জেলা প্রশাসকের বরাবর এ সংক্রান্ত চারটি অভিযোগপত্র কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে দাখিল করা হয়। অভিযুক্ত কাউন্সিলররা হলেন ২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এনামুল হক ছোটন, ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো.আবু ছায়েদ ও ৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হেলাল সরকার।
অভিযোগ পত্রে বলা হয়, এই তিন কাউন্সিলর কসবার পৌর এলাকার চারটি ওয়ার্ডে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ শুভেচ্ছার টাকার তালিকা প্রণয়নের ব্যাপক অনিয়ম করেছেন। এক্ষেত্রে তারা স্বজনপ্রীতি ও মুখ পরিচয়ের কারণে উচ্চবিত্তদের এই তালিকায় নাম দিয়েছেন। এছাড়া সরকারি বিভিন্ন ভাতাপ্রাপ্ত লোকজনদের নামও তালিকায় স্থান পায়।
মঙ্গলবার (১৬ জুন) এই চার ওয়ার্ডে গিয়ে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।
অভিযোগ পত্রে নাম থাকা ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো.আবু ছায়েদের ঘনিষ্ট গোলাম রহমানের বাড়ি গিয়ে তার সচ্ছলতার প্রমাণ পাওয়া যায়। অভিযোগ রয়েছে ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো.আবু ছায়েদের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তার নাম তালিকায় স্থান পেয়েছে।
গোলাম রহমানের বাড়িতে সরেজমিনে দেখা যায়, তার বাউন্ডারি করা পাকা বাড়ি। খুঁজ নিয়ে জানা যায়, তার পরিবার আর্থিকভাবে অনেক সচ্ছল এবং পারিবারিক ব্যবসাও রয়েছে।
এ বিষয়ে ৪ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো.আরমান বলেন, ৪ নং ওয়ার্ডে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ শুভেচ্ছার তালিকার নামের মধ্যে ২০ শতাংশ দরিদ্র ও অসহায়দের। বাকি ৮০ শতাংশ নাম গোলাম রহমানের সচ্ছল পরিবারের লোকজনদের।
এ ব্যাপারে ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো.আবু ছায়েদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব অভিযোগে স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ৪ নং ওয়ার্ডের তালিকায় ৫৫ জনের নাম রয়েছে। এর মধ্যে মেয়রের কোটা রয়েছে, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলের কোটা রয়েছে। আমি যাদের নাম দিয়েছি, তারা সবাই গরিব। বাকিদের নামের বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।
একইভাবে ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিল এনামুল হক ছোটন, ৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও রেজুলেশন ছাড়া ৯ নং ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা হেলাল সরকারেরও বিরুদ্ধেও একই ধরনের অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এই দুই ওয়ার্ডে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ শুভেচ্ছার টাকার তালিকায় অনেক সচ্ছলদের নাম স্থান পাওয়ার অভিযোগের সত্যতা সরেজমিনে ঘুরে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে কসবার পৌরসভার মেয়র এমরান উদ্দিন জুয়েল বলেন, যারা প্রাপ্য তারা পেয়েছেন। তবে এর মধ্যে যদি কারো বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ থেকে থাকে, তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে আমি কোনো অভিযোগ পায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন বলেন, এ সংক্রান্ত অভিযোগ আমরা পেয়েছি। অভিযোগগুলো আমরা তদন্ত করছি। সত্যতার প্রমাণ পেলে আমরা এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০২০
ওএফবি