যাত্রীরা বলছেন, করোনা মহামারির সময়েও পাল্লা দিয়ে বাস চালানো ও যাত্রী তোলার প্রতিযোগিতা তাদের হতবাক করছে। কোনো ‘সুস্থ মস্তিষ্কের’ চালক পাল্লা দিয়ে বাস চালাতে পারেন না।
চালক ও সহকারীরা বলছেন, ট্রিপের ওপর নির্ভর করে তাদের দৈনিক মজুরি। এজন্য ওভারটেক করে যাত্রী তোলা ও প্রতিযোগিতা করে বাস চালাতে হয়। যদি তাদের মাসিক হারে নির্দিষ্ট বেতন দেওয়া হতো, তাহলে পাল্লা দিয়ে বাস চালাতে হতো না।
বুধবার (১৭ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায়, ফের এলোমেলো ও পাল্লা দিয়ে বাস চলছে সড়কে। একটি বাস এসে যাত্রী তোলার জন্য দাঁড়ালে পেছন থেকে আরেকটি বাস এসে বাঁকা করে সামনে দাঁড়িয়ে যায়। এছাড়া যাত্রী তুলে ছাড়ার সময় ঘেঁষে ঘেঁষে বাস চালান গণপরিবহনের চালকরা।
বুধবার দুপুর ১২টা; রাজধানীর রামপুরা ব্রিজে ডেমরাগামী আলিফ পরিবহন। যাত্রী তোলার জন্য ডাকছেন হেলপার। পেছন থেকে এসেই বাসটির সামনে বাঁকাভাবে দাঁড়ায় আসমানী পরিবহন। একটু পরই বাস দুটি পরস্পর ঘেঁষে চালাতে থাকেন চালকরা।
শুধু আলিফ কিংবা আসমানী পরিবহন নয়, রাজধানীর সবগুলো গণপরিবহনেরই চালানোর দৃশ্য এক। এভাবে ওভারটেক ও যাত্রী তুলতে প্রতিযোগিতা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার।
রাজধানীর নতুন বাজারে দেখা যায়, বিশৃঙ্খলভাবে ধাক্কাধাক্কি করে যাত্রী তুলছে তুরাগ, আকাশ, আকিকসহ বিভিন্ন গণপরিবহন।
গণপরিবহনের নিয়মিত যাত্রী আহমেদ ফেরদৌস বাংলানিউজকে বলেন, করোনাও এদের স্বভাব পরিবর্তন করতে পারেনি। আর কী আশা করবেন, গণপরিবহন চালক-সহকারীর কাছ থেকে। তারা করোনা মহামারি সময়েও পাল্লা দিয়ে বাস চালান।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও গণপরিবহনের নিয়মিত যাত্রী ডিএস নেহা বাংলানিউজকে বলেন, করোনা অনেক ক্ষেত্রে পরিবর্তন এনেছে। কিন্তু আমাদের গণপরিবহন ‘চালকদের স্বভাব’ পরিবর্তন করতে পারেনি।
গ্লোরিয়াস পরিবহনের সহকারী মাহমুদ রিপন বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের নির্ধারিত কোনো বেতন নেই। ট্রিপভিত্তিক মজুরি। এজন্যই সবাই তাড়াহুড়ো করেন।
ভিআইপি পরিবহনের চালক জুয়েল মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, আমি চাইলেও পাল্লা না দিয়ে চালাতে পারব না। আমি ভদ্রভাবে চালালেও অপর বাস এসে ধাক্কা দেবেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২০
টিএম/টিএ