ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

বসুন্ধরার হাসপাতাল নির্মাণকাজ পরিদর্শন করলেন সাফিয়াত সোবহান

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২০
বসুন্ধরার হাসপাতাল নির্মাণকাজ পরিদর্শন করলেন সাফিয়াত সোবহান

ঢাকা: করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসায় রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) নির্মিত হচ্ছে দেশের বৃহত্তম অস্থায়ী হাসপাতাল। সবকিছু ঠিক থাকলে আর তিন থেকে চার দিনের মধ্যেই হাসপাতালটি চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হবে।

এ পরিস্থিতিতে বুধবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে হাসপাতালের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেছেন বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফিয়াত সোবহান সানভীর। এ সময় তিনি হাসপাতাল নির্মাণের দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলীদের কাছ থেকে কাজের অগ্রগতির খোঁজ-খবর নেন এবং দ্রুত কাজ শেষ করতে যেকোনো ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।

তখন প্রকৌশলীরা তাকে আশ্বস্ত করে বলেন, কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। রোগীদের শয্যা, আসবাবসহ অধিকাংশ সরঞ্জাম এসে গেছে। চিকিৎসক ও নার্সদের বহনযোগ্য কক্ষ ও টয়লেট প্রস্তুতও শেষপর্যায়ে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় হাসপাতালটি প্রস্তুত হয়ে যাবে বলে আশাও প্রকাশ করেন তারা।

কোভিড-১৯ বিপর্যয় শেষ না হওয়া পর্যন্ত অর্থাৎ করোনা চিকিৎসায় সরকারের যতদিন ব্যবহারের প্রয়োজন শেষ না হবে, ততদিন আইসিসিবিকে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ দিনের মধ্যে আইসিসিবিকে পূর্ণাঙ্গভাবে অস্থায়ী হাসপাতালে রূপ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ১২ এপ্রিল কাজ শুরু করে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।

এদিকে, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুদুল আলম এর আগে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, রোগীর বেড বসানোর জন্য ছয়টি ক্লাস্টার আমরা পর্যায়ক্রমে তৈরি করে আসছি। আমাদের ফ্লোরম্যাট বসানোর কাজ চলছে। পাশেই বেডগুলো এনে রাখা হয়েছে। অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করে যাচ্ছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই হাসপাতালটিকে চিকিৎসাসেবা চালুর জন্য প্রস্তুত করতে পারব বলে আমরা আশাবাদী।
কাজের অগ্রগতির খোঁজ-খবর নিচ্ছেন বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফিয়াত সোবহান সানভীরতিনি জানান, হাসপাতালে মোট আইসোলেশন বেড হবে দুই হাজার ১৩টি। ট্রেড সেন্টারে ছয় ক্লাস্টারে এক হাজার ৪৮৮টি বেড বসবে। এছাড়া তিনটি কনভেনশন হলে থাকবে আরও ৫২৫টি বেড। চার নম্বর হলে ৭১ শয্যার নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) স্থাপন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমরা এখনও সিদ্ধান্ত পাইনি। আমরা প্রস্তুত আছি। নির্দেশনা পেলে দ্রুত এটা তৈরি করে ফেলতে পারব।

তিনি বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ। তারা এত সুন্দর একটা জায়গা দিয়েছে। এই ঘরগুলো আমাদের তৈরি করতে হলে এত দ্রুত আমরা হাসপাতাল বানাতে পারতাম না। ঘরগুলো আগে থেকে থাকাতে আমরা অনেক এগিয়ে আছি। টয়লেটের কাজও পর্যায়ক্রমে শেষ হয়ে যাচ্ছে। আসবাপত্র, হাসপাতালের যন্ত্রপাতি সবই সাইটে চলে এসেছে। এখন শুধু এগুলো স্থাপন করতে যতটা সময় লাগে, সেটা।

আইসিসিবির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এমএম জসীম উদ্দিন বলেন, আজ পর্যন্ত ফ্লোরম্যাট বসানো ও বেড স্থাপনের কাজ অনেকদূর এগিয়ে গেছে। ২ নম্বর হলে বেড স্থাপন হয়ে গেছে। মনে হয় না কার্যক্রমগুলো শেষ করতে আর খুব বেশি সময় লাগবে। মূলত, সেনাবাহিনী ছাড়া পূর্ণাঙ্গভাবে অস্থায়ী হাসপাতাল করার অভিজ্ঞতা কারওরই ছিল না। স্বাধীনতার পর এত বড় অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরির কাজও বাংলাদেশে হয়নি। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর স্থায়ী হাসপাতাল করেছে। কিন্তু অন্য একটা স্থাপনাকে অস্থায়ী হাসপাতালে রূপ দেওয়ার অভিজ্ঞতা তাদের নেই। এজন্য তাদেরও অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে। বসুন্ধরার পক্ষ থেকেও তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। আমরা এগিয়ে গিয়ে বার বার শুনছি কোনো সহযোগিতা প্রয়োজন আছে কি-না। সবকিছু মিলে হাসপাতালটির নির্মাণকাজ একটা সন্তোষজনক পর্যায়ে চলে এসেছে। আশা করছি, আগামী ২৬-২৭ এপ্রিল থেকে এখানে চিকিৎসাসেবা দেওয়া শুরু করা যাবে।

এর আগে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে সরকারকে আইসিসিবিতে পাঁচ হাজার শয্যার একটি সমন্বিত অস্থায়ী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মতি দিলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সেনাবাহিনীর একটি দল আইসিসিবি পরিদর্শন করে হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। নানা হিসাব-নিকাশ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সেখানে দুই হাজার ১৩ শয্যার হাসপাতাল ও ৭১ শয্যার আইসিইউ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

আইসিসিবির সুবিশাল চারটি কনভেনশন হল ও একটি এক্সপো ট্রেড সেন্টারে দেশের অন্যতম বৃহত্তম এ হাসপাতালটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে সরকারের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্ততর।

আরও পড়ুন>> আসবাবপত্র-যন্ত্রপাতি বসালেই শেষ বসুন্ধরার হাসপাতালের কাজ

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২০
এসই/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।