ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পুরনো ফেরি ও নাব্যতা সংকট নিয়েই মাওয়া-কাওড়াকান্দি ও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ার ঈদ প্রস্তুতি

আনোয়ারুল করিম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০১০
পুরনো ফেরি ও নাব্যতা সংকট নিয়েই মাওয়া-কাওড়াকান্দি ও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ার ঈদ প্রস্তুতি

ঢাকা: প্রয়োজনের তুলনায় কম এবং বয়সের ভারে ন্যুব্জ ফেরি নিয়েই মানুষকে ঈদে ঘরে ফেরানোর দায়িত্ব পালন করবে দেশের গুরুত্বপূর্ণ দু’টি ফেরিঘাট ‘মাওয়া-কাওড়াকান্দি ও ‘পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া’। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষকে এই ঘাট দিয়েই মূলত সড়কপথে রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে হয়।



বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) সূত্র জানায়, মাওয়া-কাওড়াকান্দি ফেরিঘাটে ১২টি ফেরি চলছে। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাটে মঙ্গলবার থেকে ১১টি ফেরি বাস-ট্রাক পারাপারের কাজ করছে। এসব ফেরির প্রায় সবক’টিই অনেক বছরের পুরনো।

নৌ-পরিবহণমন্ত্রী শাহজাহান খানও বাংলানিউজের কাছে স্বীকার করেছেন কয়েকটি ফেরির বয়স ‘খুব বেশি’। তবে ঈদে ফেরি চলাচলের ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে নৌ-পরিবহণমন্ত্রী বুধবার বলেন, ‘ঈদে বাড়ি ফিরতে মানুষকে যেন কোনো কষ্ট পোহাতে না হয় সেজন্য ওই ঘাটগুলোতে ঈদের আগে ও পরে মালবাহী ট্রাক চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ’

বিআইডব্লিউটিএ সূত্র আরও জানায়, নাব্যতা সমস্যার কারণে সময় বেশি লাগায় মাওয়া-কাওড়াকান্দি ঘাটে এক পার থেকে অপর পারে যেতে সময় লাগে গড়ে আড়াই ঘণ্টা। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাটে সময় লাগে গড়ে সোয়া ঘণ্টা। প্রায়শঃ যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে অনেক ফেরির ট্রিপ বন্ধ থাকে। এ কারণে কাগজে-কলমে বন্দরের অনুকূলে ফেরি বরাদ্দের হিসাব থাকলেও অনেক সময়ই ঘণ্টার পর ঘণ্টা পন্টুনে ফেরি থাকে না।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহণ সংস্থা (বিআইডব্লিটিসি) সূত্র জানায়, আন্তজার্তিক মেরিটাইম সংস্থার (আইএমও) বিধি অনুযায়ী বাংলাদেশের ফেরিগুলোর ৩০ বছর চলার কথা থাকলেও ১৯২৫ সালে নির্মিত রানীতে, রায়পুরা, রানীগঞ্জ ও টাপলো; ১৯৩৮ সালে নির্মিত যমুনা, ১৯৬৩ সালে নির্মিত যশোর ও কর্ণফুলী, ১৯৭৩ সালের কুমারী, কামিনী এখনও জোড়াতালি দিয়ে চালানো হচ্ছে। নিয়মিত মেরামত না করায় এ ফেরিগুলো সপ্তাহের বেশিরভাগ দিনই নষ্ট হয়ে ভেসে থাকে।

পুরনো ফেরির যান্ত্রিক ত্রুটির কথা স্বীকার করে কাওড়কান্দি ঘাটের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু আলম হাওলাদার বাংলানিউজকে বলেন, ‘ পুরনো হওয়ায় এ ফেরিগুলোর যন্ত্রপাতি মাঝে মধ্যে নষ্ট হয়ে যায়। এতে পারাপারও বন্ধ থাকে। ’

পুরনো ফেরি প্রসঙ্গে নৌ-পরিবহণমন্ত্রী শাহজাহান খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিআইডব্লিউটিসির ফেরিগুলো অনেক পুরোনো। তাই ফেরির সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন। ’

দেশেই বাস-ট্রাক পারাপারের ফেরি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

এরইমধ্যে চট্টগ্রামের ডক ইয়ার্ডে দুইটি ইউটিলিটি ফেরি নির্মাণ করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এবার ঈদের আগেই ফেরি দু’টি পাটুরিয়ায় নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সাগর উত্তাল থাকায় তা সম্ভব হয়নি। ’

মাওয়া-কাওড়াকান্দি রুটে ফেরির এপার-ওপার করতে বেশি সময় নেওয়া প্রসঙ্গে বিআইডব্লিউটিএ’র প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল মতিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘মাওয়া-চরজানাজাত রুটের হাজরা চ্যানেলটির খনন কাজ শেষ করতে পারলে ফেরি পারাপারে প্রতি ট্রিপে অন্তত এক ঘন্টা সময় কম লাগতো। কিন্তু হঠাৎ পদ্মায় পানি বেড়ে যাওয়ায় খনন বন্ধ করতে হয়েছে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘পানি কমতে শুরু করলে ঈদের পরপরই হাজরা চ্যানেলের খনন আবার শুরু করা হবে। ’

বিআইডব্লিউটিসি’র চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা কামাল বাংলানিউজকে বলেন, ‘ঈদের সময় ঘাটের ড্রেজিং ইউনিটগুলো সদা প্রস্তুত থাকবে এবং নাব্যতা পরিমাপক দল নিয়মিত ফেরি চলার পথের নাব্যতা মেপে যাবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৩.০০ ঘণ্টা, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।