ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দাম পেয়ে খুশি হলেও রপ্তানি বন্ধ থাকায় বিপাকে মরিচ চাষিরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৯ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০২০
দাম পেয়ে খুশি হলেও রপ্তানি বন্ধ থাকায় বিপাকে মরিচ চাষিরা

মানিকগঞ্জ: কৃষিজাত পণ্য উৎপাদনে খ্যাত জেলা মানিকগঞ্জ।এ জেলাতে প্রচুর কৃষিপণ্য উৎপাদন হয়ে থাকে। জেলা ও দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা হয় সেসব পণ্য।চলতি এ মৌসুমে জেলায় মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে।

দেশের বিভিন্ন জেলায় মানিকগঞ্জের মরিচের সুনাম রয়েছে। এছাড়াও প্রতি বছর এ সময় মধ্যপ্রাচ্য, মালেশিয়া, দুবাই, সিঙ্গাপুর, হংকং, ভিয়েতনামসহ ত্রিশটি দেশে মানিকগঞ্জের মরিচ রপ্তানি হয়ে থাকে।

তবে এ বছর করোনা ভাইরাসের কারণে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। আকাশ পথে যোগাযোগ প্রায় বন্ধ থাকায় শুধুমাত্র একটি দেশে মরিচ রপ্তানি হচ্ছে এ বছর।

সরেজমিনে দেখা যায়, মরিচের পাইকারি বাজার খ্যাত বরংঙ্গাইল থেকে শত শত টন মরিচ দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রাকে করে যায়। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্বের প্রায় ৩০টি দেশে এই মরিচ রপ্তানি হয়ে থাকে। তবে এ বছর মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে শুধুমাত্র কুয়েতে রপ্তানি হচ্ছে এ জেলার মরিচ। প্লেনে যাত্রী কম থাকায় মরিচ কুয়েতে পাঠাতে ঝামেলাও পোহাতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বরংঙ্গাইল মরিচের হাটে বেচা-কেনার ধুম পড়ে আর বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মরিচ প্যাকেট করে দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রাকে করে পাঠানো হয়।  

পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি মরিচ প্রকার ভেদে ১২ থেকে ১৫ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে। এ দাম পেয়ে স্থানীয় চাষিরা খুশি। মরিচের দাম এমন থাকলে চাষিরা লাভের মূখ দেখবেন বলেও জানা যায়।

ট্রাকে লোড করা হচ্ছে মরিচ।  ছবি: বাংলানিউজমহাদেবপুর এলাকার মরিচ চাষি আরিফ বাংলানিউজকে বলেন, প্রতি বছরের মতো এ বছরও কয়েক বিঘা জমিতে মরিচের আবাদ করেছি ফলনও ভালো হয়েছে। এক বিঘা মরিচ আবাদ করতে জমি তৈরি থেকে ক্ষেত থেকে তোলা পর্যন্ত বিশ থেকে পঁচিশ হাজার টাকা ব্যয় হয়। বাজারে বর্তমানে মরিচের যে দাম আছে, এ দাম থাকলে প্রতি বিঘায় প্রায় ত্রিশ থেকে চল্লিশ হাজার টাকা লাভ হবে।  

কপিল নামের আরো এক চাষি বলেন, মরিচের ফলন ভালো হয়েছে তবে করোনার জন্য মরিচ ক্ষেত থেকে তুলতে সাহস পাচ্ছি না। আমাদের এই অঞ্চলের মরিচের সুনাম বিশ্বজোড়া। এ বছর অল্প কিছু মরিচ কুয়েতে যাচ্ছে সাত দিনে এক দিন, বিদেশে মরিচ রপ্তানি হলে মরিচের দাম বেশি পাওয়া যায়।

বরংঙ্গাইলে মেসার্স তাজ বাণিজ্যালয়ের মহাজন মুহাম্মদ তাজ উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, প্রতি বছর এ সময় প্রায় বিশটির মতো দেশে রপ্তানির জন্য মরিচ কিনে ঢাকার বড় বড় ব্যবসায়ীদের দেই। এ বছর করোনার জন্য বিদেশে মরিচ রপ্তানি বন্ধ তবে সাত দিনে এক দিন কিছু সংখ্যক মরিচ কুয়েতে পাঠানোর জন্য কিনে পাঠাচ্ছি। বর্তমানে আমাদের এ অঞ্চলের মরিচ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

বরংঙ্গাইল আড়ৎ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমান মোল্লা বাংলানিউজকে বলেন, করোনার কারণে মরিচ অাড়তে কম আসছে যে তাই দামও তুলনামূলকভাবে একটু বেশি। প্রতি বছর এই সময় আড়তে মরিচ চাষিদের ভিড়ে হাঁটাচলা মুশকিল হতো। আর এবার করোনার কারণে আড়তে কম সংখ্যক চাষি আসছে। তবুও প্রতিদিন প্রায় ২০ টন মরিচ বেচাকেনা হয় এই আড়তে। বহির বিশ্বের সঙ্গে প্লেনে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় বিদেশে মরিচ রপ্তানি বন্ধ, যাও দুই একটি দেশের সঙ্গে প্লেন চলাচল স্বাভাবিক অাছে সেখানেও যাত্রী না থাকায় প্লেন ছেড়ে যাচ্ছে না। সে কারণে বিদেশে মানিকগঞ্জের মরিচ রপ্তানিও বন্ধ রয়েছে বলে জানান এই আড়ৎ মালিক সমিতির নেতা।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৬ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।