ঢাকা, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পাবনায় চিকিৎসকের বাড়ি ও প্রতিষ্ঠান লকডাউন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৮ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০২০
পাবনায় চিকিৎসকের বাড়ি ও প্রতিষ্ঠান লকডাউন পাবনায় চিকিৎসকের বাড়ি ও প্রতিষ্ঠান লকডাউন। ছবি: বাংলানিউজ

পাবনা: পাবনা পৌর এলাকার হাসপাতাল সড়কের শালগাড়িয়া মহল্লার পিডিসি হাসপাতালের সত্বাধিকারী শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক ক্যাপ্টেন ডা. আনিসুর রহমানের বসত বাড়ি ও তার প্রতিষ্ঠান লকডাউন করেছে পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসন। 

বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) বিকালে এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশে ওই প্রতিষ্ঠান ও বাড়ি লকডাউন করা হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, তিন থেকে চার দিন আগে ক্লিনিক সূত্রে খবর ছড়িয়ে পড়ে, ডা. আনিসুর রহমান করোনা পজিটিভ হয়েছেন।

কিন্তু পজিটিভ রেজাল্ট আসার আগে এবং পরে তিনি নিজ বাড়িতে চেম্বারে নিয়মিত রোগী দেখেছেন।  

এই খবরের পরে স্থানীয়রা গতকাল দুপুরে ওই ক্লিনিক এবং চেম্বার বন্ধের জন্য বিক্ষোভ করে। পরে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশে উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভা তার বাড়ি ও প্রতিষ্ঠান লকডাউন করে লাল পতাকা টানিয়ে দিয়ে যায়।  

তবে সকালে ওই প্রতিষ্ঠানের সামনে অবস্থান নিলে দেখা যায়, গেটে থাকা কর্তব্যরত সিকিউরিট গার্ড বাড়ির মূল ফটক খুলে ভেতর থেকে মানুষ বাইরে বের করছেন আবার ভেতরে প্রবেশ করাচ্ছেন।

লকডাউন বিষয়ে গেট সিকিউরিটি বলেন, গতকাল বিকেল থেকে প্রতিষ্ঠান আর বাড়ি লকডাউন হয়েছে। আমার তখন ডিউটি ছিল না। সকালে এসে দায়িত্ব পালন করছি। বর্তমানে তিনজন রোগী ভর্তি আছেন। তারা সকালে চলে যাচ্ছেন নিজেদের বাড়িতে। আর রাতে ক্লিনিকে রোগীর সেবার দায়িত্বে যারা ছিলেন তারা সকালে চলে গেছেন।  

আগামী শনিবার (২৭ জুন) পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলে জানান তিনি।

ছবি: বাংলানিউজকরোনা পজিটিভ জানার পরেও চেম্বারে রোগীর ব্যবস্থাপত্র দেওয়ার বিষয়ে ডা. আনিসুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চলতি মাসের ২০ তারিখ (শনিবার) আমিসহ আমার স্ত্রী ও অফিস সহকারী তিনজনের করোনা পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার (২৩ জুন) রাতে সিভিল সার্জন ফোনে আমাকে জানান, তিনজনের মধ্যে আমার করোনা পজিটিভ এসেছে। আমার কোনো শারীরিক সমস্যা নেই। আমি এই পরীক্ষার আগ থেকে রোগী দেখা বন্ধ করেছি। যারা বলছে আমি করোনা নিয়ে রোগী দেখেছি তারা মিথ্যা বলছে। আমার প্রতিষ্ঠানের প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে ষড়যন্ত্র করছে। আমি ওই সংবাদ শোনার পর থেকে আর বাইরে বের হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদিনের বলেন, প্রশাসন এবং পৌরসভা যৌথভাবে ওই বাড়িতে গিয়ে লাল পতাকা টানিয়ে লকডাউন করেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নজরদারী করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পাবনা সিভিল সার্জন ডা. মেহেদী ইকবাল  জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি, তিনি করোনা পজিটিভ হয়েও রোগী দেখছেন। সিভিল সার্জন বলেন, বৃহস্পতিবার ওই বাড়ি ও প্রতিষ্ঠান লকডাউন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।  

করোনা পজিটিভ হয়েও ব্যবস্থাপত্র দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। তদন্ত চলছে। সত্য হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাবনায় গত ২৪ ঘন্টায় করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। স্বাস্থ্য বিভাগের হিসাবে মোট মৃত্যুবরণ করেছেন ৮ জন আর বেসরকারি হিসাবে উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে আরও ১২ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮ জন। জেলায় সর্বশেষ করোনা আক্রান্ত ৪১৫ জন।  

সবচেয়ে বেশি ২৪৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন পাবনা সদরে। আর পরের স্থানে সুজানগর উপজেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫২ জন। এ পর্যন্ত করোনা পরীক্ষা হয়েছে ৪১৮৮ জনের। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে এ পর্যন্ত ৩২ জন সুস্থ হয়েছেন। আক্রান্ত সবাইকে হোম আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। হাসপাতালে আইসোলেশনে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১২ জন। এ পর্যন্ত পাবনায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। জেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় গত ১৬ এপ্রিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৮ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০২০
ইউবি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।