ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সরকারি সহায়তা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৩ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২০
করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সরকারি সহায়তা

ঢাকা: করোনা ভাইরাস উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কর্মহীন মানুষের সহায়তার জন্য সরকার এ পর্যন্ত ১ লাখ ৬২ হাজার ৮৬৭ মেট্রিক টন চাল এবং নগদ ৯১ কোটি ৪৭ লাখ ৭২ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যতদিন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হবে, ততদিন পর্যন্ত সরকারের এসব কর্মসূচি অব্যাহত এবং তার সরকার জনগণের পাশে থাকবে বলেও তিনি জানান।

রোববার (২৪ মে) সন্ধ্যায় ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী একথা জানান।

ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা মহামারি মোকাবিলায় সরকারের পদক্ষেপগুলো তুলে ধরে বলেন, ইতোমধ্যে আমরা চিকিৎসা সক্ষমতা অনেকগুণ বাড়িয়েছি।

সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হাসপাতালকেও আমরা করোনা ভাইরাস চিকিৎসায় সম্পৃক্ত করেছি। জরুরিভিত্তিতে ২ হাজার ডাক্তার এবং ৫ হাজার নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছেন। হাসপাতালগুলোতে সব ধরনের রোগীর চিকিৎসা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের মহামারির কারণে সারা বিশ্ব আজ বিপর্যস্ত। অগণিত মানুষের প্রাণহানি ছাড়াও এই মহামারি মানুষের রুটি-রুজির উপর চরম আঘাত হেনেছে। সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য জরুরি কিছু সেবা ছাড়া বন্ধ করে দিতে হয়েছে অফিস-আদালত, কল-কারখানা, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানসহ সবকিছু। লাখ লাখ মানুষ আজ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। হারিয়েছেন তাদের রুটি-রুজির সংস্থান।

করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন মানুষের জন্য সরকারের দেওয়া সহায়তা বিস্তারিত তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এসব কর্মহীন মানুষের সহায়তার জন্য সরকার সর্বাত্মক উদ্যোগ নিয়েছে। ১০ কেজি টাকা দরে বিক্রির জন্য ৮০ হাজার মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মে মাসে দরিদ্র পরিবারের জন্য অতিরিক্ত ৫০ লাখ কার্ড বিতরণ করা হয়েছে যার মাধ্যমে তারা এই চাল কিনতে পারবেন।

‘কাজ হারিয়েছেন কিন্তু কোনো সহায়তা কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত নন এ ধরনের ৫০ লাখ পরিবারকে আড়াই হাজার টাকা করে মোট ১২শ ৫০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে। কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের জন্য দু-দফায় ১৭ কোটিরও বেশি এবং সারা দেশের মসজিদের ইমাম-মোয়াজ্জিনদের জন্য ১২২ কোটি ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আপনাদের সহযোগিতা এবং সমর্থনে আমরা করোনা ভাইরাস মহামারির আড়াই মাস অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে সমর্থ হয়েছি। যতদিন না এই সঙ্কট কাটবে, ততদিন আমি এবং আমার সরকার আপনাদের পাশে থাকব, ইনশাআল্লাহ। ’

অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখতে সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও উৎপাদন ব্যবস্থা পুনরায় সচল করতে আমরা ইতোমধ্যে ১ লাখ ১ হাজার ১১৭ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি। যা জিডিপির ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। রপ্তানিমুখী শিল্প, ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কৃটির শিল্প, কৃষি, মৎস্যচাষ, হাঁস-মুরগি ও পশুপালন খাতসহ ১৮টি অর্থনৈতিক খাতকে এসব প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় আনা হয়েছে। কাজ হারানো যুবক ও প্রবাসী ভাই-বোনদের সহায়তার জন্য পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক এবং পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনকে ৫শ কোটি টাকা করে সর্বমোট ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন
** ঘরে বসেই ঈদের আনন্দ উপভোগ করুন: প্রধানমন্ত্রী
** কৃষক ও ছাত্রলীগকে প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন
** জীবন-জীবিকার স্বার্থে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু করতে হবে
** সরকারের প্রস্তুতির কারণে আম্পানের ব্যাপক ক্ষতি এড়ানো গেছে

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৩ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২০
এসকে/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।