ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সিলেটে ঈদ জামাতে করোনা মুক্তির প্রার্থনা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৪ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২০
সিলেটে ঈদ জামাতে করোনা মুক্তির প্রার্থনা

সিলেট: অশ্রুসিক্ত দু’নয়ন। বদনখানি ভিজছে চোখের জলে। হাজার হাজার মানুষের আর্তি। গগণবিদারী মুক্তির আর্তি। পবিত্র ঈদুল ফিতর মানে খুশির দিন। আর এ দিনে মাবুদের দরবারে দু’হাত তুলে প্রার্থনা লাখ লাখ মুসুল্লির। এ প্রার্থনা করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তির। সুন্দর, শান্তির পৃথিবী ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশার।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে দু’হাত তুলে দেশ তথা বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর করোনা থেকে মুক্তি প্রার্থনা দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনার পর উৎসবের দিনে কান্নারত মুসুল্লিদের।  

সিলেটের বিভিন্ন মসজিদে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় সবধরনের বালা-মুসিবত থেকে সুরক্ষায় প্রার্থনা করা হয় মহান আল্লাহর দরবারে।

ঈদ জামাত শেষে দেখা মিললো অচেনা দৃশ্যের। স্বজন-পরিজন, একে অন্যে কেবল দূর থেকেই বিনিময় করলেন ঈদ শুভেচ্ছা। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস বুকে টেনে নেওয়ার আবেগটুকুতে ছেদ ফেললো। একে অন্যের মধ্যে নেই আলিঙ্গন। উৎসবের দিন পানসে, নেই কোনো অনুভূতি। সবার মধ্যে দূরত্ব তৈরি করে দিয়েছে করোনা ভাইরাস।

সোমবার (২৫ মে) শারীরিক দূরত্ব রেখে দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে ধর্মীয়ভাবে উদযাপন হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ থেকে সুরক্ষায় সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী এবার উন্মুক্ত স্থানে বা ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়নি।

সিলেটের শাহী ঈদগাহে এবার ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সিলেট শাহজালাল দরগাহ মাজার মসজিদ, হাজী কুদরত উল্লাহ জামে মসজিদ ও খাসদবীরস্থ জামেয়া মদীনাতুল উলুম দারুসসালাম মাদ্রাসা মসজিদে দু’টি করে এবং বন্দরবাজারস্থ কালেক্টরেট মসজিদে চারটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সিলেটের শাহজালাল দরগাহ মাজার মসজিদে ঈদের নামাজের জামাত দু’টি অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমটি সকাল সাড়ে ৮টায় এবং দ্বিতীয়টি সাড়ে ৯টায়। এর একটিতে ইমামতি করেন হাফিজ মাওলানা আসজাদ আহমদ ও অপরটিতে হাফিজ মাওলানা হুজায়ফা হুসাইন।

সিলেটের বন্দরবাজার হাজী কুতরত উল্লাহ জামে মসজিদেও ঈদের নামাজের জামাত দু’টি অনুষ্ঠিত হয়। সকাল সাড়ে ৮টায় একটি আর সাড়ে ৯টায় আরেকটি। একটিতে ইমামতি করেন মসজিদের ইমাম ও খতিব সাঈদ বিন নুরুজ্জমান আলমদানি এবং অপরটিতে মসজিদের সিনিয়র মোয়াজ্জিন।

নগরের বন্দরবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে ঈদের জামাত একটাই অনুষ্ঠিত হয়। সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত জামাতে ইমামতি করেন মসজিদের ইমাম ও খতিব মুফতি মাওলানা আবু হুরায়রা নোমান।

বন্দরবাজার এলাকার সিলেট কালেক্টরেট মসজিদে চারটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৭টা, ৮টা, ৯টা ও ১০টায় এ জামাতগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর নগরের খাসদবীর জামেয়া মদীনাতুল উলুম দারুসসালাম মাদ্রাসা মসজিদে পবিত্র ঈদুল ফিতরের দু’টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাত হয় সকাল ৮টা এবং দ্বিতীয় জামাত সকাল সাড়ে ৮টায়।

নামাজ শেষে সিলেটের প্রতিটি মসজিদেই করোনামুক্তির জন্য স্রষ্টার কাছে কান্নায় ভেঙে পড়েন মুসুল্লিরা। এসময় মুসুল্লিদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠে চারপাশ। পাশাপাশি দেশ ও জাতির সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

এবার সিলেট জেলা ও মহানগর এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে ৯২৪টি মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় জানিয়েছে সিলেট জেলা ও মহানগর পুলিশ।   

এর মধ্যে সিলেট মহানগর এলাকায় ১৭৫টি ও জেলার উপজেলাগুলোর ৭৪৯টি মসজিদে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪২ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২০
এনইউ/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।