ঢাকা, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নেই শারীরিক দূরত্ব, ঝুঁকি নিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছে মানুষ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৩ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২০
নেই শারীরিক দূরত্ব, ঝুঁকি নিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছে মানুষ

টাঙ্গাইল: করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে গণপরিবহন বন্ধ। এদিকে ঈদের ছুটি শেষে খুলে গেছে অফিস। তাই ঝুঁকি নিয়েই হাজারো মানুষ কর্মস্থল ঢাকায় যাচ্ছেন। এতে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে পিকআপ ভ্যান, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলের সংখ্যা বেড়েছে। 

গত ২৪ ঘন্টায় সেতু দিয়ে ২২ হাজার গাড়ি পারাপার হয়েছে। এতে সেতুতে টোল আদায় হয়েছে এক কোটি ৩০ লাখ টাকার বেশি।


 
বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, শুক্রবার (২৯ মে) সকাল ৬টা থেকে শনিবার (২০ মে) সকাল ৬টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, পিকআপ ভ্যান, মোটরসাইকেল, পণ্যবাহী ট্রাকসহ ছোট ছোট ট্রাক মিলিয়ে সেতু পারাপার হয়েছে ২২ হাজারের অধিক গাড়ি। এর মধ্যে মাইক্রো-প্রাইভেটকার আট হাজার, মোটরসাইকেল সাত হাজার এবং পিকআপ, পণ্যবাহী ট্রাকসহ ছোট ছোট ট্রাক পারাপার হয়েছে ৭ হাজার।  
 
শনিবার (৩০ মে) সরেজমিনে ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব মহাসড়কের সেতু গোলচত্বর ও এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড গিয়ে দেখে গেছে, শত শত মানুষ কর্মস্থলে যেতে সেখানে ভিড় করেছেন।  

এছাড়া উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ থেকে মানুষজন কর্মস্থলে পৌঁছাতে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, মাইক্রো ও পিকআপ ভ্যানে করে যাচ্ছেন। এর মধ্যে এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়ে অনেককে যেতে দেখা গেছে।  

অন্যদিকে মহাসড়কে অনুমোদনহীন সিএনজি চালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে মানুষ গন্তব্যে যাচ্ছেন। তবে কারোর মধ্যেই নেই শারীরিক দূরত্ব। গাদাগাদি করে পিকআপ ভ্যান, মাইক্রোবাসে করে যাচ্ছেন তারা। তবে মহাসড়কের ভূঞাপুর লিংকরোডে হাইওয়ে পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে কাজ করছে। ঝুঁকি নিয়ে পিকআপে করে যাওয়া মানুষজনকে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে পথের মধ্যেই।
 
ছুটি শেষ হওয়ায় বিভিন্ন মাধ্যমে ঝুঁকি নিয়ে কর্মস্থলে যোগ দিতে পরিবার পরিজন নিয়ে হাজার হাজার মানুষ যাচ্ছেন ঢাকায়। একদিকে গণপরিবহন বন্ধ অন্যদিকে চাকরি বাঁচাতে ঝুঁকি নিয়ে কর্মস্থলে ফিরতে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা।  

এছাড়া বাড়তি ভাড়ার ভোগান্তি তো রয়েছেই। যে যেমন পারছেন অসহায় মানুষজনের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া নিয়ে তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছেন।  

এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে গাজীপুরের কোনাবাড়ী যাবেন ফরহাদ হোসেন নামে এক গার্মেন্টকর্মী। অপেক্ষায় আছেন কম ভাড়ায় গন্তব্যে পৌঁছাতে। তাতে তার সময় কেটে যায় দুই ঘন্টা। ততক্ষণে কোনো যান পাননি তিনি। এসময় তিনি বলেন, ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফিরছি। যে টাকা হাতে ছিল সেটা বাড়িতেই খরচ হয়ে গেছে। অন্যের কাছ থেকে ধার-দেনা করে অল্প টাকা নিয়ে বের হয়েছি কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য। কিন্তু এখানে এসে দেখি অনেক বেশি ভাড়া চাওয়া হচ্ছে। কিন্তু এতো টাকা আমার কাছে নেই।  

কর্মস্থলে যেতে অপেক্ষারত অনেকেই বলেন, ধারণ ক্ষমতার বেশি যাত্রী বহন করায় চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকি মাথায় নিয়েই জীবন-জীবিকার তাগিদে ঢাকায় ফিরতে হচ্ছে। যেকোনো মাধ্যমেই হোক কর্মস্থলে পৌঁছাতে হবে। নইলে চাকরি টেকানো খুব কঠিন হয়ে পড়বে। ঝুঁকি নিয়ে কম ভাড়ায় পিকআপে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। অনেকেই দুইজনে মিলে একটা মোটরসাইকেল ভাড়া করে যাচ্ছেন।  

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কামাল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, শনিবার সকাল থেকেই মহাসড়কে ছোট ছোট যানবাহনের সংখ্যা বেড়েছে। উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ ছাড়াও টাঙ্গাইলের আশপাশের জেলার মানুষজন এই মহাসড়ক ব্যবহার কর্মস্থলে যাচ্ছেন বিভিন্ন মাধ্যমে। এতে মহাসড়কে প্রাইভেটকার, পিকআপভ্যান, পণ্যবাহী ট্রাক, মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাসের সংখ্যা বেশি। তবে হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে মহাসড়কের ভূঞাপুর লিংঙ্করোড এলাকায় চেকপোস্ট বসানো হয়েছে মানুষের শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।