রিমি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার হালসা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে। সে উপজেলার আমবাড়িয়া ইউনিয়নের নগরবাঁকা এলাকার আলাউদ্দিন খন্দকারের মেয়ে।
সরকারি রেলের জমিতে ডেকোরেটরের ব্যবসা ছিলো আলাউদ্দিনের। পরে উচ্ছেদ অভিযানে ভেঙে যায় ব্যবসা। নিজের জমিজমা না থাকায় বর্গা চাষ করে বর্তমানে জীবিকা নির্বাহ করছেন আলাউদ্দিন।
তিন মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়েই সংসার তার। তিন মেয়েই মেধাবী হওয়ায় এই গরিব বাবা তাদের পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছেন খুব কষ্টে। বড় মেয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের মাস্টাস এর শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী, মেঝো মেয়ে সরকারি ম্যাটসের শিক্ষার্থী। ছোট মেয়ে রিমি খাতুন এবার এসএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে উর্ত্তীণ হয়েছে।
রিমি বলে, আমার এ সাফল্যের পেছনে বাবা-মা, পরিবার ও শিক্ষকদের অবদান সবচাইতে বেশি। আমি মন দিয়ে লেখাপড়া করে ডাক্তার হতে চাই। মানুষের সেবা করতে চাই।
রিমির মা আরশিদা খাতুন বলেন, তিন মেয়েকেই উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে চাই। তারা মানুষের মতো মানুষ হবে এটাই আমার কাম্য।
রিমির বাবা আলাউদ্দিন খন্দকার বলেন, আমি চাই মেয়েকে ভালো কলেজে ভর্তি করাতে। তবে লেখাপড়া করাতে অনেক খরচ। এমনিতেই দুই মেয়ের খরচ দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় আমাকে। এবার ছোট মেয়েও ভালো রেজাল্ট করেছে। চিন্তা আরও বেড়ে গেলো। এদিকে মেয়ের ইচ্ছা ডাক্তার হওয়ার।
তিনি বলেন, কিভাবে ভালো কলেজে ভর্তি করবো, অর্থের অভাবে রয়েছি। একলা কাজ করে আর পেরে উঠছি না।
হালসা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম বলেন, রিমি আমাদের স্কুলের গর্ব। সে অসম্ভব মেধাবী একজন শিক্ষার্থী। তার বাবা একজন ভূমিহীন কৃষক। রিমি মেধাবী ও গরিব হওয়ায় শিক্ষা উপবৃত্তিসহ স্কুল থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হয়েছে তাকে। তাকে স্কুলের সব ফি মওকুফ করে বিনা বেতনে অধ্যয়ন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিলো।
তিনি বলেন, তার মধ্যে একটা অন্যরকম প্রতিভা রয়েছে। সে বড় হয়ে ডাক্তার হতে চায়। সেভাবেই তাকে আমরা তৈরি করার চেষ্টা করেছি। তবে আর্থিক সংকটের কারণে পরিবার তার লেখাপড়া চালাতে পারবে কিনা সন্দেহ রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২০ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০২০
আরএ