ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

যৌতুকের দাবিতে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে গৃহবধূ নির্যাতন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১২ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২০
যৌতুকের দাবিতে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে গৃহবধূ নির্যাতন

টাঙ্গাইল: যৌতুকের দাবিতে টাঙ্গাইলে এক গৃহবধূকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেছে স্বামী ও শ্বশুড়বাড়ির লোকজন। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর মা বাদী হয়ে রোববার (১৪ জুন) টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তবে আসামিরা সবাই পলাতক রয়েছেন। 

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সিলিমপুর ইউনিয়নের পাকুল্লা গ্রামে গত ১২ জুন (শুক্রবার) ওই গৃহবধূকে নির্যাতনে ঘটনা ঘটে।  

স্থানীয়রা জানান, ১৪ বছর আগে খারজানা এলাকার মৃত বিশা মিয়ার ছেলে আশরাফ মিয়ার সঙ্গে ওই নারীর বিয়ে হয়।

বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই স্ত্রীর বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক এনে দেওয়ার কথা বলে প্রায়ই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন পাষণ্ড স্বামী আশরাফ। সবশেষ গত শুক্রবার আশরাফ তার স্ত্রীকে বাবার বাড়ি থেকে ২ লাখ টাকা যৌতুক এনে দিতে বলেন। কিন্তু টাকা এনে দিতে অস্বীকার করায় আশরাফ ও তার বড় ভাইসহ পরিবারের আরও কয়েকজন গৃহবধূকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন চালায়। পরে স্থানীয়রা সিলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাদেক আলীকে বিষয়টি জানায়। পরে চেয়ারম্যান স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর মা বাদী হয়ে রোববার টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ বাংলানিউজকে জানান, প্রায়ই যৌতুকের টাকার জন্য তাকে চাপ প্রয়োগ করেন স্বামী আশরাফ। বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে অস্বীকার করায় তাকে মারধরের হুমকি দেন। পরে শুক্রবার তাকে লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকেন। পেটানোর এক পর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। পরে বাঁশের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে লাঠি দিয়ে তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা তাকে বেধরক মারধর করেন।
ওই গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান, টাকার জন্য ওই গৃহবধূকে তার স্বামী আশরাফ তালাক দিয়েছিলেন। তালাকের পর কাবিনের টাকা দিতে না পাড়ায় বাধ্য হয়ে পুনরায় ওই নারীকেই বিয়ে করেন।
সিলিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান সাদেক আলী বাংলানিউজকে জানান, খবর পেয়ে বিষয়টি তিনি তাৎক্ষণিক পুলিশকে জানান। এর আগেও ওই গৃহবধূকে তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন একাধিকবার নির্যাতন করেছেন বলেও জানান তিনি।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ওই গৃহবধূর শরীরে বিভিন্ন আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হাসপাতালে ভর্তির পর তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

টাঙ্গাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে খুঁটিতে বেঁধে মারধর করার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিরা পলাতক রয়েছেন। তবে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২০
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad