গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩০ হাজার ২০৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৪৩২ জনের।
এদিকে দেশে গত ২৬ মার্চ থেকে টানা প্রায় দুই মাস সাধারণ ছুটি ও লকডাউন চলছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে সব কিছু স্থবির হয়ে আছে। এর ফলে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কাও করা হচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে ছুটি ও লকডাউন শিথিল করা হলেও স্বাভাবিক কার্যক্রমে এখনও ফিরে আসা সম্ভব হয়নি। বরং শিথিলতার কারণে মানুষের চলাচল বেড়ে যাওয়ায় করোনা সংক্রমণ নতুন করে বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, টানা দুই মাস লকডাউনের কারণে অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বিঘ্নিত হচ্ছে মানুষের জীবিকা। অন্যদিকে করোনা পরিস্থিতিরও অবনতি ঘটেছে। করোনা প্রতিরোধের একমাত্র উপায় সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা। তা নিশ্চিত করা দুরূহ হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার (২২ মে) এ পরিস্থিতি নিয়ে এক ভিডিও কনফারেন্সে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এবার এক ভিন্ন বাস্তবতার ঈদুল ফিতর। আসন্ন ঈদের আনন্দ উদযাপনের চেয়ে বেঁচে থাকার লড়াই আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এখন করোনাবিরোধী লড়াইয়ে আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পালন করি, জায়গা বদল না করি, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি।
উদ্ভূত বাস্তবতা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বারবার মানুষকে সতর্ক করছি, জেনে-বুঝে মানুষ আগুনে হাত দিলে সরকার কী করতে পারে? মানুষের অহেতুক চলাফেরা বন্ধ হচ্ছে না। এটা একটা উদ্বেগজনক বিষয়। দেখেছেন তো, ঈদ ঘিরে রডের ট্রাকে লুকিয়ে বাড়ি যেতে গিয়ে কতগুলো মানুষ দুর্ঘটনায় মারা গেলেন।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, মনে হচ্ছে মানুষ কিছুটা নিয়মের বাইরে চলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে। সরকার যে স্বাস্থ্যবিধির কথা বলেছে তা উপেক্ষা করে চলছে মানুষ। অথচ এই করোনা থেকে রক্ষা পাওয়ায় সচেতনতাই মূল। অসচেতনতার কারণে অতীতে এ দেশে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনেক ক্ষতি হয়েছে। যদিও আমি মনে করি, এ সংকট কেটে যাবে।
সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান বাংলানিউজকে বলেন, ইউরোপের দেশগুলোর তুলনায় আমাদের দেশে সংক্রমণ কম। কিন্তু আগের তুলনায় গত কয়েক দিনে আমাদের সংক্রমণ বেড়েছে। মানুষের চলাফেরা বেড়েছে, কমিউনিটি ট্রান্সমিশনও হয়েছে, এর ফলে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে মানুষের সাবধান হওয়া, সর্তক থাকার বিকল্প নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৭ ঘণ্টা, মে ২২, ২০২০
এসকে/এইচজে