ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নিস্তব্ধ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিনোদন কেন্দ্রগুলো

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১১ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২০
নিস্তব্ধ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিনোদন কেন্দ্রগুলো

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: মুসলমানদের প্রধান দুটি উৎসবের একটি হলো ঈদুল ফিতর। অন্যান্য বছর এই ঈদকে ঘিরে ভ্রমণ পিপাসু ও বিনোদনপ্রেমীদের ঢল নামলেও এবারের চিত্র একেবারে ভিন্ন। বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে নেই উপচেপড়া ভিড়। নেই প্রেয়সির হাতে হাত রেখে ছুটে চলা, নেই সন্তান কিংবা বাবা-মা পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরে বেড়াতে যাওয়া। 

প্রতিবছর ঈদকে ঘিরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নানা আয়োজন, নানা পরিকল্পনা থাকলেও করোনার প্রভাবে সব কিছু যেন থমকে গেছে। চলমান করোনা সংকট মোকাবিলায় সচেতনতার অংশ হিসেবে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী জনসমাগমে বিধি নিষেধ থাকায় বিনোদনপ্রেমীরা ঘরে বসেই পরিবার নিয়ে এবারের ঈদ আনন্দ ভাগ করে নিচ্ছে।

 

বিশেষ করে শহরের ফারুকী পার্ক, আবি রিভার পার্ক, ধরন্তী হাওর ঘাট, শিমরাইল কান্দি তিতাস নদীর ঘাট, আশুগঞ্জের মেঘনা নদীর উপরে থাকা সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু ঘাটসহ বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে নেই মানুষের উপচেপড়া ভিড়। আর সেই ভিড় না থাকায় মৌসুমী ব্যবসায়ীরাও এখন অলস সময় কাটাচ্ছেন।  

সরেজমিনে বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা যায়, ঈদের দিন মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে থাকা প্রতিটি বিনোদনকেন্দ্রে এখন সুনসান নিরবতা বইছে। প্রবেশদ্বারের প্রধান ফটকগুলোতে তালা ঝুলে আছে। খালি পড়ে আছে সৌন্দর্য পিপাসুদের জন্য নির্ধারিত স্থানগুলো। তিতাস নদীর দু,পাড়ে ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষের ঢল নেই। ঈদের এই অবসর সময়ে প্রকৃতিপ্রেমীরা প্রকৃতির কাছে যেতে চাইলেও করোনা তাদের বাধ সেধেছে।  

মৌসুমী ব্যবসায়ী সেলিম মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, অন্যান্য বছর ঈদ এলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রগুলো সরব হয়ে উঠলেও এবারের চিত্র ভিন্ন রকম। ঈদকে ঘিরে সরগরম হয়ে থাকা বিনোদনকেন্দ্রগুলো এখন নীরব নিস্তব্ধ হয়ে আছে। করোনা সংকটের কারণে আমার মত অনেক মৌসুমী ব্যবসায়ী কষ্টে দিনপার করছে।  

ফাঁকা বিনোদনকেন্দ্র।  ছবি: বাংলানিউজনরুল আমিন আকাশ নামে এক যুবক বাংলানিউজকে বলেন, প্রতি বছর অনেক আনন্দে ঈদ উদযাপন করলেও এবার করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে কোথাও ঘুরতে বের হইনি।

তিনি বলেন, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঘরে বসেই ঈদের দিনটা কাটাচ্ছি। আজকের এই দিনে মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে দোয়া করি উনি যেন এই মহামারি থেকে পৃথিবীর সবাইকে মুক্তি দান করেন।  

সংবাদকর্মী মাসুক হৃদয় বাংলানিউজকে বলেন, এবারের ঈদ বিশ্বের মুসলমান আর কখনও দেখেনি। ঈদ উদযাপনে আনন্দ যেন ভয় ও আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। তবুও মানুষ ঘরে বসে এই আনন্দকে ভাগ করে নিচ্ছে।

বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মো.  মনির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ঈদ উৎসবকে ঘিরে শুধু ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরাই নয় সব ধর্মের মানুষরাই এ আনন্দকে ভাগাভাগি করে নিতে উল্লাসে মেতে ওঠে। মূল আনন্দ হলো একে অপরকে জড়িয়ে ধরা। কিন্তু পরিস্থিতির শিকার হয়ে আমরা সবাই আজ তা থেকে বিরত রয়েছি। বিশেষ করে বিভিন্ন পাড়ায় মহল্লায় ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান ছাড়াও নানান ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়ে থাকত। ছোট ছোট শিশুরা নতুন কাপড় পড়ে কলরবে মেতে উঠত। অদৃশ্য করোনা সংক্রমণের দৃশ্যমান আক্রমণ থেকে বাঁচতে সামাজিক দ্বায়বদ্ধতা থেকেই সবাই এই সচেতনতা পালন করছে সবাই।

বাংলাদেশ সময়: ২১০২ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।