সোমবার (১৫ জুন) জাতীয় সংসদের চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে জাপা চেয়ারম্যান এ দাবি করেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় জিএম কাদের চলতি অর্থবছরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দের অর্থ পুরোটা খরচ করতে না পারার কঠোর সমালোচনা করেন।
জিএম কাদের নিজের নির্বাচনী এলাকা লালমনিরহাটের হাসপাতালের চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘সেখানে হাসপাতালে ৩৯টি চিকিৎসক পদের মধ্যে ১১ জন কর্মরত। ৫৪ জন কর্মচারীর মধ্যে কর্মরত ৩৭ জন। এখানে প্রয়োজনীয় ২২ জন পরিচ্ছন্নকর্মীর মধ্যে ৪টি পদ আছে। হাসপাতালে ২২ জন ওয়ার্ডবয় ও সমান সংখ্যক আয়ার দরকার হলেও কোনো পদ নেই। নিরাপত্তা প্রাহরীর পদ নেই। হাসপাতাল থেকে বিভিন্ন সময় মন্ত্রণালয়কে এটা জানালে কোনো সুরাহা হয়নি। হাসপাতালের যন্ত্রপাতির করুন চিত্রও তিনি তুলে ধরেন। ’
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাজেটে বরাদ্দ হ্রাস করাকে মিতব্যয়িতা বলার চেষ্টা হলেও প্রয়োজনীয় খরচ না করা হলে তা নেতিবাচক। আর এটা হয় সক্ষমতার অভাবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না। কর্তব্য পালনে আন্তরিকতার অভাব, দুর্নীতি ও দলাদলিতে ব্যস্ত থাকার কারণে এটা হয়। আর খরচ কম হচ্ছে মানে দুর্নীতির মাধ্যমে অপচয় হচ্ছে না সেটা নয়। খরচ যেটা হচ্ছে তার মধ্যেও অপচয়ের খবর আমরা শুনতে পাই। ’
জিএম কাদের বলেন, ‘বর্তমানে কোভিড-১৯ এর কারণে সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি সবার উদ্বেগের বিষয়। বাংলাদেশের যেকোনো মানুষকে এখন জিজ্ঞাসা করলে তারা এক কথায় বলবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে গুরুত্ব দেওয়ার কথা। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি সম্পূরক বাজেটে তাদের কোনো সংশোধনী বাজেট নেই। তাদের সম্পূরক বাজেট দাবি করতে হয়নি। বাস্তবতা হলো তাদের বাজেট বরাদ্দের চেয়ে খরচ হয়েছে কম। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২৫ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা তাদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তারা খরচ করতে পেয়েছে ২৩ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা। ২ হাজার ৪১ কোটি টাকা তাদের খরচ কমানো হয়েছে। ’
তিনি বলেন, ‘মানুষ স্বাভাবিকভাবে ধারণা করেছিল এবার স্বাস্থ্যখাতে বিরাট বাজেট দেওয়া হবে। কিন্তু দেখা গেল সেখানে বরাদ্দ হয়েছে ২৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের তুলনায় ৩ হাজার কোটি টাকার মতো বেশি। আমরা এটা বুঝি যারা বাজেট প্রণয়ন করেছেন তারা দেখেছেন খরচ করতে পারে না তাহলে বাজেট বাড়িয়ে লাভ কী হবে? আমার মনে হয় অর্থমন্ত্রীও এটা মনে করছেন। যার কারণে থোক বরাদ্দ (১০ হাজার কোটি টাকা) দিয়ে এটা রেখে দেওয়ার চিন্তা করেছেন। করোনার কারণে এটা কাজে লাগানোর চিন্তা করছেন। চলতি অর্থবছরে স্বাস্থ্যখাতে ১০ হাজার কোটি টাকার মতো উন্নয়ন ব্যয় ছিল, তারা খরচ করেছিল ৭ হাজার ৭০০ কোটি টাকার মতো। ২ হাজার ৪১ কোটি টাকা তারা খরচ করতে পারেনি। এর অর্থ হাসপাতালগুলোতে যথাযথ সুযোগসুবিধা দেওয়া হয়নি। স্বাস্থ্যখাতেব বরাদ্দের চিত্র দেখলে মনে হয় উন্নয়নের দরকার ছিল কী না তা তাদের সন্দেহ ছিল। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৪১১ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২০
এসকে/আরবি/