ঘোষণা দিয়েই বসে থাকেননি খোরশেদ। বরং সে অনুযায়ী প্রতিদিন করোনা উপসর্গ নিয়ে শহরে মারা যাওয়া একাধিক ব্যক্তির দাফন ও সৎকার করে যাচ্ছেন।
খোরশেদের এসব কর্মকাণ্ডে খুশি হলেও তার স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তা নিয়ে দিন কাটাচ্ছে তার পরিবার। শনিবার (১৮ এপ্রিল) এমনটাই জানালেন তার স্ত্রী আফরোজা খন্দকার লুনা। তবে আফরোজা খন্দকার নিজে এ মহৎ কাজে তাকে নিরুৎসাহিত না করে সাবধানতা অবলম্বন করতে বলেছেন।
লুনা বলেন, তিনি (খোরশেদ) করোনায় মৃতদের দাফন ও সৎকারে এগিয়ে আসবেন বলেছেন এবং সেটি করছেন। প্রতিদিন একাধিক ব্যক্তির দাফন কাজে তিনি অংশ নিচ্ছেন। আমি তাকে বলি, এটা তো যুদ্ধ না। ডাক্তাররাও এতে মারা যাচ্ছে আর তুমি এভাবে প্রতিদিন করোনা নিয়ে খেলা করছো। সে বলে মানুষের জন্য কাজ করবো বলেই তো শপথ নিয়েছি, রাজনীতি করি। মানুষের পাশে যদি তাদের এই দুঃসময়ে থাকতে না পারলাম তাহলে আর আমার রাজনীতি করে কী লাভ।
তিনি আরও জানান, শুধু তার নিজের ওয়ার্ড নয়, সকল স্থানেই তিনি কাজ করছেন। আজও দেওভোগে একটি দাফন করেছেন। ফোন পেলেই ছুটে যান তিনি। আমারও তো সন্তান আছে, পরিবার আছে, ভবিষ্যৎ আছে। এসব নিয়ে ভাবে না সে। পরিবারের সাথে থাকেনা। অফিসে থাকে আর দ্বিতীয় তলায় ঘুমায়। তাকে তার সন্তানরাও কাছে পায় না। আরো তো জনপ্রতিনিধি আছে...।
সর্বশেষ তিনি সকলের কাছে তার স্বামীর জন্য দোয়া চান।
খোরশেদ নিজের উদ্যোগে করোনার শুরু থেকেই তার ওয়ার্ডের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করেছেন। হ্যান্ড স্যানিটাইজার সংকট হবার পর নিজে হাজার হাজার বোতল তৈরী করে বিতরণ করেছেন। ঘরে ঘরে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন। করোনায় আক্রান্তদের কাফনের ব্যবস্থার পাশাপাশি সৎকার কাজেও অংশ নিচ্ছেন।
নিজ এলাকার সড়কে ও বিভিন্ন বাড়িতে জীবাণুনাশক স্প্রে করছেন খোরশেদ। যানবাহন জীবাণুমুক্ত করতে স্প্রে অব্যহত রেখেছেন। ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনলাইন ও মাইকে ঘরে ঘরে দোয়ার ব্যবস্থা করেছেন। মানুষকে সচেতন করতে নিয়মিত প্রতি এলাকায় মাইকিংও করাচ্ছেন তিনি।
নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে টিম গঠন করে এলাকায় এলাকায় আড্ডা বন্ধ করতে অনুরোধ করছেন খোরশেদ। নিজ ওয়ার্ডবাসীর স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের নিয়ে টেলি মেডিসিন সেবাও চালু করেছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২০
এমএইচএম