কমলনগর উপজেলায় নারী ও শিশুসহ এ পর্যন্ত তিনজনের করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
মেঘনা উপকূলীয় নদী ভাঙন কবলিত এখানকার বেশির ভাগ মানুষই অসচেতন। তারা করোনা প্রতিরোধে সরকারি নিদের্শনা পালন করছেন না। এদিকে দেশের বাইরে থেকে আসা প্রবাসী এবং ঢাকা-নারায়ণগঞ্জসহ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে আসা লোকজন বর্তমানে এলাকায় অবস্থান করছেন। তাদের খুঁজে খুঁজে নমুনা সংগ্রহ করছেন চিকিৎসকরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত করোনা সন্দেহে ৭৭ জনের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে থেকে ২৫ জনের রিপোর্ট এসেছে। করোনা শনাক্ত হয়েছেন তিনজন।
এদিকে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়মিত স্বাস্থ্য সেবা অব্যাহত আছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু তাহেরের নেতৃত্বে ১২ জন চিকিৎসক, ৬ জন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার ছাড়াও স্বাস্থ্য সহকারী, নার্স, সিএইচসিপি, ওয়ার্ড বয় সবাই করোনা যুদ্ধে জয়ী হতে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া শিশুর মা বলেন, ডাক্তারদের চিকিৎসা ও আন্তরিক সেবায় আমার ছেলে এখন সুস্থ। নমুনার রিপোর্ট আসা পর্যন্ত চিকিৎসকরা হাসপাতালে রাখতে পরামর্শ দিয়েছেন।
অপরদিকে হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. রেজাউল করিম রাজিব, ডা. আকিল আল ইসলাম, ডা. ওয়ালি উদ্দিন মাসুদ ও ডা. সাকিরুল ইসলাম বাড়ি বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহের সঙ্গে সঙ্গে করোনা উপসর্গে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেছেন।
ডা. রেজাউল করিম রাজিব বলেন, এখানকার মানুষের মধ্যে নমুনা দেওয়ার ক্ষেত্রে ভয় ও আতঙ্ক ছিল। তারা হাসাপাতালে আসতো না। বাড়ি বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করতে হয়েছে। ডাক্তার দেখলে তারা পালিয়ে যেত। যে নারীর করোনা ধরা পড়েছে তার বাড়িতে তিনবার যেতে হয়েছে। এখন কিছুটা সচেতনতা আসছে। অনেকেই এখন হাসপাতালে এসে নমুনা দিচ্ছে।
তিনি জানান, কমলনগরে নারী ও শিশুসহ যে তিনজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে তাদের মধ্যে কোন উপসর্গ ছিল না। তাদের বাড়ি গিয়ে নমুনা আনা হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজন নারায়ণগঞ্জ থেকে আসছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আমিনুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, করোনার এমন পরিস্থিতিতেও হাসপাতালে আগের মতই সব চিকিৎসা সবা অব্যাহত আছে। এছাড়াও রোগীদের সচেতন করার বিষয়ে আরও বেশি জোর দিচ্ছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু তাহের বলেন, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লোকজনের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহ অব্যাহত আছে। এ ক্ষেত্রে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, জনপ্রতিনিধি ও সংবাদিকরা সহযোগিতা করছেন। করোনা যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সে ব্যাপারে আমরা সর্তক আছি। আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা চলছে। তবে এখানকার অ্যাম্বুলেন্সটি ব্যবহার অনুযোগী। এমন পরিস্থিতিতে সরকারিভাবে একটি গাড়ি খুবই প্রয়োজন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২০
এসআর/এবি