ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

লিবিয়ায় হত্যাকাণ্ডে মাদারীপুরে ৩ মামলা, নারীসহ গ্রেফতার ২

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৪ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২০
লিবিয়ায় হত্যাকাণ্ডে মাদারীপুরে ৩ মামলা, নারীসহ গ্রেফতার ২

মাদারীপুর: লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশি হত্যার ঘটনায় মাদারীপুরে নিহতদের পরিবার তিনটি মামলা দায়ের করেছে। 

লিবিয়ায় মানবপাচার এবং হত্যার ঘটনায় মাদারীপুর সদর মডেল থানায় একটি, রাজৈর থানায়  দুটি মামলা দায়ের করেছে নিহতদের মধ্যে তিন জনের পরিবার। ৩ মামলায় ১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় এক নারীসহ দুই জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

মামলার এজাহার ও সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি লিবিয়ায় গুলি করে ২৬ বাংলাদেশিকে হত্যা করে মানবপাচারকারীরা। এদের মধ্যে অধিকাংশই মাদারীপুরের বাসিন্দা। এ ঘটনায় লিবিয়ায় নিহত ও মানবপাচারের শিকার মাদারীপুর সদর উপজেলার দুধখালি ইউনিয়নের দক্ষিণ দুধখালি গ্রামের মো. শামীম হাওলাদারের বাবা হালিম হাওলাদার বাদী হয়ে রোববার (৩১ মে) বিকেলে মাদারীপুর সদর মডেল থানায় তিন জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে দালাল নজরুল মোল্লার স্ত্রী দিনা বেগমকে। দালাল নজরুল মোল্লা এখন লিবিয়াতে রয়েছেন। এ ঘটনায় রোববার রাতেই মামলার প্রধান আসামি দিনা বেগমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।  

অন্যদিকে একই ঘটনায় মাদারীপুরের রাজৈরে লিবিয়ায় নিহত জুয়েলের বাবা রাজ্জাক হাওলাদার বাদী হয়ে দালাল জুলহাস সরদারসহ চার জনের বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে মামলা করেছেন রাজৈর থানায়।  

এছাড়াও রাজৈর থানার বদরপাশা ইউনিয়নের নিহত রহিম খালাসীর ভাই আবু খায়ের খালাসী বাদী হয়ে রাজৈর থানায় আরো একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলায় জুলহাস সরদারসহ সাত জনকে আসামি করা হয়েছে।  

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার হোসেনপুর ইউনিয়নের নিহত মানিক হাওলাদারের বাবা শাহ আলম হাওলাদার বলেন, আমার ছেলে মানিককে লিবিয়া নেওয়ার কথা বলে দালাল জুলহাস আমার কাছ থেকে প্রথমে ৪ লাখ টাকা নিয়েছে। পরে ছেলেকে বেনগাজী আটকে রেখে ভয়েজ রেকর্ডের মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা দাবি করে। আমি আমার ছেলেকে আনতে জুলহাসের বাড়ি গিয়ে টাকা দিয়ে আসি।

একই গ্রামের নিহত জুয়েল হাওলাদারের বাবা রাজ্জাক হাওলাদার বলেন, আমার ছেলেসহ রাজৈরের বেশ কয়েকজনকে দালাল চক্র লিবিয়া নেওয়ার কথা বলে প্রত্যেকের কাছ থেকে প্রায় ৫ লাখ টাকা চুক্তি করে নিয়ে যায় ৩/৪ মাস আগে। তারপর লিবিয়ার ত্রিপলী না নিয়ে বেনগাজীতে আটকে রেখে নির্যাতন শুরু করে। এরপর ভয়েজ রেকর্ডে নির্যাতনের শব্দ পাঠিয়ে আরো ১০ লাখ টাকা দাবি করে। আমরা হোসেনপুর জুলহাস সরদার নামে ওই দালালের বাড়িতে গিয়ে ১০ লাখ টাকা দিয়ে আসি।  

রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত জাহান বলেন, মানব পাচারের ঘটনায় রাজৈর থানায় দুটি মামলা দায়ের করেছে নিহতের পরিবার। দুটি মামলারই আসামি দালাল জুলহাস। একটি মামলায় সাত জন ও অপর মামলায় চার জনকে আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে জুলহাস করোনা পজিটিভ হওয়ায় পুলিশি হেফাজতে মাদারীপুর সদর হসাপাতালের আইসোলেশনে ভর্তি রয়েছে।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম মিয়া জানান, মানব পাচারের ঘটনায় মাদারীপুর সদর মডেল থানায় তিন জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন নিহত শামীমের বাবা হালিম হাওলাদার। এ মামলার প্রধান আসামি দিনা বেগমকে রোববার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৩ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।