ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পাবনায় মুক্তিযোদ্ধা আনিসুরকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৮ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২০
পাবনায় মুক্তিযোদ্ধা আনিসুরকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন

পাবনা: পাবনার সুজানগর উপজেলার কৃতিসন্তান যোদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আনিসুর রহমান সাঈদকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। 

শুক্রবার (১২ জুন) বাদ আছর তার নিজ গ্রামের বাড়ির উলাট মাদ্রাসা মাঠে গার্ড অব অনার প্রদানের পরে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। পরে স্থানীয় কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

এর আগে সকালে রাজধানী ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৬৫ বছর। তিনি স্ত্রী, সন্তানসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।

মুক্তিযোদ্ধা আনিসুর রহমান সাঈদের বাড়ি পাবনা সুজানগর উপজেলা মানিকহাট ইউনিয়নের উলাট গ্রামে।

চিকিৎসক ডা. এম. এস. এ সবুর জানান, আনিসুর রহমান রক্তনালীর বিরল রোগে ভুগছিলেন। তার সুস্থতার জন্য সার্জারির মাধ্যমে গত ১১ মে রাজধানীর শ্যামলী স্পেশালাইজড হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে তার ২টি পা কেটে ফেলা হয়। তবুও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। তিনি এ্যাজমা, ডায়াবেটিসসহ, বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিলেন।

সহযোদ্ধা পাবনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন সন্টু বলেন, মুক্তিযোদ্ধা আনিসুর রহমান সাঈদ ভাই খুব সাহসী যোদ্ধা ছিলেন। তার সাহসিকতায় কয়েকটি স্থানে যুদ্ধের সময় অভিযান পরিচালনা করা হয়। সাতবাড়ীয়া মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্প আক্রমণ করতে আসা পাকিস্তানি সেনাদের ওপর আক্রমণ চালানোর অন্যতম নায়ক ছিলেন সাঈদ ভাই। সেদিন শত্রুরা পরাজিত হয়েছিলো। ১১ই ডিসেম্বর সুজানগর থানা শক্রমুক্ত করতে গিয়ে চোখের কোনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে দুটি চোখ হারান তিনি।  

পাবনা জেলা প্রশাসক কবীর মাহামুদ জানান, জাতির এই বীর সন্তানের মৃত্যু সংবাদ আমি সকালেই পেয়েছি। সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার দাফন কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

মুক্তিযোদ্ধা আনিসুর রহমান সাঈদ ১৯৭১ সালের ১১ই ডিসেম্বর পাবনার সুজানগর থানা শক্রমুক্ত করতে গিয়ে চোখের কোনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ২ চোখের দৃষ্টিশক্তি হারান। তিনি ৭ নম্বর সেক্টরের অধীনে যুদ্ধে অংশ নেন।  তিনি  প্রথম শ্রেণির ভাতাপ্রাপ্ত একজন যোদ্ধাহত অন্ধ মুক্তিযোদ্ধা। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঢাকা কলেজ গেট সংলগ্ন মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ারে জে-৬ একটি ফ্লাট বরাদ্ধ পেয়েছেন তিনি।  

আনিসুর রহমান সাঈদ সুজানগর সাতবাড়ীয়া কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র থাকাবস্থায় ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে ভারতের কেচুয়াডাঙ্গা ইউথ ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। বেলতলিতে ট্রেনিং শেষে দেশে ফিরে নিজ এলাকায় অন্যদের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে অংগ্রহণ করেন। মুক্তিযোদ্ধা আনিসুর রহমান সাঈদ এফ. এফ. গ্রুপের সদস্য ছিলেন। তার ব্যাচ নং এফ. এফ. নং- ভারতীয় ৩৫৮৭৯, চাকুলিয়া নং-৫১১৮।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।