ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

তবুও বাজারে কমেনি মসলার দাম

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৪ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২০
তবুও বাজারে কমেনি মসলার দাম .

ঢাকা: পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে মসলার দাম কমানোর কথা বলা হলেও সেটি ঘোষণাতেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। পাইকারি ও খুচরা বাজারে কোথাও মসলার দাম কমেনি। শুধু তাই নয়, দোকানে টানানো তালিকাতেও ঘোষিত দামের সঙ্গে মিল পাওয়া যায়নি।

শনিবার (২৩ মে) রাজধানীর মিরপুর ও কাওরান বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ পাইকারি গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতি যে দাম ঘোষণা করেছে সেই দামে তাদের কাছ থেকেও মসলা কেনা সম্ভব হয়নি।

বেশি দামে মসলা কিনে এনে বেশি দামে বিক্রি করা ছাড়া উপায় নেই বলেও জানিয়েছেন তারা।

কাওরান বাজারে শনিবার দেখা যায় জিরা (ভারত) প্রতি কেজি ৩৬০ থেকে ৪২০ টাকা, দারুচিনি (চীন) কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, দারুচিনি (ভিয়েতনাম) কেজি ৪৫০ থেকে ৪৭০ টাকা, লবঙ্গ কেজি ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, এলাচি কেজি ৩ হাজার ২০০ থেকে ৪ হাজার টাকা, গোলমরিচ (সাদা) ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা এবং গোলমরিচ (কালো) ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা দরে কেনাবেচা হচ্ছে।

দাম বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে কেন জানতে চাইলে কাওরান বাজারের এ-রাইট ষ্টোরের স্বত্বাধিকারী হাজী আব্দুল খালেক বাংলানিউজকে বলেন, আমরা মূল্য তালিকা টানিয়ে ব্যবসা করছি। আমরা মসলা বেশি দামে কিনেছি, এজন্য বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতি যে দাম নির্ধারণ করেছে সেই দামে আমরা তাদের কাছ থেকেই মসলা কিনতে পারিনি। মসলার দাম কমে গেলে আমরাও দাম কমিয়েই ব্যবসা করবো বলে তিনি জানান।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পাইকারি গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. এনায়েত উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, সরকার আমাদেরকে বাধ্য করেনি। আমরা বুঝেশুনে মসলার দাম দিয়েছি। কেউই আমাদের নির্ধারিত দামের চাইতে বেশি নেওয়ার কথা না। তবে যদি কারো মসলা আগের মজুদ থেকে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে সে হয়তো কিছুটা দাম বাড়তি নিতে পারে। তবে খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রফিট মার্জিন কিছুটা বেশি করে। সেক্ষেত্রে খুচরা ব্যবসায়ীরা মসলার দাম কিছুটা বাড়তি নিতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

তিনি আরো বলেন, আমাদের প্রতিটি ব্যবসায়ী সমিতির বেঁধে দেয়া দামেই মসলা বিক্রি করছে এবং পরবর্তী ঘোষণা  না দেয়া পর্যন্ত দাম বাড়ার সুযোগ নেই। তবে প্রতিটি মসলার দামই গত বছরের চেয়ে এবছর অনেকটাই কম রয়েছে বলেও জানান তিনি।

পবিত্র রমজান মাসে কেউ যাতে অতিরিক্ত মসলার দাম না রাখে সেদিকে সবাইকে সতর্ক হওয়ার আহ্বানও জানান এ ব্যবসায়ী।

এদিকে গত ১৩ মে গরম মসলার দাম ১০ থেকে ২৫ শতাংশ কমানোর ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ পাইকারি গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতি। ঐদিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ওবায়দুল আজমের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর সমিতি মসলার দাম কমানোর ঘোষণা দেয়।

বৈঠকে গরম মসলার আন্তর্জাতিক বাজার ও বাংলাদেশে আমদানি মূল্য পর্যালোচনা করা হয়। পবিত্র ঈদুল ফিতর সামনে রেখে বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মতো গরম মসলার মূল্য স্থিতিশীল রাখার বিষয়ে তারা একমত পোষণ করেন।

এ বৈঠকের পর বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও বাণিজ্যসচিব মো. জাফর উদ্দীনের সঙ্গেও আলাদা বৈঠক করে গরমমসলা ব্যবসায়ী সমিতি।

বৈঠকের পর  বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উভয় বৈঠকের পর বাংলাদেশ পাইকারি গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতি গরম মসলার মূল্য তালিকা ঘোষণা করে। তারা জানায়, খুচরা বাজারে এখন থেকে জিরা (ভারত) প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩৪০ টাকা, দারুচিনি (চীন) কেজি ৩১০ থেকে ৩৩০ টাকা, দারুচিনি (ভিয়েতনাম) কেজি ৩৫০ থেকে ৩৭০ টাকা, লবঙ্গ কেজি ৬৮০ থেকে ৭২০ টাকা, এলাচি কেজি ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা, গোলমরিচ (সাদা) ৫৫০ থেকে ৫৮০ টাকা এবং গোলমরিচ (কালো) ৩৬০ থেকে ৩৮০ টাকা দরে কেনাবেচা হবে। এ দর বর্তমান বাজারদরের চেয়ে ১০ থেকে ২৫ শতাংশ কম বলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৪ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২০
এসএমএকে/এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad