ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ব্যক্তিগত উদ্যোগেই ঢাকা ছাড়ছেন রাজধানীবাসী

শাওন সোলায়মান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫১ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২০
ব্যক্তিগত উদ্যোগেই ঢাকা ছাড়ছেন রাজধানীবাসী

ঢাকা: ব্যক্তিগত উদ্যোগেই ঢাকা ছাড়ছেন রাজধানীবাসী। রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা এমনকি ভাড়ায় চালিত প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস নিয়ে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছেন অনেকেই। মোটকথা ঈদকে কেন্দ্র করে যে যেভাবে পারছেন ঢাকা ছাড়ছেন।

শনিবার (২৩ মে) সকাল থেকেই রাজধানী থেকে বের হওয়ার কয়েকটি পয়েন্টে এমন দৃশ্যই দেখা যায়।

গাবতলীর আমিনবাজার ব্রিজ এলাকায় গিয়ে ব্যক্তিগত বাহনযোগে মানুষদের রাজধানী ছাড়তে দেখা যায়।

তবে তাদের মধ্যে বেশিরভাগকেই হেঁটে আমিনবাজার ব্রিজ পার হতে দেখা যায়। কারণ ব্রিজের অন্যপাশে ভাড়ায় চালিত প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল এবং ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলতে দেখা যায়। এগুলোর বেশিরভাগই যাত্রী নিয়ে আরিচার উদ্দেশ্যে যাত্রা করছে।

হেঁটে ব্রিজ পার হওয়ার সময় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আলাউদ্দিন হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের তো নিজস্ব গাড়ি নেই। গাড়ি ভাড়া করার চেষ্টা করেও পারিনি। অত টাকা নেই। এবার তো বোনাসও পাইনি। তাই হেঁটেই বাড়ির উদ্দেশ্যে (ফরিদপুর) রওনা দিয়েছি। ভাবছি ভেঙে ভেঙে চলে যাবো।

ব্রিজের অন্যপাশে ভাড়ায় চালিত প্রাইভেটকারে করে আরিচার উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন আমির হোসেন। স্বাস্থ্য ঝুঁকি আছে জেনেও কেন যাচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা নিজেদের প্রাইভেটকারে বা ভাড়াচালিত গাড়িতে বাড়িতে যাচ্ছেন তাদেরও তো ঝুঁকি আছে। তারা যে সাম্প্রতিক সময়ে করোনা আক্রান্ত কারও সংস্পর্শে আসেননি সেটা কি নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারেন? তারাও তো বাড়িতে গিয়ে করোনা ছড়িয়ে দিতে পারেন। এখন সবাই সবকিছু মেনেই যাচ্ছে। আমিও যাচ্ছি।

এদিকে, অনেকেই আবার রাজধানী থেকে প্রাইভেটকার অথবা মাইক্রোবাস ভাড়া করে বাড়ির উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়ছেন। অভিযোগ আছে, স্বাভাবিক সময়ের থেকে এখন এসব যানবাহনের ভাড়াও বেশি।  

রাজধানীর মিরপুর এলাকার এক রেন্ট-এ-কার ব্যবসায়ী হারিস চৌধুরী বলেন, এ সময়ে গাড়ি ও চালকের সঙ্কট। এর মধ্যেও আমরা কিছু গাড়ি দিচ্ছি। যেহেতু গাড়ি কম, চালক ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না, তাই ভাড়াও একটু বেশি। আবার অনেক গাড়িভাড়া করে গেলেও চালককে তো খালি গাড়ি নিয়ে ফিরতে হয়। তাই স্বাভাবিক সময়ের থেকে বাড়তি ভাড়া নিতেই হচ্ছে।  

প্রায় একই অবস্থা উত্তরার হাউজবিল্ডিং হয়ে আবদুল্লাহপুরের। তবে এ রুটে উত্তরবঙ্গের উদ্দেশ্যে রওনা করা যাত্রীদের চাপই বেশি। দেখা যায়, রাজধানী থেকে বের হওয়ার এ দু’টি পথে ব্যক্তিগত গাড়িতে থাকা কাউকেই কোনো প্রশ্ন করছে না পুলিশ।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও সায়েদাবাদ এলাকার চিত্র একই।  সায়েদাবাদ এলাকায় দেখা যায়, অনেকেই ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বাড়িতে যাচ্ছেন। অনেকে আবার রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা এমনকি ভাড়ায় চালিত প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস নিয়ে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছেন। ঈদকে কেন্দ্র করে যে যেভাবে পারছেন ঢাকা ছাড়ছেন।

সামগ্রিক অবস্থা নিয়ে গাবতলী এলাকায় দায়িত্বপালনরত ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশের সার্জেট ঝোটন সিকদার বলেন, কিছুদিন আগেও রাজধানীতে আসা-যাওয়া নিয়ন্ত্রণে যে বিশেষ চেকপোস্ট ছিল এখানে (আমিন বাজার ব্রিজের ঢাকা অংশ) সেটি এখন আর নেই। এখন রুটিন চেকপোস্ট চলছে। নির্দেশনা মোতাবেক ব্যক্তিগত গাড়িগুলোকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে না। তবে পণ্যবাহী গাড়িতে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে কি-না সে বিষয়টি দেখা হচ্ছে। এছাড়া ব্যাটারিচালিক অটোরিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা এগুলো পারাপারের চেষ্টা করলে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাড়ি যাওয়ার জন্য সচেতন করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২০
এসএইচএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।