ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নারায়ণগঞ্জের দিগুবাবুর বাজার কী করোনামুক্ত?

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২০
নারায়ণগঞ্জের দিগুবাবুর বাজার কী করোনামুক্ত? দিগুবাবুর বাজারের চিত্র। ছবি: বাংলানিউজ

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ শহরের দিগুবাবুর বাজার এলাকায় প্রতিদিন সকালে মানুষের জন্য তিল ধারণের জায়গা থাকে না। নিতান্ত প্রয়োজনে বাজারে গেলেও স্থান সংকুলান না হওয়ায় শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাও সেখানে সম্ভব হয় না।

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) অধীনে এ জায়গাটি হলেও এ বিষয়ে বিন্দুমাত্র দৃষ্টিপাত নেই নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক)।

সচেতন নাগরিকরা তাই বাজারের অবস্থা দেখে টিপ্পনী কেটে বলছেন ‘নারায়ণগঞ্জের দিগুবাবুর বাজার কী করোনামুক্ত? তাই এটি নিয়ে মেয়র থেকে শুরু করে কারোই মাথাব্যথা নেই।

আরও পড়ুন>>নারায়ণগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত ১০, মৃত্যু ৩

সোমবার (২০ এপ্রিল) ভোর ৫টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত সরেজমিনে বাজার ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। একই অবস্থা জেলার মাছবাজারও ঘাটগুলোতেও।

ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী দেশের বাজার ও অস্থায়ী হাটবাজারগুলো খোলা মাঠ স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন। যাতে করে মানুষ শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে কেনাকাটা করতে পারেন। প্রধানমন্ত্রীর সেই নির্দেশকেও নাসিক তোয়াক্কা করেনি। জেলার অন্যান্য বাজারগুলোও খোলা মাঠে স্থানান্তর হয়নি।

সরেজমিনে দেখা যায়, শহর ও আশ-পাশে বিভিন্ন এলাকার খুচরা সবজি বিক্রেতারা এ বাজার থেকে সকালে পাইকারি বাজার সংগ্রহ করেন। এছাড়া বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁর বাজার ও বাসাবাড়ির জন্য বাজার করতেও এখানে উপস্থিত হন জেলাবাসীরা। প্রতিদিন সকালেই এখানে প্রায় এক থেকে দেড় হাজার মানুষের ভিড় দেখা যায়। নিয়মিত এরা এখানে আসছেন কোনো ধরনের মাস্ক, গ্লাভস ছাড়াই। অনেকে মাস্ক ব্যবহার করলেও তাদের মধ্যে নেই সামান্যতম শারীরিক দূরত্ব। স্থান সংকুলান না হওয়ায় একে অপরের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করে করছেন বাজারের কেনাকাটা।

জানা যায়, প্রতিদিন শহরের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ, র‌্যাবসহ বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিরা মানুষকে ঘরে রাখা নানা কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রচার-প্রচারণা, মাইকিং, প্রশাসনের কঠোরতা এসব উপেক্ষা করেও মানুষ বের হয় আর তা ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন। এমন অবস্থায় একেবারে করোনা বিস্তারের সহজ মাধ্যম হিসেবে এ বাজারকে খোলা মাঠে স্থানান্তর না করে এভাবে প্রতিদিন হাজারো মানুষের মেলামেশাকে করোনার ভয়াবহ ঝুঁকি হিসেবেই ভাবছেন সচেতন নাগরিকরা।

ইতোমধ্যেই নারায়ণগঞ্জ জেলাকে করোনা আক্রান্তের জন্য ভয়াবহ ঝুঁকিপূর্ণ স্থান হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে। সর্বশেষ সোমবার গত ২৪ ঘণ্টায় ৮১ জন করোনা আক্রান্ত ও চারজনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ। জেলায় এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত মোট রোগীর সংখ্যা ৪৪১ জন (মৃত্যুসহ)। এদের মধ্যে জেলায় মোট মৃত্যু হয়েছে ৩০ জনের।

এ ব্যাপারে জানতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আবুল আমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বাজারটি নিয়ে আমরা ভাবছি। আলোচনা করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী বলেন, আমাদের অনেক গিঞ্জি শহর আমরা চাইলেই বাজার এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরাতে পারি না। আর আমাদের র‌্যাব সদস্যরা সেখানে শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যেই কাজ করেছেন। কারওয়ানবাজারই তো সরাতে পারছে না, আর এটা তো আমাদের দিগুবাবুর বাজার।    

বাংলাদেশ সময়: ১০২৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২০
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।