ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ঢাবি ছাত্রী সুমাইয়া হত্যার মূল আসামি গ্রেফতার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৬ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২০
ঢাবি ছাত্রী সুমাইয়া হত্যার মূল আসামি গ্রেফতার

নাটোর: নাটোর শহরের হরিশপুর এলাকায় ঢাবির মেধাবী ছাত্রী সুমাইয়া খাতুনকে হত্যার ঘটনায় মূল আসামি সুমাইয়ার স্বামী মোস্তাক ও শ্বশুর জাকির হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা এ তথ্য জানান।

এর আগে বৃহস্পতিবার ভোরে জেলা পুলিশের বিশেষ অভিযানে নাটোরের সীমান্ত এলাকা বাঘা থেকে মোস্তাককে এবং শ্বশুর জাকির হোসেনকে বগুড়ার নন্দিগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ সুপার জানান, নিহতের মা বাদী হয়ে সোমবার (২২জুন) রাতে মামলা দায়ের করেন। পরে ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে পুলিশ নাটোর শহরের হরিশপুর এলাকার বাড়ি থেকে শাশুড়ি সৈয়দা মালেকা ও ননদ জাকিয়া ইয়াসমিন জুথিকে গ্রেফতার করে। তখন থেকে পলাতক ছিলেন সুমাইয়ার স্বামী মোস্তাক ও শ্বশুর জাকির হোসেন।  বৃহস্পতিবার ভোরে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশের আটটি ইউনিট কাজ করেন বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, শহরের বলাড়িপাড়া এলাকার প্রখ্যাত ইসলামি বক্তা মরহুম সিদ্দিকুর রহমান যশোরীর মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ছাত্রী সুমাইয়া মাস্টার্স পরীক্ষা সম্পন্ন করে বিসিএস পরীক্ষার প্রস্ততি নিচ্ছিলেন। সুমাইয়ার পড়াশোনা ও চাকরি নিয়ে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন নিয়মিত তাকে নির্যাতন করতেন।

সোমবার (২২ জুন) সকালে সুমাইয়া আত্মহত্যা করেছে দাবি করে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় তাকে নাটোর সদর হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যান তারা। পরে পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সোমবার (২২জুন) রাত ১টার দিকে হত্যা মামলা রেকর্ড করে অভিযান শুরু করে পুলিশ।

এদিকে গতকাল বুধবার (২৪ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির ফলাফল প্রকাশ হলে সিজিপিএ ৩.৪৪ পেয়ে প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন সুমাইয়া। কিন্তু এই ফলাফল পাওয়ার আগেই সুমাইয়াকে চলে যেতে হলো না ফেরার দেশে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নাটোর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আব্দুল মতিন বাংলানিউজকে জানান, অধিকতর তদন্তের জন্য সুমাইয়ার ভিসেরা নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

সুমাইয়ার মা নুজহাত বেগম বলেন, আমার মেয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেয়েছিল। আমি মেয়ে হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। আমার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ডাকসুর সাবেক এজিএস সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমরা শুরু থেকেই এ ঘটনাকে হত্যাকাণ্ড বলে এসেছি। মামলার আসামিদের গ্রেফতার করায় স্বস্তি প্রকাশ করছি। তবে আইনের ফাঁকফোকড় দিয়ে তারা যেন পার না পেয়ে যান সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সজাগ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি দেশে চলমান প্রতিটি নারী নির্যাতন ও এ সংক্রান্ত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্ত ও বিচারের জন্য পৃথক কমিশন গঠনের দাবি জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৫ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২০
এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।