহ ডিস্পোজাল বা দাফন করাসহ বিভিন্ন কাজে পুলিশ নিয়োগিত থাকবে বলেও যোগ করেন তিনি।

গত ৩০ জুন বিকেলে দক্ষিণ সিটির নগর ভবনে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ওয়ারী লকডাউনের ঘোষণা দিয়ে জানান, ৪ জুলাই ভোর ৬টা থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ওয়ারী এলাকা লকডাউন করা হবে। ২৫ জুলাই পর্যন্ত মোট ২১দিন লকডাউন কার্যকর থাকবে। এ সময়ে এখানে সার্বিকভাবে সবকিছুই বন্ধ থাকবে, শুধু ওষুধের দোকান খোলা থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫১ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০২০
এসজেএ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।