ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

রোজায় সিলেটে খোলা বাজারে ইফতার বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্ত

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২০
রোজায় সিলেটে খোলা বাজারে ইফতার বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্ত

সিলেট: করোনা ভাইরাস থেকে মানুষকে সুরক্ষায় আসন্ন রমজান মাসে সিলেটে খোলা বাজারে ইফতার বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

সেইসঙ্গে দ্রব্যমূল্যের দাম সহনীয় রাখতে বাজার মনিটরিংয়ের ওপর জোর দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজি এমদাদুল ইসলাম।  

বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে সিলেট সার্কিট হাউসে আসন্ন মাহে রমজান উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের যৌক্তিক ও সহনশীল পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যে জেলা পর্যায়ে টাস্কফোর্স গঠন এবং কার্যক্রম জোরদার বিষয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়।

 

সভায় সিলেট চেম্বার সভাপতি এটিএম শোয়েব, উপ-পুলিশ কমিশনার ও পুলিশ সুপার প্রতিনিধি প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।   

সভায় জেলা প্রশাসক এম কাজি এমদাদুল ইসলাম বলেন, করোনা ভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করেছে। সারা বিশ্বের মতো আমাদের দেশও এর বাইরে নয়। তাই রমজান মাসে খোলা বাজারে ইফতার বিক্রি হলে লোকজনের সংক্রমণের হার আরো বাড়ার আশঙ্কা আছে। যে কারণে সবাইকে বাইরের ইফতার বর্জনের আহ্বান জানান এবং খোলা বাজারে ইফতার বিক্রি নিষিদ্ধে প্রচারণা চালানোর সিদ্ধান্ত নেন।  

ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে আলোচনাক্রমে নগরের রিকাবিবাজারে লোক সমাগম বেশি হওয়াতে কাঁচাবাজার আলীয়া মাদরাসা মাঠে এবং আম্বরখানা মাছবাজারের পাশের আবাসন প্রকল্পের খোলা জায়গায় স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নেন।

এছাড়া মাহে রমজানে দ্রব্যমূল্যের দাম না বাড়াতে ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, প্রতিবারের মতো চেম্বার ও ব্যবসায়ী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার একজন করে সদস্য নিয়ে বাজার মনিটরিং কমিটি গঠন করা হবে। ওই কমিটির সদস্যরা সংশ্লিষ্ট মার্কেট ও বাজার সমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করবেন। তাছাড়া পাইকারি বাজারগুলোতে ব্যবসায়ীদের আড়ত থেকে কেনা মালামালের চৌথার মূল্য দেখাতে হবে। পাশপাশি খুচরা দোকানিদের মূল্যতালিকা প্রদর্শন করতে হবে। কাঁচাবাজারেও সবজির মূল্য সহনীয় রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এই নিয়ম না মানলে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।  

জেলা প্রশাসক বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে মানুষ বিপাকে রয়েছেন। সব পণ্যে লাভ করবেন। কিন্তু তা সহনীয় পর্যায়ে রাখবেন। অতিরিক্ত দাম আদায় করলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইভাবে উপজেলা পর্যায়ে গ্রামের হাটবাজার পরিদর্শন করা হবে।  

তিনি বলেন, বাজার পরিদর্শনের জন্য মহানগরে ৭টি ও উপজেলা পর্যায়ে ইতোমধ্যে ২টি করে টিম কাজ করছে। প্রয়োজনবোধে তা বাড়ানো হবে। যারা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করবেন, রাষ্ট্রের ও জনগণের স্বার্থে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া রখাটেদের আড্ডাস্থল ভেঙে দিতে এবং নিরাপত্তার স্বার্থে সবকটি সিসি ক্যামেরা দ্বারা সিলেটকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। আর তারাবি নামাজ সবাইকে বাসায় পড়ার আহ্বান জানান তিনি।   

সভায় উপ-পুলিশ কমিশনার আজবাহার আলী শেখ বলেন, আসন্ন মাহে রমজানে সিলেটের লোকজনকে নিরাপদে রাখতে পুলিশ সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে। তবে এরপরও প্রতিটি ঘরে গৃহিনী এমনকি ছেলে-মেয়েদের কাছে যেন ৯৯৯ নম্বরটি থাকে। আপনি জেলা কিংবা মহানগর এলাকার হোন। হাটে বা বাজারে, রাস্তাঘাটে যেখানেই সমস্যার আবাস পাবেন, সঙ্গে সঙ্গে ৯৯৯-এ ফোন দেবেন। সেখান থেকে নির্ণয় করে দেওয়া হবে, আপনার সাহায্যার্থে কাকে পাঠানো প্রয়োজন।  

সিলেট চেম্বার সভাপতি এটিএম শোয়েব বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে সব মানুষ বিপাকে রয়েছেন।  

আসন্ন রমজান মাসে ব্যবসায়ীদের পণ্যের দাম না বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, আমরা মুনাফা করবো, তবে অধিক মুনাফা নয়। সবাই মানবিক বিষয়টি বিবেচনায় নেবেন এই প্রত্যাশা করেন তিনি।  

সভায় স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক মীর মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবুল কালাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আসলাম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।     

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২০
এনইউ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।