করোনা সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণে সারাদেশে চলছে অঘোষিত লকডাউন। ঘরবন্দি কর্মহীন মানুষের সাহায্যে সরকার বিভিন্ন ধরনের সহায়তা দিচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) গভীর রাতে গমের চালানটি নদীপথে এনে ট্রলার রাখা হয় দক্ষিণ সুরমার মোল্লারগাঁও ইউনিয়নের খালোপাড় এলাকায় সুরমা নদীর তীরে। নগরের ভার্তখলা এলাকায় মেসার্স ইসলাম ট্রেডার্সের মালিক বদরুল ইসলাম গমের চালানটি কিনে আনছেন দাবি করেন। রাত গভীর হলে সুবিধাজনক সময়ে গমের চালানটি ট্রলার থেকে নামানোর প্রক্রিয়া চলছিলো। নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক পণ্য খালাসে নিয়োজিত একজন শ্রমিক বাংলানিউজকে বলেন, গমের চালানের সঙ্গে সরকার কর্তৃক বরাদ্দ করা দুইশ বস্তা চালও এনেছেন ক্রেতা। ওই লঞ্চে গমের পরিমাণ প্রায় আড়াইশো বস্তার ওপরে হবে। প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি করে গম রয়েছে। যার বর্তমান বাজারমূল্য এক হাজার দুইশ ৫০ টাকা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জামালগঞ্জ উপজেলার ফেনারবাঁক ইউনিয়ন পরিষদে আশ্রায়ন প্রকল্পের কাজের বিপরীতে ১৫৬ টন গম বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই গমগুলোর একাংশ সিলেটে বিক্রি করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে ফেনারবাঁক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান করুনা সিন্দু তালুকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
অবশ্য ইউনিয়ন পরিষদের সচিব অজিত বাংলানিউজকে বলেন, ইউনিয়নে ৩৫ পরিবারের আশ্রায়ন প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের দিকে। ওই কাজের বিপরীতে ১৫৬ টন গম দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পে মাটি ভরাটের কাজ এক্সেভেটর দিয়ে করানোয় টাকার বিপরীতে গম দেওয়া হয়। ওই গম বিক্রি করা হয়েছে, হয়তো। অবশ্য প্রজেক্টের যারা কাজ করাচ্ছেন, তারা তো স্থানীয় লোক। সিলেটে তো বিক্রি করার কথা না।
জামালগঞ্জ খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছালেহ আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, আশ্রায়ন প্রকল্পে গমের চালান ২৬ এপ্রিল গুদাম থেকে বের করে দেওয়া হয়। কিন্তু সরকারি গমের চালান বাইরে বিক্রি করা যায় না। অবশ্য কাজের বিনিময় গমের চালানটি যাদের দেওয়া হয়েছে, তারা বিক্রি করতে পারে।
এ বিষয়ে সিলেট সদর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার রায় বাংলানিউজকে বলেন, আশ্রায়ন হোক, আর যাই হোক, খাদ্য অধিদপ্তরের সরকারি গম বা চাল এভাবে বিক্রি করা যায় কিনা আমার জানা নেই। এ বিষয়ে জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিশ্বজিৎ দেব বাংলানিউজকে বলেন, মঙ্গলবার আমি ইউএনও কার্যালয়ে যোগদান করেছি। এ বিষয়টি নিয়ে সাবেক ইউএনওর সঙ্গে আলাপ করে জানতে পেরেছি, আশ্রায়ন প্রকল্পের কাজ অনেকটা শেষ হওয়াতে পিআইসির অনুকূলে খাদ্যশস্য দিয়েছেন। হয়তো আশ্রায়ন প্রকল্পে যারা কাজ করেছেন তারা বিক্রি করেছেন। তবে এভাবে বিক্রি করা যথাযথ হয়নি। তাছাড়া তারা বিষয়টি প্রশাসনকেও জানায়নি। আর এত বড় চালান নিয়ে যাওয়ার ঘটনাটিও জানানো হয়নি।
এ বিষয়ে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আবুল কালাম বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনাটি সম্পর্কে আমি খোঁজ-খবর নিচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০২০
এনইউ/এএটি