ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

অনলাইনে অর্ডার নিয়ে পণ্য দিল না আড়ং, ঈদ আনন্দ ম্লান

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৬ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২০
অনলাইনে অর্ডার নিয়ে পণ্য দিল না আড়ং, ঈদ আনন্দ ম্লান

ঢাকা: ঈদের কেনাকাটায় মানুষের বিশেষ পছন্দের ব্র্যান্ড আড়ং। করোনার কারণে এবার ঈদ হচ্ছে ভিন্ন আমেজে। শপিংমল বা বিপণিবিতানে গিয়ে কেনাকাটায় নানান বিধিনিষেধের কারণে অনেকেই বেছে নেন অনলাইন। অনেক শোরুম খুলতে না পারায় ক্রেতাদের চাহিদা মাথায় রেখে অনলাইনে অর্ডার নেয় আড়ংও। কিন্তু সেখানে প্রতিষ্ঠানটির চরম খামখেয়ালি আচরণের মূল্য দিতে হচ্ছে ক্রেতাদের।

সরকার ঘোষিত শারীরিক দূরত্ব শোরুমের ভিতরে আগে থেকে মানছিল না আড়ং। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ছবি ছড়িয়ে পড়ে।

সেখানে দেখা যায় ভিড় করে গায়ে গা ঘেঁষে শপিং করছেন ক্রেতারা। এরই মধ্যে অনলাইনে অর্ডার নিলেও পণ্য ঠিকমতো পৌঁছে দিতে পারেনি আড়ং। তারা যে পৌঁছে দিতে পারবে না সেটিও এমন সময় জানিয়েছে যে অন্য বিকল্প উৎস থেকে অনলাইনে সংগ্রহ করার সময়ও তখন শেষ। আবার অর্ডার বাতিল করে টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়েও লক্ষ্য করা গেছে চরম গড়িমসি।  

অনলাইনে অর্ডার দিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা আলাউদ্দিন নাসিম। এ নিয়ে তিনি একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাসও দিয়েছেন।

নিচে তার স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো:

আড়ংয়ের খামখেয়ালিপনা এবং ক্রেতাদের স্বপ্নভঙ্গ: 
করোনার কারণে এবার পরিবারের কেউই ঈদ শপিং করছি না। কিন্তু ৮৭ বছর বয়সী বৃদ্ধ পিতা এবং কাছাকাছি বয়সের আম্মা ও শ্বশুর-শাশুড়ির জন্য কিছু কেনার প্রয়োজনীয়তা থেকে আড়ংয়ের শরণাপন্ন হলাম তাদের online shop এর মাধ্যমে। আম্মা-বাবা করোনার আগে গ্রামে গিয়ে আটকা পড়েছেন আর শ্বশুর-শাশুড়ি থাকেন চট্টগ্রামে। যোগাযোগ ব্যবস্থা সীমিত হওয়ায় অনেক সময় হাতে নিয়ে ৯ মে online এ চাহিদা অনুযায়ী পুরুষের কিছু পোশাক order দিয়ে ডেভিড কার্ডে মূল্য পরিশোধ করি।  

‘নারীদের শাড়ি order করি নারায়ণগঞ্জের একটি জামদানি শাড়ির online shop এ। একদিন পরেই শাড়ি Delivery পেলেও এখন পর্যন্ত আড়ংয়ের পণ্যের সরবরাহ পাইনি। ১৭/১৮ তারিখের দিকে একটি বার্তা পেলাম আড়ং থেকে। তাতে অনেক কথার মধ্যে আমাদের জন্য যা বলা ছিল তা হলো অত্যধিক order এর কারণে তাদের পণ্য পাঠাতে দেরি হচ্ছে। তবে ১৬ মে’র মধ্যে যারা order দিয়েছেন তাদের পণ্য ঈদের আগে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। ’

...‘মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। কবে পাবো আর কবে পাঠাবো তা ভেবে। দেখার বা শোনার আরো বাকি ছিল। ২১ তারিখে আর একটি বার্তা পেলাম আড়ং থেকে। তা দেখে বাংলা ভাষার সেই বিখ্যাত শব্দ ‘কিংকর্তব্যবিমূঢ়’ হয়ে গেলাম। বার্তাটি ছিল কেনা পণ্য পাঠানো সম্ভব হবে না। যথাসময়ে টাকা ফেরত দেওয়া হবে। অপেক্ষায় রইলাম টাকা ফেরতের। না এখন পর্যন্ত (২৩ মে বিকেল ৫.১৫ ) টাকা ফেরত আসেনি। ’

‘ভাবছি এটাও কি সম্ভব? দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল ফিতর। সবাই চেষ্টা করে বাবা, মা, স্ত্রী সন্তানদের এই ঈদে নতুন কাপড় কিনে দিতে। অনেকেই সে চেষ্টাতেই আড়ংয়ে order করেছিলেন। আড়ংয়ের বার্তানুযায়ী অধিক ক্রয়াদেশের কারণে ওনারা পণ্য সরবরাহ দিতে পারেনি। এখানে প্রশ্ন হলো ১. সাধ্যের অতিরিক্ত ক্রয়াদেশ ওনারা নিলেন কেন? ২. অগ্রিম টাকা নিয়ে কত শত কোটি টাকার ক্রয়াদেশ নেওয়া পণ্য আড়ং সরবরাহ করতে পারেননি। ৩. সীমিত আয়ের ক্রেতারা অর্ডার করা পণ্য না পেয়ে এবং যথাসময়ে অর্থ ফেরত না পেয়ে তাদের বাবা, মা, স্ত্রী পুত্র কন্যাদের ঈদের পোশাক দিতে না পারার কষ্ট কী দিয়ে মেটাবেন। বা বাচ্চাদের কী দিয়ে ঈদের আনন্দে শামিল করবেন। ৪. আড়ংয়ের এ ধরনের অবিশ্বাসজনিত খামখেয়ালিপনার কারণে হাজার হাজার মানুষের স্বপ্নভঙ্গের কি কোনো প্রতিকার নেই? 

আশাকরি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ, CAB-সহ যথাযথ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে ব্যবস্থ্য নেবেন। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২০
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।