এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হামলা মামলার ভয় দেখিয়ে এলাকায় ত্রাহী অবস্থা সৃষ্টি করেছেন তারা। তাদের ভয়ে গ্রামের সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন।
গ্রামবাসী আরো জানান, এলাকার একটা প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থেকে একের পর এক অপকর্ম ঘটিয়ে যাচ্ছেন পুলিশের এই দুই সোর্স।
তবে পুলিশের দাবি, পুলিশের নাম ব্যবহার করে কেউ অন্যায় বা প্রভাব বিস্তার করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভুক্তভোগী ওই গ্রামের বাসিন্দা সালাউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, আমি কয়েক বছর প্রবাসজীবন কাটিয়ে দেশে ফিরে আসি। তারপর বাড়ির পাশে একটা মুদিমালের দোকান দিয়ে ব্যবসা করা শুরু করি। এর পর থেকেই সোর্স জুনাইদ চাঁদার দাবিতে হুমকি ধামকি দিতে থাকে। পরে চাঁদা না দিলে মামলার ভয় দেখিয়ে হয়রানি করা শুরু করে। ভয়ে কয়েকবার তাকে টাকাও দিয়েছি। এরপরে পুনরায় টাকার জন্য চাপ দেয়। না দেওয়ায় গত ১৯ মে জুনাইদ ও ছেলাম দলবল নিয়ে আমাকে ব্যাপক মারধর করে গুরুতর আহত করে। এ বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগও দিয়েছি। এর পরিপ্রেক্ষিতে জুনাইদকে পুলিশ গ্রেফতার করে। কিন্তু এর কয়েকদিন পরই সে আবার জামিনে বেরিয়ে আসে।
তিনি আরো বলেন, জুনায়েদ ও ছেলাম দু’জনই থানার সোর্স হিসেবে কাজ করেন। তাদের কাছে পুলিশের প্রতিনিয়তই আসা যাওয়া রয়েছে। এসব সুযোগ কাজে লাগিয়ে পুলিশের নাম ভাঙিয়ে তারা গ্রামের অনেক মানুষকে হয়রানি করে যাচ্ছে। আমার কাছে যে কয়েকবার ফোনে টাকা চেয়েছে তার রেকর্ডও আমার কাছে রয়েছে।
আরেক ভুক্তভোগী ইমরান মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, জুনায়েদ মামলার ভয় দেখিয়ে আমাদের আতঙ্কের মধ্যে রাখে। পুলিশকে ভুল তথ্য দিয়ে এলাকার লোকজনকে থানায় ধরে নিয়ে যায়। তার জ্বালায় গ্রামের অনেক পরিবার আজ কয়েকমাস ধরে একঘরে হয়ে আছে। আমরা তার সঠিক বিচার চাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী বাংলানিউজকে বলেন, ছেলাম ও জুনায়েদ এলাকায় পুলিশের সোর্স হিসাবে কাজ করে। ডিউটি পুলিশ এনে আমাদের হয়রানি করে। মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের এলাকার লোকজনদেরকে ফাঁসিয়ে দেয়। পরে সমস্যা সমাধানের কথা বলে অনেক টাকা দাবি করে। জানের ভয়ে টাকা দিতে হয়। আমরা সরকারের কাছে বিচার দাবি করছি। সঠিক তদন্ত করে যাতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও কয়েকজন ভুক্তভোগী বাংলানিউজকে বলেন, তারা প্রভাবশালী হওয়ায় গ্রামের নিরীহ মানুষগুলো তাদের কাছে জিম্মি হয়ে আছে। বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য দিয়ে সহজসরল মানুষদের আইনের মারপ্যাঁচে জড়ানো হয়।
অভিযোগের বিষয়ে জুনাইদের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও সংযোগটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এলাকার সচেতন মহলের দাবি, তাদের কারণে কেউ যেন অযথা হয়রানির শিকার না হয়। পুলিশও যাতে সঠিক তথ্য নিয়ে পুরো এলাকাকে আতঙ্ক মুক্ত করেন।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ওই দুই জনের বিরুদ্ধে খোঁজ খবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২০
এজে