ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

করোনার থাবায় দালালমুক্ত হবিগঞ্জ হাসপাতাল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২০
করোনার থাবায় দালালমুক্ত হবিগঞ্জ হাসপাতাল

হবিগঞ্জ: ব্যবস্থাপনা কমিটির কঠোর নির্দেশ, তালিকা প্রকাশ এবং জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বার বার উত্থাপনে কাজ না হলেও করোনা ভাইরাসের থাবায় দূর হয়েছে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের শক্তিশালী দালাল চক্র। 

ভাইরাস সংক্রমণের শুরুতেই হাসপাতাল ছাড়তে বাধ্য হয় চক্রটি। যদিও এ সময়ে সেবা নিতে আসা রোগীর সংখ্যাও হাতে গোনা।


    
জানা গেছে, বছরের পর বছর দালাল চক্রের দখলে ছিল জেলার প্রায় ৩৩ লাখ লোকের চিকিৎসাস্থল হবিগঞ্জ আড়াইশ শয্যার আধুনিক জেলা সদর হাসপাতাল। প্রায় ২৪ ঘণ্টাই দালাল চক্রের পদচারণা থাকতো হাসপাতাল চত্বরে। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা রোগীদের ভুল বুঝিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াই ছিল তাদের কাজ।

শক্তিশালী সিন্ডিকেট ভাঙতে গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি ২৮ দালালের তালিকা তৈরি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কার্যত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না হওয়ায় কর্মচারীদের যোগসাজশকেই দায়ী করে আসছিলেন নাগরিক সমাজ। পরে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলীর কঠোর নির্দেশ এবং জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বার বার উত্থাপনের পরও নির্মূল হয়নি দালাল। অবশেষে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেওয়ায় হাসপাতাল ছেড়েছে দালাল চক্রটি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, হবিগঞ্জ শহরসহ জেলাজুড়ে রয়েছে দেড় শতাধিক ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এর মধ্যে ১০০’র বেশি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অবস্থান জেলা শহরে। প্রত্যেকটির অন্তত দুইজন করে প্রতিনিধি (দালাল) হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করতেন। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা প্রধান ফটকে প্রবেশের পরই ভুল বুঝিয়ে নিয়ে যাওয়া হতো বেসরকারি ক্লিনিকে।

স্থানীয় কয়েকজন বাংলানিউজকে বলেন, যদিও করোনা ভাইরাস আতঙ্কের কারণে বর্তমানে হাসপাতালে আসছেন না রোগীরা। তারপরও দালাল চক্র না আসায় এলাকায় স্বস্তি মিলেছে। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা শেষে যাতে এই ধারা অব্যাহত রাখা হয় সেজন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালটির এক চিকিৎসক বাংলানিউজকে বলেন, শত চেষ্টার পরও কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশের কারণে দালালমুক্ত করা সম্ভব হয়নি। অবশেষে করোনা ভাইরাস আতঙ্কে হাসপাতাল এলাকা ছেড়েছে ওই শক্তিশালী সিন্ডিকেট। ভয়াবহ এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পরপরই যাতে দালালরা ফিরে না আসে সেজন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।