ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বাড়ছে নদ-নদীর পানি, বেড়েছে মাছের ফাঁদ বিক্রিও

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৩ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২০
বাড়ছে নদ-নদীর পানি, বেড়েছে মাছের ফাঁদ বিক্রিও মাছ ধরার ফাঁদ। ছবি: বাংলানিউজ

মাদারীপুর: পদ্মা-আড়িয়াল খাঁ বেষ্টিত মাদারীপুরের নদ-নদীতে বাড়ছে পানি। নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে নদ-নদীর অববাহিকা, খাল-বিল ও চরাঞ্চলের জলাশয়গুলোতে বর্ষার নতুন পানি প্রবেশ করছে। পানি বৃদ্ধির এই মৌসুমে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মাছ ধরার ফাঁদ বিক্রিও।

নদী-খাল-বিলসহ বর্ষার পানি প্রবেশ করে এমন সব এলাকার লোকজন বর্ষার এই সময়টায় ব্যস্ত থাকে মাছ ধরা নিয়ে। আর মাছ ধরার অন্যতম এই ফাঁদ বিক্রিও বেড়ে যায় এ মৌসুমে।

মঙ্গলবার (২৩ জুন) সকালে শিবচরের উৎরাইল হাট ঘুরে দেখা গেছে মাছ ধরার ফাঁদ হিসেবে তৈরি দোয়াইর বিক্রি হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে। দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতারা এসে মাছ ধরার দোয়াইর, ঘুনি,চাঁই কিনছেন।

ক্রেতারা জানান, বাড়ির আশেপাশের জলাশয়ে বর্ষার নতুন পানি এসেছে। এসময় নদীর মাছও প্রবেশ করে খাল-বিলসহ জলাশয়ে। মাছ ধরার জন্য বাঁশের তৈরি এসব দোয়াইর, ঘুনি দিয়ে (মাছ ধরার ফাঁদ) সহজেই মাছ ধরা যায়। বছরের এই সময়টা মাছ ধরার এই ফাঁদ বেশি কেনা-বেচা হয়। এই মৌসুমে কেনা একেকটি বাঁশের মাছ ধরার ফাঁদ প্রায় এক বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়।

ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর থেকে আসা আব্দুর হাশেম মিয়া নামের সাধারণ এক ক্রেতা জানান, গত বছর বর্ষার সময় কিনেছিলাম। এক বছরে প্রায় ভেঙে গেছে। তাই আবার নতুন ফাঁদ কিনলাম। বাড়ির আশেপাশের জলাশয়ে পানি এসেছে। ফাঁদ পেতে রাখলে মাছ ধরা পড়েই।

মো. আক্কাস নামের এক জেলে বলেন, পেশায় মাছ শিকারি আমরা। নদী সংলগ্ন খালগুলোতে নতুন পানি এসেছে। খালের পাশ দিয়ে সারিবদ্ধ ভাবে ফাঁদ পেতে এ মৌসুমে মাছ ধরা হয়। তাই নতুন ফাঁদ কিনলাম।

মাছ ধরার ফাঁদ।  ছবি: বাংলানিউজবিক্রেতাদের সঙ্গে আলাপ করলে তারা জানান, বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই মাছ ধরার ফাঁদ বিক্রি বেশি হয়। বাঁশ দিয়ে তৈরি নানা ধরনের ফাঁদ তৈরি করে হাট-বাজারে বিক্রি করা হয়। মাছ ধরার ফাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় দোয়াইর। প্রতি পিচ দোয়াইর বর্তমানে ৫শ টাকা করে বিক্রি হয়।

বিক্রেতারা আরো জানান, বাঁশের দাম বাড়ায় মাছ ধরার ফাঁদের দামও বেড়েছে। গতবারে এই ফাঁদ ৪শ করে বিক্রি করা হয়েছে। এ বছর ৫শ এর নিচে বিক্রি করলে লাভ হয় না।

হাট ঘুরে দেখা গেছে, শিবচরের সাপ্তাহিক উৎরাইল হাটে ভোর থেকেই মাছ ধরার এসব ফাঁদ বিক্রি হতে থাকে। সকাল ১০টার মধ্যে বিক্রি শেষ হয়ে যায়। প্রতি হাটে শতাধিক মাছের ফাঁদ বিক্রি হয়। নদীর তীরবর্তী অঞ্চলসহ চরাঞ্চল ও বিল এলাকার মানুষ চাহিদা অনুযায়ী এসব ফাঁদ কিনছে। কেউ কেউ ১০/২০ টা করে মাছ ধরার দোয়াইর, ঘুনি কিনছে। ক্রেতাদের বেশির ভাগই পেশায় মাছ শিকারি। তবে শৌখিন মাছ শিকারিরাও বর্ষার সময় মাছ ধরার জন্য এই ফাঁদ কিনে থাকে।

জেলার পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদীতে বাড়তে শুরু করেছে পানি। চরাঞ্চল তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। সেসঙ্গে নিম্নাঞ্চল এলাকাতেও প্রবেশ করছে বর্ষার পানি। এসময় নদীর পাড়, চরাঞ্চলের ফসলের ক্ষেত, খালের মধ্যে বাঁশের তৈরি মাছ ধরার এসব ফাঁদ পেতে মাছ শিকার করতে দেখা যায়। পেশাদার মৎস্য শিকারিদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও তাদের দৈনন্দিন চাহিদা মেটানোর জন্য ফাঁদ পেতে মাছ ধরে থাকে। ফলে এই সময়টায় স্থানীয় হাট-বাজারগুলোতে মাছ ধরার ফাঁদ প্রচুর পরিমানে বিক্রি হয়। এই শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের কদরও বাড়ে এই মৌসুমে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২০
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।