বাঁচা মরা আল্লাহর হাতে, তাই বলে ঈদে বাড়ি যাবো না তাই কী হয়। বাড়িতে বৃদ্ধ মা পথ চেয়ে বসে আছেন কখন বাড়ি যাবো।
ঢাকা থেকে গোলড়া পর্যন্ত প্রাইভেটকারে এসেছিলাম তবে চেকপোস্টের কারণে গাড়ি আটকে দিয়েছে পুলিশ। মানিকগঞ্জের কোনো অংশের রাস্তায় গাড়ি নেই, তাই বাধ্য হয়ে হেঁটে রওনা হয়েছি।
সব কষ্ট দূর হবে বাড়ি গিয়ে মায়ের মুখ-খানি দেখলেই, আর মা দেখা মাত্রই যখন জড়িয়ে ধরে মাথায় হাত বুলিয়ে দিবে তখন রাস্তার সব কষ্ট ভুলে যাবো বলে মন্তব্য করেন গাজিপুর থেকে আসা মাদারীপুরগামী পোশাক শ্রমিক নজরুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (১৯ মে) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে শত শত নারী পুরুষ রোদে পুড়ে পায়ে হেঁটে পাটুরিয়া ঘাট অভিমুখে যাচ্ছে এমন চিত্র দেখা যায় মানিকগঞ্জের গোলড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায়।
মহাসড়কে কোনো যানবাহন না থাকায় দল বেঁধে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ হেঁটেই ছুটে চলেছেন প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ ছুটে যাচ্ছেন পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুট অভিমুখে। মানিকগঞ্জ জেলার অংশে প্রবেশের মুখে গোলড়া বাসস্ট্যান্ডে পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ঈদে ঘড় মুখো মানুষের। জেলা পুলিশ ওই বাসস্ট্যান্ডে চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহন আটকে দিচ্ছে এবং যেখান থেকে যানবাহনগুলো অাসছিলো সেখানেই ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে। অনেকেই ভাড়া করা প্রাইভেটকার বা হায়েচ গাড়িতে করে এসেছিলেন তারা গাড়ি থেকে নেমে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পায়ে হেঁটেই রওনা দিয়েছে পাটুরিয়া ঘাট পারের আশায়।
সাভারের আশুলিয়া থেকে আসা যশোরগামী সাইদা বাংলানিউজকে বলেন, আশুলিয়া থেকে আসার সময় রাস্তায় বিভিন্ন স্থানে পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়েছে। সব জায়গায় বলে কয়ে এসেছিলাম কিন্তু গোলড়া এসে তা আর সম্ভব হলো না, পুলিশ কোনোভাবেই গাড়ি পাটুরিয়া ঘাটের দিকে প্রবেশ করতে দেবে না যার কারণে এখন আশুলিয়াতে ফিরতেও পারবো না তাই বাধ্য হয়েই হেঁটে পাটুরিয়া ঘাটের দিকে যাত্রা করেছি।
গোলড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, জেলা পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা চেকপোস্ট বসিয়েছি বাথুলী ওয়েট স্কেলে। এছাড়া ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যাতে অন্য কোনো জেলা থেকে যানবাহন প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য হাইওয়ে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা সেক্টরের ডিজিএম জিল্লুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, পাটুরিয়া ঘাট দিয়ে ওষুধের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী গাড়ি ছাড়া অন্য সব যানবাহন পারাপার বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ২টি ফেরি দিয়ে ওই সব যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে এবং কোনো ধরনের যাত্রী ফেরিতে পার করা হচ্ছে না বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা জেলার প্রবেশের মুখেই চেকপোস্ট বসিয়েছি, আমাদের পুলিশ সদস্যরা ২৪ ঘণ্টাই কাজ করে যাচ্ছে। ঢাকাসহ দেশের যে প্রান্ত থেকেই দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের মানুষ গাড়ি নিয়ে অাসছে তাদের বিনয়ের সঙ্গে বুঝিয়ে ফেরত পাঠানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০২ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০২০
আরএ