ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

অনিয়মের প্রতিবাদ করায় গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৯ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২০
অনিয়মের প্রতিবাদ করায় গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা 

কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে রাস্তা তৈরিতে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় ১৩ গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করেছেন ঠিকাদার। 

শুক্রবার (১৯ জুন) দুপুরে এ মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন গ্রামবাসী।  

জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতাধীন (মথুরাপুর পশুহাট-হোসেনাবাদ স’মিল মোড়) মথুরাপুর জিসি থেকে জুনিয়াদহ জিসির ১ হাজার ৭৬২ মিটার (১.৭ কি.মি.) পাকা সড়ক সংস্কারের কাজ পান টিটু এন্টারপ্রাইজ নামক চুয়াডাঙ্গার এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

যার প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৬৯ লাখ ২৭ হাজার ২৭৬ টাকা। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গত বছরের ২৯ ডিসেম্বরে কাজ শুরু করে। আর কাজ শেষ করার কথা ছিল চলতি বছরের ১২ মার্চের মধ্যে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি। পরে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা এলাকার নাসির নামে এক ঠিকাদারের কাছে কাজ বিক্রি করে দেন প্রতিষ্ঠানটি। গত ১৫ জুন ওই সড়কে কার্পেটিং করার সময় নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করায় এলাকাবাসী প্রতিবাদ করে কাজ বন্ধ করে দেয়।
 
সড়ক নির্মাণ কাজের প্রাইম কোটের ৪৮ ঘণ্টা পর কার্পেটিং করার বিধান থাকলেও আগের দিন শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই সড়কে প্রাইম কোট করা হয়। এর পর বৃষ্টিতে প্রাইম কোট ধুয়ে গেলেও পরদিন নতুন করে প্রাইম কোট না করেই নিম্নমানের পাথর ও বিটুমিন ব্যবহার করে ওই সড়কের কার্পেটিং করা হয়।  

এছাড়া সিডিউল অনুযায়ী কার্পেটিংয়ে যে বিটুমিন ব্যবহারের কথা তার থেকে নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহার করা হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।  

এদিকে এলাকাবাসী ঘটনার প্রতিবাদের পাশাপাশি বিষয়টি এলজিইডির কুষ্টিয়াস্থ নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানান।  

পরে নির্বাহী প্রকৌশলীর নিদের্শে দৌলতপুর উপজেলা প্রকৌশলী ইফতেখার উদ্দিন জোয়ার্দার ১৬ জুন সরেজমিনে রাস্তার কাজ দেখতে যান। এ সময় তিনি কাজের মান নিম্নমানের হওয়ায় কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।  

এ ঘটনার পর ঠিকাদারদের লোকজন এলাকা ছেড়ে চলে যান। পরে ১৮ জুন বৃহস্পতিবার রাতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টিটু এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী ফিরোজ আহমেদ বাদী হয়ে ১৩ জন নিরীহ গ্রামবাসীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জনের বিরুদ্ধে দৌলতপুর থানায় চাঁদাবাজি ও মারপিটের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন।

এদিকে এলাকাবাসী মিথ্যা এ চাঁদাবাজির মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে শুক্রবার দুপুরে হোসেনাবাদ সড়কে মানববন্ধন করেছে।  

এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা প্রকৌশলী ইফতেখার উদ্দিন জোয়ার্দার জানান, গ্রামবাসীর অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি সরেজমিনে গিয়ে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।  

তিনি বলেন, রাস্তা নির্মাণে ব্যবহার করা উপকরণ সংগ্রহ করে তার মান যাচাইয়ের জন্য জেলা অফিসে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে ফলাফল পাওয়া গেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে ঠিকাদারের মামলা প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।

গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলার বিষয়ে দৌলতপুর থানার ওসি এস এম আরিফুর রহমান মামলার কথা স্বীকার করে বলেন, এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে, তবে কাউকে এখনো গ্রেফতার করা হয়নি।  
মামলার বাদী ফিরোজ আহমেদের ফোন নম্বরে বার বার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩৫ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।