ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

খাদ্যের খোঁজে দল বেঁধে ঘুরছে হনুমান, কামড়ালো ১২ জনকে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৪ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০২০
খাদ্যের খোঁজে দল বেঁধে ঘুরছে হনুমান, কামড়ালো ১২ জনকে

যশোর: যশোর শহরে খাদ্যের খোঁজে দল বেঁধে ঘুরছে হনুমান। ক্ষুধার তাড়নায় হানা দিচ্ছে পথচারী ও মানুষের বসত বাড়িতে। তাড়া করলে হনুমানের দল কামড় দেওয়ার মাধ্যমে আহত করছে মানুষকে। গত ৩ দিনে শহরে পুলিশ সদস্যসহ মোট ১২ জন হনুমানের কামড়ে আহত হয়েছেন। যার মধ্যে দু’জন যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল চিকিৎসাধীন। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শহরের ধর্মতলা এলাকার শিমুল হোসন (৩৭) ও আপন (২৭) বৃহস্পতিবার (০৪ জুন) শহর থেকে হেঁটে কালেক্টরেট পার্কের সামনে দিয়ে বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে কালেক্টরেট পার্কের সামনে পৌঁছালে হনুমান তাদের পায়ে ও পিঠে কামড় দিয়ে জখম করে।

পরে তাদের হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।

এর আগে হনুমানের কামড়ে আহত হয়ে বুধবার (০৩ জুন) হাসপাতালে ভর্তি হন শহরের কারবালা এলাকার সিরাজুল ইসলাম (৫০) ও ঘোপ সেন্ট্রাল রোড এলাকার মনিরুল ইসলাম (৬২)। তারা বকুলতলা এলাকার রাস্তা পার হওয়ার সময় হনুমান হঠাৎ তাদের কামড় দেয়। পরে স্থানীয় লোকজন হাসপাতালে ভর্তি করালে চিকিৎসা নিয়ে রাতে তারা বাড়িতে চলে যান।

এছাড়া হনুমান কামড়ানোর পর জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন, শহরের পুরাতন কসবা পুলিশ ফাঁড়ির কনস্টেবল মোজাম্মেল হোসেন (৫২) ও ঝাড়ুদার বিপ্লব দাস (৩০), শহরের ঘোপ এলাকার সৈকত হোসেন (১৮), মনিরুজ্জামান (৭৪), আব্দুল কাদির (১২) এবং আকবর হোসেন (৪৫), বশির আহম্মেদ (৫০) ও হাসমত আলী (৪৫)।

আহত শিমুল জানান, দুপুরে পায়ে হেঁটে বাড়িতে ফেরার পথে কালেক্টরেট পার্কের সামনে একটি হনুমান এদিক ওদিক লাফিয়ে ঘুরছিল। এর এক পর্যায়ে হঠাৎ তার উপর হামলে পড়ে। পরে স্থানীয় লোকজনের তাড়া দেওয়ার কারণে হনুমানটি পালিয়ে যায়।

কালোমুখো হনুমান।  ছবি: বাংলানিউজ

জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আব্দুর রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, বৃহস্পতিবার দুই জনসহ তিনদিনে ১২ জনকে হনুমান কামড় দিয়েছে। এর মধ্যে ক্ষত বেশি হওয়ার কারণে দুইজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সকলকে ভ্যাকসিন টিকা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বনবিভাগের যশোর রেঞ্জ অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া বাংলানিউজকে বলেন, কয়েকটি হনুমান ক্ষুধার্ত। তারা খাদ্য না পেয়েও কামড় দিতে পারে। হনুমানগুলো খাবারের সন্ধানে এখানে সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেগুলো কামড় দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে।

বনবিভাগের যশোর অঞ্চলের বনসংরক্ষক মোল্যা রেজাউল করিম বাংলানিউজকে বলেন, এ বিষয়ে আমার আগে জানা ছিল না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। মানুষের ভোগান্তি লাঘবের জন্য হনুমানের খাদ্যের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, যশোরের কেশবপুরে যুগ যুগ ধরে বিরল প্রজাতির কালোমুখো হনুমানের বসবাস। সেখানে সরকারিভাবে হনুমানের খাদ্যের বরাদ্দ রয়েছে। তবে, সরকারি অব্যবস্থাপনা ও খাদ্যের ঠিকাদারের দুর্নীতির কারণে খাদ্য ঘাটতি রয়ে গেছে। এজন্য খাদ্যের অভাবে কেশবপুর ছেড়ে পাশ্ববর্তী জেলা-উপজেলায় দলছুট হয়ে চলে যাচ্ছে বিরল প্রজাতির এ প্রাণী।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৪ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০২০
ইউজি/এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।