ঢাকা, রবিবার, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২, ১৩ জুলাই ২০২৫, ১৭ মহররম ১৪৪৭

জাতীয়

মরদেহের অপেক্ষায় স্বজনরা, মৃত্যু বেড়ে ৩২

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:৪৭, জুন ২৯, ২০২০
মরদেহের অপেক্ষায় স্বজনরা, মৃত্যু বেড়ে ৩২

মুন্সিগঞ্জ: রাজধানীর সদরঘাটে ‘ময়ূর-২’ ধাক্কায় শতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে গেছে ‘মর্নিং বার্ড’ লঞ্চ। ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় সর্বশেষ ৩২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেকে।

সোমবার (২৯ জুন) সন্ধ্যায় বাংলানিউজকে বিষয়টি জানান ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসাইন।

এ দুর্ঘটনায় নিখোঁজ হওয়া যাত্রীদের বেশিরভাগ মুন্সীগঞ্জের।

অনেক যাত্রী আছেন যাদের ঠিকানা কাঠপট্টি ঘাটের আশেপাশেই। এদের বেশিরভাগ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। খবর পেয়ে সকাল থেকে মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভার কাঠপট্টি ঘাটে স্বজনদের অপেক্ষা। ঘটনাস্থলে যাওয়ার জন্য দীর্ঘ চেষ্টা। কেউ খবর পেয়েছেন বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের মাধ্যমে আবার কেউ টেলিভিশনে। এখন শুধু মরদেহ কখন আসবে তার জন্য অপেক্ষা।  

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মা-মেয়ে বের হয়েছিলেন বাসা থেকে। মেয়ে ফিরতে পারলেও মা চলে গেলেন না ফেরার দেশে। ভাই-বোন দুইজনেরই মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ ও মরদেহ পাওয়া বাড়িগুলোতে এখন স্বজনদের আহাজারি। সকালে বাসা থেকে বের হয়ে এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না পরিবারের সদস্যরা। কান্নায় ভেঙে পড়া স্বজনরা স্তব্ধ। আশেপাশের প্রতিবেশিদের সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা। শোকাহত পরিবারগুলোতে শান্তনা দেওয়ারও ভাষা নেই। করোনা পরিস্থিতির কারণে আর্থিক অবস্থাও ভালো ছিল না। মরদেহের অপেক্ষায় দীর্ঘ অপেক্ষায় কান্নায় ভারী হচ্ছে আশপাশের পরিবেশ।  

>>>বুড়িগঙ্গায় লঞ্চ ডুবে মৃত্যু বেড়ে ৩০

পরিবারের স্বজনরা জানান, মুন্সিগঞ্জ মিরকাদিম পৌরসভার পশ্চিমপাড়া এলাকার চারজনের মরদেহ এসেছে। ঘটনাস্থল থেকে ট্রলার ও অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে আনা হয়ে নিজ বাড়িতে। মৃত আব্দুল মুজিদের ছেলে দিদার হোসেন (৪৫) ও তার ছোট বোন রুমা বেগম (৪০) অসুস্থ দুলাভাইকে দেখতে ঢাকা যাচ্ছিলেন তারা। লঞ্চ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তাদের। সাত মাস আগে তাদের বিয়ে হয়েছিল। ঢাকায় ব্যবসার মালামাল আনতে যাচ্ছিলেন শিপলু শরীফ (২৮)। পথিমধ্যে লঞ্চ দুর্ঘটনায় মারা যান। চিকিৎসার জন্য একই এলাকার মৃত পরশ মিয়ার স্ত্রী সুফিয়া বেগমের (৫৫) মৃত্যু হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে তার মেয়ে সুমা (৩০)। পাশের এলাকার তিল্লা পাড়ার সোহরাব মিয়ার ছেলে পাপ্পু (২৮)। তিনি একজন ফল বিক্রেতা। তিনিও লঞ্চ ডুবিতে মারা যান। এদের সবাই লাশ বাড়িতে ফিরেছেন।  

জানা যায়, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ৯ জনের মরদেহ মুন্সীগঞ্জে আনা হয়েছে।  

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দীপক কুমার রায় বাংলানিউজকে জানান, মুন্সিগঞ্জের কতজনের মৃত্যু হয়েছে সেই তালিকা করা হচ্ছে। ঢাকার প্রশাসন থেকে তাদের সহায়তা করছে। দাফনকাজে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল পরিবারকেও সহায়তা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৯ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।