ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

করোনা নিয়েই ১৩ দিন কর্মস্থলে ছিলেন ৭ সরকারি চাকুরে!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৬ ঘণ্টা, মে ৬, ২০২০
করোনা নিয়েই ১৩ দিন কর্মস্থলে ছিলেন ৭ সরকারি চাকুরে!

হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জের সাত সরকারি চাকরিজীবীর নমুনা নেওয়া হয়েছিল গত ২৩ এপ্রিল। রিপোর্ট এসেছে ১৩ দিন পর মঙ্গলবার (০৫ মে) তারা সবাই আক্রান্ত। অথচ এই ১৩  দিন তারা নিজ কর্মস্থলেই ছিলেন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে। সংস্পর্শে এসেছেন অনেকের।

স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন, রিপোর্ট দেরি হওয়ার কারণে যারা মানুষকে স্বাস্থ্য সচেতন করার কাজ করছেন, করোনা ভাইরাস চিকিৎসা দিচ্ছেন, তারা নিজেরাই এই রোগ ছড়িয়ে থাকতে পারেন অজান্তে। এখন তাদের সংস্পর্শে কে বা কারা গেছেন, সেটা খুঁজে বের করা মুশকিল হলেও যেটুকু সম্ভব করা উচিত।

নয়তো এই টেস্ট অব্যবস্থাপনাই কাল হতে পারে হবিগঞ্জবাসীর।
 
আক্রান্তরা হলেন- চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ নাজমুল হক, সহকারী উপ পরিদর্শক (এএসআই) ও তিনজন কনস্টেবল, বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন করে নার্স।
 
চুনারুঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) চম্পক দাম বাংলানিউজকে জানান, ওসিসহ আক্রান্ত ৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয় ২৩ এপ্রিল। যেহেতু তাদের কোনো উপসর্গ ছিল না তাই তারা প্রতিদিনই নিজ কর্মস্থলে দায়িত্ব পালন করেন। মঙ্গলবার রিপোর্ট আসলে সবাই কোয়ারেন্টিনে চলে যান।  

তিনি আরো জানান, চুনারুঘাট থানায় পুলিশ সদস্য রয়েছেন ৬০ জন। করোনা পরিস্থিতিতে ৩০ জন করে দুই টিমে দায়িত্ব পালন করতেন। আক্রান্তরা সবাই এ টিমের সদস্য। সেজন্য ওই টিমের ৩০ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে যেতে হবে। এখন থেকে দায়িত্ব পালন করবেন শুধু বি টিমের ৩০ পুলিশ সদস্য।
 
নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিশ্বজিত কুমার পাল বাংলানিউজকে বলেন, ২৩ এপ্রিল নমুনা নেওয়ার পর ১৩ দিন পর মঙ্গলবার করোনা পজিটিভ এসেছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র নার্সের। যেহেতু কোনো উপসর্গ ছিল না তাই এতদিন তিনি টানা কাজ করে গেছেন। ব্যাপারটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কথাটিও যোগ করেন তিনি।
  
এ বিষয়ে সচেতন মহলের কয়েকজনের সঙ্গে আলাপ করলে তারা বলেন, আক্রান্ত হওয়ার পরও ৭ সরকারি চাকরিজীবী কর্মস্থলে সবার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করলেন ১৩ দিন। বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এই ১৩ দিনে তাদের সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাদের শনাক্ত করা কতটুকু সম্ভব আমরা জানি না। আক্রান্তদের সংস্পর্শে যাওয়ারাও মিশেছেন কতজনের সঙ্গে তাও অজানা। তারা জানেন না সংক্রমিত হয়েছেন কি না।
 
এই ভয়াবহ অবস্থায় স্বাস্থ্য বিভাগ যদি পরীক্ষার ফলাফল দ্রুত সময়ের মধ্যে দিতে না পারে তবে এটি তাদের চরম ব্যর্থতা। এই ব্যর্থতার দাম কি পরিমাণ জনগণ দেবে তা একমাত্র ভবিষ্যতই বলতে পারে বলেও মন্তব্য করেন কয়েকজন।
 
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. একেএম মুস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, শরীরে করোনা বহন করে ১৩ দিন দায়িত্ব পালন করার বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণই বটে। শিগগিরই এদের সংস্পর্শে আসাদের নমুনা সংগ্রহ এবং কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১১২৩ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।