ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

লিবিয়ায় হত্যার ঘটনায় গোপালগঞ্জে ৩ পাচারকারীর বিরুদ্ধে মামলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৬ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২০
লিবিয়ায় হত্যার ঘটনায় গোপালগঞ্জে ৩ পাচারকারীর বিরুদ্ধে মামলা

গোপালগঞ্জ: লিবিবায় গুলি করে গোপালগঞ্জের সুজন নামে এক যুবককে হত্যা ও অপর এক যুবককে আহত করার ঘটনায় মুকসুদপুর থানায় তিন মানব পাচারকারীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

সোমবার দুপুরে (১ জুন) লিবিয়ায় নিহত সুজন মৃধার বাবা কাবুল মৃধা বাদী হয়ে মুকসুদপুর থানায় এ মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-১)।

মামলার আসামিরা হলেন-মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার সুন্দরদী গ্রামের ওসমান শেখের ছেলে লিয়াকত শেখ ওরফে লেকু শেখ (৪৫), একই উপজেলার যাত্রাবাড়ী গ্রামের মৃত রজব আলী মোড়লের ছেলে রব মোড়ল (৪৫) ও মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার সত্যবর্তী গ্রামের আব্দুল মজিদ সরদারের ছেলে জুলহাস সরদার।

মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ১ জানুয়ারি বাদীর ছেলে সুজন মৃধা ও ভাগিনা ফরিদপুর জেলার সালথা থানার আলমপুর গ্রামের কবির শেখের ছেলে কামরুল শেখকে ৮ লাখ টাকা ও কালাম শেখের ছেলে ওমর শেখকে চার লাখ টাকার বিনিময়ে লিবিয়া পাঠানোর পর ভাল বেতনে চাকরি দেওয়ার জন্য মৌখিক চুক্তি হয়। এরপর ১৫ জানুয়ারি তিনি ২ লাখ ৫০ হাজার ও কালাম শেখ ৫০ হাজার টাকা দালাল রব মোড়কে দেন। পরে রব মোড়ল অন্য দুই আসামির কাছে টাকা পৌঁছে দেন।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি আসামিরা বাড়িতে এসে লিবিয়া পাঠানোরে উদ্দেশে সুজন মৃধা, কামরুল শেখ ও ওমর শেখকে বাড়ি থেকে ঢাকায় নিয়ে যান। এরপর ভারত থেকে দুবাই, কুয়েত ও মিশর হয়ে লিবিয়া পাঠায়।

পরবর্তীকালে ১১ ফেব্রুয়ারি আসামিদের ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। লিবিয়া যাওয়ার এক মাস পর চুক্তি ভেঙে লিবিয়ার বেনগাজীর মিজদাহ শহরে নিয়ে আটক করে অন্যান্য আসামিদের সহায়তায় মুক্তিপণের দাবিতে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করে। পরে দালাল চক্রটি সুজন মৃধা, কামরুল শেখ ও ওমর শেখের কাছে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে নির্যাতন করার ভয়েস মেসেজ নিজ নিজ পরিবারের সদস্যদের কাছে পাঠায়।

পরে মেসেজ পেয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের বিষয়টি তিন দালালকে জানালে তারা দাবিকৃত টাকা না দিলে কিছুই করতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয়। এরপর ২৮ মে সুজন মৃধা ও কামরুল শেখকে গুলি করে হত্যা করে ও ওমর শেখ গুলিবিদ্ধ হন।

আহত ওমর শেখের বাবা মো. কালাম শেখ ও মা শাহিদা বেগম তার আহত ছেলেকে ফেরত চেয়েছেন। একইসঙ্গে তারা মানব পাচারকারী দালাল চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করে ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন।  

এ ব্যাপারে মুকসুদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মৃধা আবুল কালাম আজাদ জানান, দুই যুবককে গুলি করে হত্যা ও অপর এক যুবককে গুলি করে আহত করার ঘটনায় তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলা দায়েরের পরপরই পুলিশ আসামিদের বাড়িতে অভিযান চালায়। কিন্তু আসামিরা পলাতক রয়েছে। আসামিদের ধরতে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় অানা হবে।  

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি লিবিয়ায় গুলি করে ২৬ বাংলাদেশিকে হত্যা করা হয়। নিহতদের মধ্যে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার সুজন মৃধা নামে এক যুবক রয়েছেন। অপর যুবক ওমর শেখ গুলিবিদ্ধ হয়ে লিবিয়ার ত্রিপলির একটি হাসপাতালে জীবন-মরণের সন্ধিক্ষণে রয়েছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪১, জুন ০১, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad