এক মাস বন্ধ অতিবাহিত হওয়ার পর আজ (২৬ এপ্রিল) শনিবার সাভার ও আশুলিয়ার অধিকাংশ কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে।
সকাল থেকে কারখানাগুলোতে চলছে কাজ।
কোভিড-১৯ থেকে বাঁচতে সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধের পাশাপাশি গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণার সময় বর্ধিত করা হয়েছে। কিন্তু দেশের চালিকাশক্তি পোশাক খাত বন্ধ বাড়ানোর ঘোষণা করা হয়নি।
সকালে সাভারের হেমায়েতপুর ও আশুলিয়ার বাড়ইপাড়া, চারাবাগ, বাইপাইল, জিরানী, নবীনগর, কাঠগড়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বড় বড় গ্রুপের পোশাক কারখানার খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তাই সকাল সকাল কর্মস্থলে যেতে দেখা গেছে শ্রমিকদেরও।
চারাবাগ এলাকার মাকসুদা এ্যাপারেলসের শ্রমিক বিলকিস বাংলানিউজকে বলেন, গতকাল রাতে সুপারভাইজার ফোন করে বলেছেন আজ থেকে কারখানা খুলে দেবে। কারখানায় উপস্থিত না থাকলে চাকরি থাকবে না। তাই সকালে উঠেই কারখানায় যাচ্ছি।
কারখানাটির আরেক শ্রমিক আকলিমা। তিনি ছুটি পেয়েই সিরাজগঞ্জ নিজ বাড়িতে চলে গেছেন। কাল রাতে ফোন পেয়েই সাভারের উদ্দেশ্য রওনা দেন।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ফোন পাওয়া মাত্র বাড়ি থেকে বের হয়েছি। খুব কষ্ট করে এসেছি। গাড়ি নাই রাস্তায়, আমি মহিলা মানুষ কখনও ট্রাকে, কখনও পিকআপে, অটোরিকশায় করে আবার কখনো পায়ে হেঁটে প্রায় ১৬ ঘণ্টায় সাভারে এসেছি। চাকরি না থাকলে খেয়ে মরতে হবে। তাই আজ যাচ্ছি কারখানায়।
কারখানা খোলা রাখার সিদ্ধান্তে সাধুবাদ জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারাও। কারখানা খোলা রাখার ব্যাপারে সহমত পোষণ করে শ্রমিক নেতা ইব্রাহিম বাংলানিউজকে বলেন, বহির্বিশ্বে অনেক দেশেই তাদের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে পোশাক কারখানা খোলা রেখেছে। তাই আমরা এ মুহূর্তে যদি কারখানাগুলো না খুলে দেই তাহলে আমাদের কাজগুলো বহির্বিশ্বে চলে যাবে। ফলে কারখানাগুলো খুলে দেওয়া জরুরি, তবে শ্রমিকদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা দিয়ে কারখানাগুলোতে কাজ করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
অন্যদিকে স্বাধীন বাংলা গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি আল কামরান বাংলানিউজকে বলেন, আশুলিয়ায় আজ অনেক কারখানায় খোলা রয়েছে। আমি মনে করি কারখানার মালিকগণ শ্রমিকদের স্বাস্থ্যের কথা ও কারখানার কথা চিন্তা করে কারখানা চালাবেন এবং এক এলাকায় শ্রমিক অন্য এলাকায় যেন গিয়ে কাজ না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে তাহলেই অর্থনীতির চাকা গতিশীল থাকবে ও করোনা সংক্রমণ ঠেকানো যাবে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ বস্ত্র ও পোশাক শিল্প শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সারোয়ার হোসেন বলেন, আজ এ শিল্পাঞ্চলের অর্ধেকের বেশি কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে। আজকের এই ঢাকা ফেরত শ্রমিকরা কোন এরিয়া থেকে এসেছেন, করোনা আক্রান্ত এলাকা কি না তা আমরা জানি না। বিভিন্ন জেলার শ্রমিকরা এসেছেন। তারা কাজও করবেন একই ছাদের নিচে এতে করে করোনা ঝুঁকি বাড়লো শ্রমিকদের। দেশের স্বার্থে কারখানা খোলা রাখতে হবে। তবে বিভিন্ন জেলা থেকে ফেরা শ্রমিকরা হোম কোয়ারেন্টিনে ১৪ দিন থাকার পর তাদের কারখানায় প্রবেশ করানো উচিত।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২০
আরএ