ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দু’মাস পর ব্যস্ত নগরী রাঙামাটি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৮ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২০
দু’মাস পর ব্যস্ত নগরী রাঙামাটি

রাঙামাটি: সরকারি নির্দেশনা পাওয়ার পর সারাদেশের ন্যায় পাহাড়ি জেলা রাঙামাটিতে সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং অফিস-আদালত খুলেছে। সড়কে যান চলাচল পুরোদমে শুরু হয়েছে। ব্যস্ত সময় পার করছে অফিস পাড়াগুলো। বসে নেই ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে শ্রমিকরা। দীর্ঘদিন পর পাহাড়ে পুনরায় কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।

জেলা শহরে একমাত্র বাহন হিসেবে সুপরিচিতি সিএনজি (অটোরিকশা) সকাল থেকে যাত্রী বহনে ব্যস্ত সময় পার করছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যানটি চলাচল করছে বলে সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

রাঙামাটি অটোরিকশা চালক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহিদুজ্জামান মহসিন রোমান বাংলানিউজকে বলেন, সব চালক এবং যাত্রীরা যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করে। এজন্য চালক এবং যাত্রীরা সবাই মাস্ক এবং হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করবে।

এদিকে, জেলায় সিএনজি চলাচল করলেও বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। যে কারণে দূর-দূরান্তে যাওয়া যাত্রীরা বাস কাউন্টারগুলোতে অগ্রিম টিকিটের জন্য ভিড় করতে দেখা গেছে।

আশরাফ বাস কাউন্টারের প্রোপাইটার রফিক বলেন, বাসের টিকিট কিনতে যাত্রীরা ভিড় করছে। আপাতত আমরা বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি বন্ধ রেখেছি। যখন বাস মলিকদের কাছ থেকে নির্দেশনা পাবো তখনি টিকিট বিক্রি শুরু করবো।

রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মোটর মালিক সমিতি কার্যকরী কমিটির সহ-সভাপতি শহিদুজ্জামান মহিসিন রোমান বাংলানিউজকে বলেন, সরকারি নির্দেশনা মেনে দুই সিটে একজন যাত্রী তথা ৩৬ সিটে ১৮ জন এবং ৪০ সিটে ২০ জন যাত্রী বহন করা হবে। এজন্য যাত্রীদের ১৯০ টাকা করে ভাড়া দিতে হবে। আপাতত রাঙামাটি-চট্টগ্রাম, রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি এবং রাঙামাটি-বান্দরবার রুটে পাহাড়িকা সার্ভিস চালু করা হলেও বিরতিহীন সার্ভিস বন্ধ রাখা হয়েছে।

এদিকে রাঙামাটিতে সকাল থেকে সব প্রকার দূরপাল্লার লঞ্চ চলাচল করছে। স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য লঞ্চ চালক এবং যাত্রীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়নি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানানো হয়।
 
বাংলাদেশ আভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থা রাঙামাটি অঞ্চলের চেয়ারম্যান মঈনুদ্দীন সেলিম বাংলানিউজকে বলেন, নৌ-চালক এবং যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যারা স্বাস্থ্যবিধি মানবে না তাদের লঞ্চে উঠানো হবে না। এছাড়া লঞ্চের ভাড়া আগের মতো রাখা হয়েছে।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাঙামাটি শহরের শপিংমলগুলো খুলেছে। প্রথমদিনে উল্লেখযোগ্য বিক্রি নেই বললেই চলে।  

এ বিষয়ে রাঙামাটি বিএম শপিং কমপ্লেক্সের প্রগতি সু-স্টোরের স্বত্বাধিকারী মোজাম্মেল বাংলানিউজকে বলেন, সকাল থেকে কয়েকজন ক্রেতা এসেছিলো। তবে প্রথমদিন উল্লেখযোগ্য কোনো ক্রেতা ছিলো না। কারণ মানুষের মধ্যে এখনো আতঙ্ক বিরাজ করছে। যেসব ক্রেতা মালামাল ক্রয় করার জন্য আসছে তাদের আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানে প্রবেশ করাচ্ছি।

বধুয়া শাড়ি বিতানের স্বত্বাধিকারী সুজন মহাজন বাংলানিউজকে বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে দোকান খোলার নির্দেশনা পেলেও তেমন খুশি হতে পারছি না। কারণ আমরা এখনো করোনামুক্ত হতে পারিনি। এখন দোকান খুললেও ক্রেতারা আসবে কি না, বিক্রি কেমন হবে তা ভেবে দুশ্চিন্তায় আছি।

তিনি আরও বলেন, প্রথমদিন কিছু ক্রেতা এসেছিলো। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের দোকানে প্রবেশ করাচ্ছি।

রাঙামাটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, দোকান-পাট, আবাসিক হোটেল-মোটেল খুললেও পর্যটন স্পটগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। পর্যটক আগমনে রয়েছে বিধিনিষেধ। যে কারণে যান চলাচল করলেও পর্যটকরা রাঙামাটিতে প্রবেশ করতে পারবে না।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) উত্তম কুমার হোম দাশ বাংলানিউজকে বলেন, সরকারি নির্দেশনা মেনে রাঙামাটিতে সব প্রকার ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত খোলা হয়েছে। তবে দোকান-পাট বিকেল চারটার মধ্যে বন্ধ করতে হবে। তা না হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৮ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।