ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

স্কুলছাত্র ইব্রাহিমের পরিবারকে পুলিশ কর্মকর্তার সহায়তা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৪ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২০
স্কুলছাত্র ইব্রাহিমের পরিবারকে পুলিশ কর্মকর্তার সহায়তা ইব্রাহিমের পরিবার।

বরিশাল: লকডাউনে ১২ বছরের ইব্রাহিমের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বাড়ি ফিরে যায় সে কিন্তু বাবার অভাবের সংসার। তাই আবারও ফিরে আসে বরিশাল নদীবন্দর এলাকায়।

এরপর সেখানে সে ভাসমান পথশিশুদের সঙ্গে দিন কাটাতে শুরু করে। আর বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ ও গণমাধ্যমকর্মীদের দেওয়া খাবার খেয়ে জীবন ধারণ করতে থাকে।

এরইমধ্যে পাশের একটি মুরগির দোকানেও কাজ নেয় সে।

তবে গত ৪ মে রাতে নদীবন্দরে অসহায় ভাসমান মানুষদের খাবার দিতে এসে বিষয়টি জানতে পারেন সৈয়দ মেহেদি হাসান নামে এক গণমাধ্যমকর্মী। তিনি পুরো বিষয়টি যেনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিওসহ স্ট্যাটাস দেন।

বিষয়টি দ্রুতই দৃষ্টিগোচর হয় ঝালকাঠি সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম এম মাহমুদ হাসানের। তিনি ওই গণমাধ্যমকর্মী ও আরও একজনের সহায়তায় ইব্রাহিম ওরফে সুজনের তথ্য নেন। পরবর্তীকালে সার্বিক খোঁজ-খবর নিয়ে সুজনকে বাড়িতে পাঠানো এবং খাদ্য সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীকে জানান।

পুলিশের এ কর্মকর্তার অনুরোধে ইব্রাহিমকে সঙ্গে নিয়ে বরিশাল নদীবন্দর থেকে বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের তবিরকাঠি গ্রামে যান গণমাধ্যমকর্মী মেহেদী হাসান।

তিনি জানান, সেখানে যাওয়ার পর ইব্রাহিমের বাবা মাসুদ সিকদারের হাতে ছেলেকে তুলে দেওয়া হয়। পাশাপাশি তার সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয় পুলিশ কর্মকর্তা এম এম মাহমুদ হাসানের। এরপর পুলিশ কর্মকর্তা ওই পরিবারকে নিজ উদ্যোগে খাদ্যপণ্য দেন এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিমাসে কিছু ব্যয়ভার বহনের কথাও জানান।

স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া ইব্রাহিম জানায়, বাবার অভাবের সংসার। সেখান থেকে পালিয়ে প্রায় দু’ মাস আগে বরিশাল-ঢাকা রুটের একটি লঞ্চে চাকরি নেয় সে। তবে লঞ্চটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় সে অন্য একটি লঞ্চে চাকরি নেয়। কিন্তু লকডাউনের কারণে লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সে বিপাকে পড়ে।

ইব্রাহিমের বাবা মাসুদ সিকদার জানান, ঋণগ্রস্ত হয়েও পরিবারের পাঁচ সদস্য নিয়ে দিনমজুরি করে কোনোভাবে সংসার চালান তিনি। স্ত্রী স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠানে পাঁচশ’ টাকা বেতনে চাকরি করেন। তবে করোনা ভাইরাসের কারণে তারা বেহাল দশায় পড়ে যান।

ইব্রাহিম বর্তমানে বাড়িতে রয়েছে জানিয়ে বাবা জানান, বকাঝকা করায় প্রায় দু’ মাস আগে সে বাড়ি থেকে চলে যায়। এরপর কয়েকদিন পরে থানায় জিডি করা হয় এবং ১৬ দিন পরে তার সন্ধান পাওয়া যায়। বাড়িতে নিয়ে আসা হলেও আবার সে চলে যায়। অভাবের কারণেই দ্বিতীয় দফায় আর ইব্রাহিমকে বাড়ি ফেরানোর চেষ্টা করা হয়নি। এরপর পুলিশ ওই কর্মকর্তা ইব্রাহিমকে লোক দিয়ে বাড়ি পাঠান এবং কিছু খাদ্য সহায়তা দেন, যা দিয়ে এখনও কোনোভাবে টিকে রয়েছেন বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৩ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২০
এমএস/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad