ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সবাইকে সুরক্ষা দিতে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কাজ করে যাব

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৭ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২০
সবাইকে সুরক্ষা দিতে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কাজ করে যাব

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহের নিগার। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান।বাবা যেমন করে ১৯৭১ সালে দেশ মাতৃকার টানে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধে, তেমনি তিনি বাবার পথ ধরেই ঝাঁপিয়ে পড়েছেন করোনা যুদ্ধে। 

সাড়ে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হলেও জনসেবার অদম্য ইচ্ছা থাকায় মাতৃত্বকালীন সেই ক্লান্তি যেন তাকে ছুঁতে পারেনি। প্রতিদিনই বিরামহীনভাবে ছুটে চলেছেন উপজেলার এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে।

কোনো না কোনো ইউনিয়নে বা গ্রামে। উদ্দেশ্য করোনা সংকটে অসহায় হয়ে পড়া পরিবারের পাশে দাঁড়ানো।  

অদৃশ্য শক্তি করোনা ভাইরাসের প্রভাবে সৃষ্ট সংকটে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের কেউ যাতে খাদ্যের অভাবে কষ্ট না পায় অথবা কোনো অসচেতনতার ফলে যাতে করোনা সংক্রমণ না ছড়ায় সেজন্য কাজ করছেন রাত দিন। মুখে মাস্ক-হাতে গ্লাভস আর কাঁধে দায়িত্ব নিয়ে করোনা প্রতিরোধে জনসচেতনতা তৈরিতে ঝুঁকি নিয়েই মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে তাদের করোনা প্রতিরোধ ও করণীয় বিষয়ে সচেতন করছেন।  

সরকারি খাদ্য সহায়তা যেন সঠিক মানুষের কাছে গিয়ে পৌঁছে সেজন্য তিনি সততা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন।  

এছাড়াও উপজেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রয়েছে তার সজাগ দৃষ্টি। এই সংকটকালে আইনশৃঙ্খলার যাতে অবনতি না হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে যোগযোগ করে নানা দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। প্রতিদিনই সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়ন, বাজারমূল্য নিয়ন্ত্রণ রাখতে এবং শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী ও পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে হাট-বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন।  

মেহের নিগার বাংলানিউজকে বলেন, করোনার সংকটময় মূহুর্তে যদিও আমি শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ। মাতৃত্বকালীন জটিলতার কারণে আমার চিকিৎসক আমাকে বলেছেন যেন বেশি চলাফেরা না করি এবং অতিরিক্ত মানসিক চাপ না নেই। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে দেশের এই সংকটকালে কাজ করা প্রয়োজন।  

তাই বাবার পথ ধরে এবং প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা হিসেবে আমি এই যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছি। যদি আমি করোনায় আক্রান্ত হই কিংবা মারা যাই তারপরও আমি একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে দেশের এমন পরিস্থিতিতে পিছিয়ে আসতে পারি না। আমার ওপর সরকার যে দায়িত্ব দিয়েছে শত শারীরিক প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করেই আমি তা পালন করব। আমার একটি ৬ বছরের সন্তান রয়েছে যার সঙ্গে আমার অনেকদিন ধরে দেখা হয় না। আমি তার সঙ্গে বসবাসও করি না। আমি দূর থেকে তাকে দেখি। সবাইকে সুরক্ষা দেওয়া আমার দায়িত্ব। এই দায়িত্ব আমি জীবনের শেষ মৃহূর্ত পর্যন্ত পালন করে যেতে চাই।      

তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপির সার্বিক ব্যবস্থাপনায় বিজয়নগর উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে হাজার হাজার পরিবারের হাতে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে এবং এই ত্রাণ তৎপরতা দুর্যোগ চলাকালীন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad